রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য গঠিত ১৯ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড আজ বিকালে তার শারীরিক অবস্থা পর্যালোচনা করতে বৈঠকে বসবে।
খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন জানান, এদিন বিকাল ৫টায় মেডিকেল বোর্ড বৈঠকে বসবে।
তিনি বলেন, বৈঠকে চিকিৎসকরা বিএনপি চেয়ারপার্সনের অবস্থা ও বিভিন্ন রিপোর্ট পর্যালোচনা করে তার পরবর্তী চিকিৎসার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।
জাহিদ বলেন, খালেদা জিয়া এখনও করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। ‘তার কার্ডিয়াক পয়েন্ট এখনও পুরোপুরি স্থিতিশীল নয়’।
তিনি বলেন, অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে গঠিত মেডিকেল বোর্ড বিএনপি চেয়ারপার্সনের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে তার যথাযথ চিকিৎসা নিশ্চিত করছে। ৭২ ঘণ্টা পার হওয়ার আগে তার অবস্থা সম্পর্কে কিছুই বলা যাবে না।
এর আগে রবিবার জাহিদ হোসেন বলেছেন, শনিবার করোনারি এনজিওগ্রাম টেস্টে বিএনপি চেয়ারপার্সনের ধমনীতে তিনটি ব্লক পাওয়া গেছে।
তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার হার্টে আরও দুটি ব্লক এবং কিছু জটিলতা থাকায় ৭২ ঘণ্টার নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুন: হৃদরোগে আক্রান্ত খালেদা জিয়া: মেডিকেল বোর্ড
অধ্যাপক জাহিদ বলেন, ‘শনিবার চিকিৎসার জন্য এভারকেয়ার হাসপাতালে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শে করোনারি এনজিওগ্রাম করে বিএনপি চেয়ারপার্সনের হার্টে তিনটি ব্লক পাওয়া গেছে। একটাতে এনজিও গ্রামের সঙ্গে সঙ্গে স্টেন্টিং করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘৭২ ঘণ্টা অতিবাহিত না হওয়া পর্যন্ত চিকিৎসকরা তার বর্তমান স্বাস্থ্যের অবস্থা সম্পর্কে কোনও মন্তব্য করতে রাজি নন। তিনি এখন সিসিইউতে চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছেন।’
আরও দুটি ব্লক সম্পর্কে জাহিদ বলেন, কিডনি ও লিভারের দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা থাকায় ওনার অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে চিকিৎসকরা এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন।
তিনি বলেন, অন্য দুটি ব্লক অপসারণের জন্য যে ওষুধের প্রয়োজন তা তার কিডনিকে আরও ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান জাহিদ বলেন, পরিবারের কোনো সদস্য ও বিএনপি নেতাদের এখন তার সঙ্গে দেখা করতে দেয়া হচ্ছে না।
তিনি বিএনপি চেয়ারপার্সনের দ্রুত সুস্থতার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন।
এর আগে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ায় শনিবার ভোররাতে খালেদা জিয়াকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় নিম্ন আদালত পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিলে তাকে কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। পরে একই বছর আরেকটি দুর্নীতির মামলায় তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।
করোনার কারণে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকার খালেদা জিয়াকে তার গুলশানের বাড়িতে থাকার এবং দেশ না ছাড়ার শর্তে সাজা স্থগিত করে একটি নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে সাময়িকভাবে কারাগার থেকে মুক্তি দেয়।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার হার্টে আরও দুটি ব্লক, ৭২ ঘণ্টার নিবিড় পর্যবেক্ষণে