তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে সরকার বাণিজ্যিক বিরোধ নিরসনের জন্য দেশের বিদ্যমান আইনগুলোতে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির (এডিআর) বিধান অন্তর্ভুক্ত করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে, যাতে বিরোধ নিষ্পত্তি প্রক্রিয়া সহজতর ও সময় সাশ্রয়ী হয়।’
আরও পড়ুন: আদালতের বাইরে বিরোধ নিষ্পত্তিতে জোর দিতে হবে: আইনমন্ত্রী
বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল আরবিট্রেশন সেন্টারের (বিয়াক) নবম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শনিবার আয়োজিত ওয়েবিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ কথা বলেন। অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকে প্রচারিত ওয়েবিনারের প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল ‘প্রথম নয় বৎসর পূর্তি উদযাপন: বাংলাদেশে প্রাতিষ্ঠানিক বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তিতে বিয়াকের প্রভাব।’
আইনমন্ত্রী বলেন, কোভিড-১৯ থেকে উদ্ভূত অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে ডিজিটাল মাধ্যমে বিচার প্রক্রিয়া পরিচালনার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুনির্দিষ্ট নির্দেশে সরকার ‘আদালত কর্তৃক তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার আইন ২০২০’ প্রণয়ন করেছে।
আরও পড়ুন:কোভিডে বিচার বিভাগ অভাবনীয় সাফল্য দেখিয়েছে: আইনমন্ত্রী
মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের বিচার বিভাগ ইতোমধ্যেই ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আদালতের কার্যক্রম পরিচালনা শুরু করেছে, যদিও ভার্চ্যুয়াল এডিআর প্রবর্তনের বিষয়ে আমাদের অনেক দূর যেতে হবে। দেশের সকল আদালতে বিচারাধীন থাকা ৩৬ লাখ মামলার প্রেক্ষাপটে এডিআরকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া আমাদের অবশ্য করণীয়। ফোন কনফারেন্স ও ইন্টারনেট সমর্থিত ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নির্দেশিত এডিআর অনুশীলন করা যেতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বৈশ্বিক মহামারি দ্বারা সৃষ্ট চলমান মৃত্যু ও ধ্বংসযজ্ঞের মধ্যে টিকে থাকতে হলে এবং আমাদের অর্থনৈতিক উন্নতির ঈপ্সিত লক্ষ্য অর্জন করতে হলে এডিআর পদ্ধতির বিকল্প নেই।’
আরও পড়ুন: ভার্চুয়াল কোর্টের সফলতার জন্য বিচারক ও আইনজীবীদের প্রশিক্ষণ প্রয়োজন: আইনমন্ত্রী
সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মো. রেজাউল হাসান বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় সালিশি আইন ২০০১-এ এডিআরের বিধানগুলো পর্যালোচনা করে বলেন, এতে বিয়াকের প্রাতিষ্ঠানিক ভূমিকা নির্দেশিত আছে।
তিনি বর্তমান সালিশি আইন সংশোধনের লক্ষ্যে কতিপয় প্রস্তাব পেশ করেন যাতে বিদেশি সালিশি এওয়ার্ড বাস্তবায়ন সহজতর হয় এবং আরবিট্রেটর নিয়োগে যোগ্যতার বিষয়টি প্রাধিকার পায়।
বিয়াক বোর্ডের চেয়ারম্যান ও ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স-বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট মাহবুবুর রহমান তার বক্তব্যে চলমান কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে অলাভজনক এ প্রতিষ্ঠানটির আয়ের প্রধান উৎস বৈদেশিক প্রশিক্ষণ বন্ধ থাকা এবং সালিশি ও মধ্যস্থতা কার্যক্রম ব্যাপকভাবে হ্রাস পাওয়ার কথা উল্লেখ করে বিয়াকের টিকে থাকার লক্ষ্যে আইনমন্ত্রীর কাছে আর্থিক অনুদান চান।
আরও পড়ুন:যৌন নির্যাতনের অপরাধ কখনোই সহ্য করা হবে না: আইনমন্ত্রী
বাণিজ্যিক বিরোধ নিষ্পত্তিতে বিয়াককে প্রাতিষ্ঠানিক প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ব্যবহার করে এডিআর পদ্ধতি অনুসরণ করার বিষয়ে মাহবুবুর রহমান মন্ত্রীর সমর্থন কামনা করেন।
বিয়াকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ এ. (রুমি) আলী তার উদ্ধোধনী বক্তব্যে বলেন যে উন্নত দেশগুলো দৃঢ় এডিআর কাঠামো সৃষ্টি করেছে।
বিশ্ব ব্যাংকের ডুইং বিজনেসের চুক্তি বাস্তবায়ন সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বের ১৯০টি অর্থনীতির মধ্যে ১৮৯তম উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাণিজ্যিক বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য আদালতে যাওয়ার পূর্বে এডিআর পদ্ধতির প্রয়োগ নিশ্চিত করার এখনই সময়। এডিআরকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে আদালতের কার্যক্রামের সাথে এডিআর পদ্ধতির সমন্বয় ঘটানোর জন্য তিনি সরকার ও ব্যবসায়ী মহলকে আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন:ভার্চুয়াল কোর্টের সাহায্য নিতেই হবে: আইনমন্ত্রী
বিচারক, আইনজীবী, ব্যবসায়ী, পদস্থ সরকারি কর্মকর্তা, ব্যাংকার, শিক্ষাবিদ এবং কূটনৈতিক মিশন, আন্তর্জাতিক সংস্থা ও গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা ওয়েবিনারে অংশগ্রহণ করেন।