রবিবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে শুনানি শেষে এ আদেশ দেয়া হয়।
সুপ্রিম কোর্ট বার সমিতির সম্পাদক আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গত ১৬ নভেম্বর মীর নাসিরের জামিনের বিষয়ে শুনানি ও আদেশের জন্য ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত মুলতবি (স্ট্যান্ডওভার) রেখেছিল সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের একই বেঞ্চ।
দুদকের করা মামলায় উচ্চ আদালতের নির্দেশে গত ৮ নভেম্বর মীর নাছির বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। ওই দিন তার পক্ষে করা জামিন আবেদন খারিজ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয় আদালত। আত্মসমর্পণের পর মীর নাছির আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি) দায়ের করেন। একই সাথে জামিনও চান।
আরও পড়ুন: মীর নাছিরের জামিন আবেদনের আদেশ সোমবার
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় (জরুরি অবস্থার ১/১১ এর সময়) অবৈধ সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে করা মামলায় মীর নাছির ও তার ছেলে মীর হেলাল উদ্দিনের সাজা বহাল রেখে তাদের নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলে হাইকোর্ট। কিন্তু তা না করে তারা আপিল আবেদন করায় প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ভার্চ্যুয়াল আপিল বেঞ্চ গত ১৫ অক্টোবর তাদের লিভ টু আপিল খারিজ করে দেন।
এরপর গত ৮ অক্টোবর ঢাকার ২ নম্বর বিশেষ জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করেন মীর নাছির। সেদিন বিচারক এ এস এম রুহুল ইমরান তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এরপর আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করার পাশাপাশি জামিন চেয়ে আবেদন করেন মীর নাছির। ওই দিন তার জামিন আবেদনের ওপর শুনানি শেষ হলে আদেশের জন্য রাখে আপিল বিভাগ।
এদিকে, একই মামলায় দণ্ডিত মীর নাছিরের ছেলে মীর হেলাল উদ্দিন গত ২৭ অক্টোবর আত্মসমর্পণ করলে আদালত তাকেও কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়। এরপর হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করেন মীর হেলাল। সেই সাথে জামিনও চান। আবেদনের শুনানি নিয়ে চেম্বার জজ আদালতের বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান গত ১ নভেম্বর মীর হেলালকে এ বছরের ৩১ মে পর্যন্ত জামিন দেন।
আরও পড়ুন:হাওলাদার ও মীর নাছিরের আবেদন কার্যতালিকা থেকে বাদ
অবৈধ সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে মীর নাসির ও তার ছেলে মীর হেলালের বিরুদ্ধে ২০০৭ সালের ৬ মার্চ রাজধানীর গুলশান থানায় দুদক মামলা করে। এ মামলায় বিশেষ জজ আদালত একই বছরের ৪ জুলাই রায়ে মীর নাসির উদ্দিনকে ১৩ বছর ও মীর হেলালকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেয়।
বিচারিক আদালতের ওই রায়ের বিরুদ্ধে মীর নাসির ও মীর হেলাল হাইকোর্টে পৃথক আপিল করেন। ২০১০ সালের ১০ আগস্ট হাইকোর্ট মীর নাসির ও মীর হেলালের সাজা বাতিল করে রায় দেয়। হাইকোর্টের ওই রায় বাতিল চেয়ে আপিল আবেদন করে দুদক।
শুনানি নিয়ে ২০১৪ সালের ৩ জুলাই সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ হাইকোর্টের দেয়া রায় বাতিল করে। একই সাথে বিচারিক আদালতের সাজার বিরুদ্ধে বাবা-ছেলের করা পৃথক আপিল হাইকোর্টে পুনরায় শুনানির নির্দেশ দেয়। শুনানি শেষে গত বছরের ১৯ নভেম্বর হাইকোর্ট রায় দেয়।
হাইকোর্টের ১৫৯ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়টি প্রকাশ করার পর এই রায়ের অনুলিপি আসামিদের হাতে পাওয়ার এবং বিচারিক আদালতে পৌঁছার তিন মাসের মধ্যে তাদের বিচারিক (নিম্ন) আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়। ওই আদেশ অনুযায়ী আসামি মীর হেলাল আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।