বৃহস্পতিবার ই-কমার্স ব্যবসায়ীদের সংগঠন ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে ই-ক্যাবের সভাপতি শমী কায়সারের সভাপতিত্বে সম্মেলনে করোনাকালীন সময়ে ই-কমার্স ব্যবসার বিভিন্ন দিক ও ই-ক্যাবের পক্ষ থেকে গৃহিত বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরা হয়।
প্রতিষ্ঠানের জেনারেল ম্যানেজার জাহাঙ্গীর আলম শোভনের স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ৭ এপ্রিল ছিল ই-কমার্স দিবস। এবারের ই-কমার্স দিবসের প্রতিপাদ্য ঠিক করা হয় ‘ঘরে থাকাই নিরাপদ, ই-কমার্সই ভবিষ্যৎ’।
সংবাদ সম্মেলনে ই-ক্যাবের সভাপতি শমী কায়সার বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী করোনা সংক্রমণ রোধে সর্বসাধারণকে অনলাইনে কেনাকাটার ব্যাপারে পরামর্শ দিয়েছেন। আমরা জানি, বিগত বছর করোনার আপদকালীন সময়ে সরকার দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিত্যপণ্য ই-কমার্সের মাধ্যমে সচল রাখার নির্দেশনা দিয়েছিল। তারই ধারাবাহিকতায় চলতি বছরও একইভাবে অনলাইনে নিরাপদে পণ্য ও সেবা সচল রাখার ব্যাপারে পরিপত্র জারি করা হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে ই-ক্যাবের পক্ষ থেকে আবেদনের মাধ্যমে ইতোমধ্যে ই-কমার্স ডেলিভারির সময়সীমা সন্ধ্যা ৬টা থেকে বর্ধিত করে রাত ১২টা পর্যন্ত করা হয়েছে। ’
আরও পড়ুন: সংকটে কীভাবে মানুষের পাশে থাকা যায় তা দেখিয়েছে ই-ক্যাব
তিনি বলেন, ‘চলতি বছর ই-ক্যাব চারটি মূখ্য বিষয়কে প্রাধান্য দিয়ে একটি কর্ম পরিকল্পনা তৈরি করেছে। বিষয়গুলো হলো গ্রামীণ ই-কমার্স, ক্রস বর্ডার ই-কমার্স, সোস্যাল মিডিয়া কমার্স ও ই-কমার্সে অভিযোগ ব্যবস্থাপনা। তারই ভিত্তিকে আগামী ১১ এপ্রিল ‘রুরাল টু গ্লোবাল’ শিরোনামে একটি পলিসি কনফারেন্সের আয়োজন করা হচ্ছে। ধারাবাহিকভাবে অন্যান্য বিষয়েও পলিসি সংক্রান্ত কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে। এছাড়া সরকারের ডিজিটাল কমার্স নীতিমালা বাস্তবায়নসহ পরিস্থিতির আলোকে বিভিন্ন বিষয়ে নিয়ে করনীয় পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করবে ই-ক্যাব।’
ই-ক্যাবের ডিরেক্টর আসিফ আহনাফের সঞ্চালনায় ই-ক্যাবের অর্থ সম্পাদক মো. আব্দুল হক অনু সংবাদ সম্মেলনে ই-কমার্সের বিভিন্ন দিক এবং ই-ক্যাবের কার্যক্রম তুলে ধরেন।
অর্থ সম্পাদক বলেন, শুধুমাত্র নিত্যপণ্যে ২০২০ সালের শেষ ৮ মাসে লেনদেন হয়েছে ৩ হাজার কোটি টাকা, বর্তমানে প্রায় ১ লাখ ৬০ হাজারের বেশি ডেলিভারি হচ্ছে প্রতিদিন, ৫০ হাজার নতুন কর্মসংস্থান, ৬ হাজার তরুণদের প্রশিক্ষণ, ১৬ হাজার কোটি টাকার সার্বিক ডিজিটাল লেনদেন । ই-কমার্সে বিগত বছর সমূহে যেখানে ২৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ছিল গত বছর তা ৭০-৮০ শতাংশে উন্নীত হয়েছে এবং ক্ষেত্র বিশেষে ৩০০ শতাংশ প্রবৃদ্ধিও ঘটেছে, বিশেষ করে নিত্যপণ্য ও খাদ্য ব্যবসায়।
তিনি বলেন, ‘করোনা চলাকালীন সময়ে সদস্যদের অর্থসংকট মোকাবিলায় ই-ক্যাবের পক্ষ থেকে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে যোগযোগ করা হয়। ই-ক্যাবের এই প্রচেষ্টায় প্রাইম ব্যাংক ও সিটি ব্যাংকের সাথে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে মোট ১৩টি প্রতিষ্ঠানকে জামানতবিহীন বিভিন্ন মেয়াদী ঋণের ব্যবস্থা করা হয়। আরও ১৩৭টি প্রতিষ্ঠানের আবেদন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’
আরও পড়ুন:লকডাউন চলাকালে ওয়ারীতে জরুরি পণ্য সরবরাহ করবে ই-ক্যাব
ই-ক্যাবের ডিরেক্টর আসিফ আহনাফ বলেন, ‘ই-কমার্স খাত শৃঙ্খলা আনতে ই-ক্যাব বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ‘ডিজিটাল কমার্স নির্দেশনা’ চূড়ান্ত করার কাজ করছে। এটা চূড়ান্ত হলে আমরা আশা করি বর্তমানে অনেক সমস্যার সমাধান হবে। এতে ক্রেতারা সচেতেন হয়ে দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠান থেকে কেনাকাটা করতে পারবে। ক্রেতাদের সচেতন হওয়ার মাধ্যমে সমস্যা অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব। এছাড়া ই-ক্যাবের কাছে যেসব প্রশ্ন আসে সেগুলোও আমরা সদস্য প্রতিষ্ঠানের সাথে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করার চেষ্টা করি ইউএনবি ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন