জেনারেল কাসেম সোলাইমানির জন্মস্থান কেরমানে মঙ্গলবার জানাজার সময় পদদলিত হয়ে এ হতাহতের ঘটনা ঘটে বলে টেলিভিশনটি জানিয়েছে।
এর আগে সোমবার সোলাইমানির জানাজাকে কেন্দ্র করে ইরানের রাজধানী তেহরানের প্রধান প্রধান সড়ক ও পাশের রাস্তায় প্রায় ১০ লাখ মানুষ ভিড় করে। এ সময় দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি জানাজা পড়ানোর সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন।
ইরানের বিপ্লবী গার্ডের শীর্ষ নেতা জেনারেল কাসেম সোলাইমানি গত সপ্তাহে বাগদাদের আন্তার্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলায় নিহত হন।
মঙ্গলবার সকালে ইরানের জনিপ্রয় এই জেনারেলের মরদেহ তার নিজ শহর কেরমানে নেয়া হয়। শোকাহত লাখ লাখ উপস্থিত জনতা জানাজা অনুষ্ঠানে বিশৃঙ্খলা তৈরি করে।
মঙ্গলবার আধা-সরকারি বার্তা সংস্থা তাসনিম এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোলাইমানির হত্যার প্রতিশোধের জন্য ইরান ১৩টি পরিকল্পনা তৈরি করেছে। প্রতিবেদনে ইরানের সুপ্রিম ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের সেক্রেটারি আলী শামখানির বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রদের আগুনে পুড়িয়ে দেবে ইরান। তবে তিনি বিস্তারিত জানাতে অস্বীকার করেন।
শামখানি বলেন, ‘যদি মার্কিন সেনারা এ অঞ্চল থেকে স্বেচ্ছায় এবং সরলভাবে ছেড়ে না যায় আমরা তাদের মৃতদেহ অনুভূমিকভাবে বহন করার জন্য কিছু করব।’
এরই মধ্যে ইরান তাদের সংসদে সোলাইমানির হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পেন্টাগন এবং মার্কিন সেনাদের সন্ত্রাসী হিসাবে আখ্যায়িত করেছে। এটিকে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ইরানের বিপ্লবী গার্ডকে ‘সন্ত্রাসবাদী সংগঠন’ হিসাবে ঘোষণার পাল্টা প্রয়াস বলে মনে করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভাদ জারিফ বলেন, জাতিসংঘে আসন্ন একটি বৈঠকের জন্য নিউইয়র্কে যাওয়ার ভিসা যুক্তরাষ্ট্র বাতিল করেছে।
জারিফ বলেন, ‘তাদের ভয় যে কেউ সেখানে গিয়ে আমেরিকান জনগণকে সত্য বলবে।’ ‘তবে এটা তাদের ভুল ধারণা। বিশ্ব শুধু নিউইয়র্কের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। তেহরানে আমেরিকানরাও কথা বলতে পারেন এবং আমরা এটি করব।’
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর তাৎত্ক্ষণিকভাবে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
মঙ্গলবার দু'জন প্রাক্তন গার্ড কমরেড এনায়েতুল্লাহ তালেবিজাদেহ ও মোহাম্মদ হোসেইন ইউসুফ এলাহীর কবরের মধ্যে জেনারেল সোলাইমানিকে দাফন করা হবে। ১৯৮৬ সালের ইরাক-ইরান যুদ্ধে অপারেশন ডন ৮-এ দু'জন মারা গিয়েছিলেন। যে যুদ্ধে সোলাইমানিও অংশ নিয়েছিলেন।