দেশের প্রচলিত সঞ্চয়পত্রগুলোতে লক্ষণীয় পরিবর্তন নিয়ে নতুন ভাবে প্রকাশিত হলো জাতীয় সঞ্চয় স্কিম। ২০২৫-এর জুলাই–ডিসেম্বর সময়কালের জন্য জারিকৃত এই নির্দেশনার আওতাভূক্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি স্কিম পেনশনার সঞ্চয়পত্র। অন্যান্য সঞ্চয় ক্যাটাগরিগুলোর মতো এই সঞ্চয়পত্রেও বার্ষিক মুনাফার হারে পরিবর্তন আনা হয়েছে। ভিন্ন ভিন্ন বিনিয়োগে মেয়াদের আগে ও পরে নগদীকরণে বার্ষিক হার ভিন্ন ভিন্ন। যার স্পষ্ট রেশ থাকছে গ্রাহকদের নগদায়নকালীন অর্থপ্রাপ্তিতে। চলুন, ৫ বছর মেয়াদী পেনশনার সঞ্চয়পত্রের নতুন নির্ধারিত রিটার্ন রেটের বিষয়ে জেনে নেওয়া যাক।
জুলাই-ডিসেম্বর ২০২৫ সময়কালের জন্য পেনশনার সঞ্চয়পত্রে নির্ধারিত মুনাফার হার
নতুন রেট অনুযায়ী পূর্ববর্তী ও বর্তমানের সমূদয় বিনিয়োগের রিটার্ন হিসাব হবে। ধার্যকৃত মুনাফা দেওয়া হবে মূলত দুটি বিনিয়োগসীমার বিপরীতে, সেগুলো হলো:
i) ৭ লক্ষ ৫০ হাজার (৭,৫০,০০০) টাকা কিংবা তার কম
ii) ৭ লক্ষ ৫০ হাজার (৭,৫০,০০০) টাকার অধিক
পেনশনার সঞ্চয় স্কিমে মেয়াদের আগে ও পরে নগদীকরণে নিম্নোক্ত রেট অনুযায়ী প্রদেয় অর্থ নিরূপণ হবে:
টেবিল: ২০২৫ সালের জুলাই-ডিসেম্বর সময়কালের জন্য পেনশনার সঞ্চয়পত্রে দুটি ভিন্ন বিনিয়োগ সীমায় প্রদেয় ভিন্ন বার্ষিক মুনাফা
| সময় |
বিনিয়োগ ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত |
বিনিয়োগ ৭ লাখ ৫০ হাজার ১ টাকা হতে তদূর্ধ্ব |
| মুনাফার হার (%) | ||
| ১ম বছরান্তে | ৯.৮৪ | ৯.৭২ |
| ২য় বছরান্তে | ১০.৩২ | ১০.১৯ |
| ৩য় বছরান্তে | ১০.৮৪ | ১০.৭০ |
| ৪র্থ বছরান্তে | ১১.৩৯ | ১১.২৩ |
| ৫ম বছরান্তে / মেয়াদপূর্তিতে | ১১.৯৮ | ১১.৮০ |
.
সর্বোচ্চ ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা (৭,৫০,০০০ বা তার কম) মূল্যের পেনশনার সঞ্চয়পত্রে মেয়াদপূর্তিতে রয়েছে সর্বাধিক মুনাফাপ্রাপ্তির সুযোগ। আর এর পরিমাণ হলো ১১.৯৮ শতাংশ (১১.৯৮%)। মূল্য ৭ লাখ ৫০ হাজার (৭,৫০,০০১ বা তার বেশি) টাকা ছাড়িয়ে গেলে এই পরিমাণটি হবে ১১.৮০ শতাংশ (১১.৮০%)।
মেয়াদপূর্তির পূর্বেই নগদায়ন করা হলে মুনাফা বন্টন হবে উপরোক্ত টেবিলে উল্লেখিত হারে। এমতাবস্থায় অনুর্ধ্ব সাড়ে ৭ লক্ষ টাকার বিনিয়োগ নগদায়নে প্রথম বছরে মুনাফা দাড়াবে ৯.৮৪ শতাংশ। দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ বছরে মুনাফা পাওয়া যাবে যথাক্রমে ১০.৩২ শতাংশ, ১০.৮৪ শতাংশ এবং ১১.৩৯ শতাংশ হারে।
অপরদিকে, ৭ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার অধিক বিনিয়োগ নগদায়নের ক্ষেত্রে প্রথম বছরে মুনাফা মিলবে ৯.৭২ শতাংশ। দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ বছরে রিটার্ন পাওয়া যাবে যথাক্রমে ১০.১৯ শতাংশ, ১০.৭০ শতাংশ ও ১১.২৩ শতাংশ হারে।
জুলাই-ডিসেম্বর ২০২৫ সময়কালের জন্য থেকে কার্যকর পেনশনার সঞ্চয়পত্রের নতুন রিটার্ন রেট কারা পাবেন?
মুনাফার এই পুনঃনির্ধারিত হার পেনশনার সঞ্চয়পত্রের সেই সকল গ্রাহকরা পাবেন, যারা স্কিমটি ক্রয় করবেন ১ জুলাই, ২০২৫ তারিখে কিংবা তার পরে। এর আগের যাবতীয় বিনিয়োগসমূহের মুনাফা বন্টন হবে পূর্ববর্তী নীতিমালা অনুসারে।
এই সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নের ছয় মাস পর মুনাফার বার্ষিক হার পুনঃনির্ধারণ করা হবে। তবে এই সময়ের মধ্যে যে সঞ্চয়পত্রগুলো ইস্যু করা হবে সেগুলোর স্ব স্ব মেয়াদ ও রিটার্নের হার বহাল থাকবে। সুতরাং বিনিয়োগকারীরা তাদের সঞ্চয়পত্র ইস্যুকালীন ধার্যকৃত হার অনুসারে নির্ধারিত পুরো মেয়াদ জুড়ে মুনাফা পাবেন।
শেষাংশ
বাংলাদেশ জাতীয় সঞ্চয় স্কিমের পেনশনার সঞ্চয়পত্রে ৭,৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগে সর্বোচ্চ মুনাফার হার ১১.৯৮ শতাংশ। ৭,৫০,০০০ টাকার অধিক বিনিয়োগকারীরা লাভ পাবেন ১১.৮০ শতাংশ হারে। এই মুনাফা বন্টন নীতি শুধুমাত্র ১ জুলাই, ২০২৫ তারিখে ও তার পরবর্তীতে ইস্যুকৃত পেন শনার সঞ্চয়পত্রের জন্য অনুসরণ করা হবে।