ব্যক্তিগত আক্রমণ করার জন্য ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে নিন্দা জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগ নেতারা কীভাবে ছিন্নমূল থেকে বিত্তশালী হয়েছে তা জনগণ ভালো করেই জানে।
রবিবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, দলের অনেক নেতা নিজের উপার্জনে কিংবা পৈতৃক সম্পত্তি বিক্রি করে রাজনীতি করছেন।
বিএনপি নেতা অভিযোগ করেন, কাদের শনিবার সব ধরনের নৈতিকতার ঊর্ধ্বে গিয়ে তাকে নিয়ে কিছু আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন।
তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘তিনি (কাদের) আমাকে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করেছিলেন এবং বলেছিলেন যে আমরা দুবাই থেকে টাকা পাই এবং আমি টাকা নিয়ে মিথ্যা বলছি। আমি ওবায়দুল কাদেরকে বলতে চাই, আমাদের বেশি চাপ দেবেন না। কেঁচো খুড়তে সাপ বেরিয়ে আসতে পারে।’
আরও পড়ুন: পায়রা সমুদ্রবন্দরে রিজার্ভের টাকা কীভাবে খরচ হয়েছে ব্যাখ্যা করুন: সরকারের উদ্দেশে ফখরুল
ফখরুল বলেন, বাংলাদেশের সবাই জানে আওয়ামী লীগ নেতারা কী করে এবং কীভাবে অর্থ উপার্জন করে। ‘বাংলাদেশ সৃষ্টির পর থেকে আপনারা কী করছেন,তা এদেশের মানুষ জানে। রাতারাতি ছিন্নমূল থেকে বিত্তশালী বনে যাচ্ছেন।’
তিনি বলেন, ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের মধ্যে কারা কানাডা,সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম তৈরি করছে এবং কারা নানাভাবে বিদেশে টাকা পাচার করছে তার সব তথ্য বাংলাদেশের জনগণের কাছে আছে।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ এই নেতা কটাক্ষ করে বলেন, ‘আমরাও জানি আমেরিকায় কে কত ব্যাংকের মালিক, আর কে কত ঘর বানিয়েছে...এটা এদেশের করদাতার টাকা। আপনারা সেই টাকা লুটপাট করছেন।’
ফখরুল বলেন, একটি বড় দলের মহাসচিব তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে অশালীনভাবে ব্যক্তিগত আক্রমণ করা খুবই দুঃখজনক। ‘আপনি যদি ব্যক্তিগত পর্যায়ে আক্রমণ করেন তবে আপনি এটি মোকাবিলা করতে পারবেন না। আপনি কীভাবে জনগণের টাকা লুট করেছেন তার তথ্য একদিন প্রকাশিত হবে।’
এর আগে শনিবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগর এলাকায় ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিল উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে ওবায়দুল কাদের অভিযোগ করেন, মির্জা ফখরুল সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে বিদেশ থেকে তহবিল পাচ্ছেন।
তিনি আরও বলেন,ফখরুল দুবাই থেকে টাকা নিচ্ছেন বলে আমরা তথ্য পেয়েছি।
আরও পড়ুন: বিএনপির এমপিরা পদত্যাগ করতে প্রস্তুত; বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের জন্য সরকারকে ক্ষমতা ছাড়তে হবে: ফখরুল
কাদেরের অভিযোগকে নস্যাৎ করে ফখরুল বলেন, আমরা পৈতৃক সম্পত্তি বিক্রি করে রাজনীতি করি। আমরা কারও টাকা নিয়ে রাজনীতি করি না। আমাদের দলের লোক এবং আমাদের প্রত্যেক সদস্য আমাদের সমাবেশ করার জন্য তাদের নিজস্ব অর্থ দিচ্ছেন। এটাই আমাদের বৈশিষ্ট্য।’
রংপুরে বিএনপির সমাবেশের চেয়ে তাদের শনিবারের সমাবেশ অনেক বড় বলে মন্তব্য করে আ.লীগ সাধারণ সম্পাদকের সমালোচনা করে তিনি বলেন,‘ক্ষমতাসীন দল যানবাহনে ও জনগণের টাকা ব্যবহার করে তাদের কর্মসূচিতে লোক এনেছে, কিন্তু অনুষ্ঠানস্থলে রাখা ২২ হাজার চেয়ার পূরণ করতে পারেনি। তাহলে আপনারাই নির্ধারণ করুন কত লোক সেখানে জড়ো হয়েছিল।’
ক্ষমতাসীন দল এত শক্তিশালী হলে বিএনপির সমাবেশে বাধা দিতে কেন ক্ষমতাসীন দল পরিবহন বন্ধ করে এবং বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালাতে দলীয় ক্যাডারদের লেলিয়ে দেয়, সে বিষয়েও প্রশ্ন তোলেন ফখরুল।