খুলনায় পূর্বনির্ধারিত সমাবেশকে কেন্দ্র করে বিএনপির সঙ্গে সংঘর্ষে পুলিশের গুলিতে খুলনা যুবদলের সাধারণ সম্পাদকসহ অন্তত ১৫ নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে দাবি করেছে বিএনপি।
শুক্রবার বিকালে নগরীর খুলনা প্রেসক্লাবের সামনে দলের সমাবেশকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ হয়।
খুলনা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল ইসলাম তুহিন দাবি করেছেন পুলিশের হামলায় আরও ২০ জন আহত হয়েছেন।
তিনি দাবি করেন, ‘কোনও প্ররোচনা ছাড়াই পুলিশ তাদের উপর গুলি চালালে দলের অন্তত ১৫ জন গুলিবিদ্ধ আহত হয়।’
গুলিবিদ্ধদের মধ্যে রয়েছেন জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক এবায়দুল হক রুবায়েদ, ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক আশিকুর রহমান অনি, সিটি কলেজের সদস্য সচিব আরিফ মোল্লা তুর্জো, সদর থানা সদস্য শাহিল, ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল্লাহ কিমিয়া সাদাত, যুবদল নেতা জাহিদুর রহমান এবং দিঘলিয়া উপজেলার সেনহাটি ইউনিয়নের ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতা মুজিবুর রহমান প্রমুখ।
বিএনপি নেতাদের আহত হওয়ার ছবি থেকে বোঝা যায় পুলিশ রাবার বুলেট ব্যবহার করেছে, প্রাণঘাতী গোলাবারুদ নয়।
এছাড়া সমাবেশস্থল থেকে ১০ জনকে আটক করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, গুলিবিদ্ধ ও আহতদের নগরীর বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
কোনো উস্কানি ছাড়াই সমাবেশে পুলিশ তাদের ওপর গুলি চালায়, লাঠিচার্জ করে এবং টিয়ারশেল ব্যবহার করে বলে অভিযোগ করেন বিএনপিরি এই নেতা।
তুহিনের মতো একই সুরে খুলনা মহানগর বিএনপির সদস্য মিজানুর রহমান মিল্টন বলেন, কোনো উস্কানি ছাড়াই পুলিশ তাদের ওপর অতর্কিত হামলা করেছে।
তিনি বলেন, পুলিশের হামলার সময় প্রেসক্লাবের ভেতরে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, কেন্দ্রীয় নেতা আজিজুল বারী হেলাল ও আনিদ্রা ইসলাম অমিতসহ ২৫ থেকে ৩০ জন দলীয় নেতাকর্মী আটকা পড়েছিলেন।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ‘বিএনপির লোকজন কোনো অজুহাত ছাড়াই আমাদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে আমরা টিয়ারশেল ব্যবহার করতে বাধ্য হই।
আরও পড়ুন: খুলনায় বিএনপির সমাবেশে পুলিশের লাঠিচার্জ, টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ
তিনি জানান, ঘটনাস্থল থেকে বিএনপির ১০ জনকে আটক করা হয়েছে এবং এ ঘটনায় কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
তিনি বলেন, কোনো অপ্রত্যাশিত ঘটনা এড়াতে অতিরিক্ত সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে, পরিস্থিতি এখন তাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
অভিযোগ অস্বীকার করে খুলনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান আল মামুন বলেন, বিএনপি নেতাকর্মীরা অনুমতি ছাড়া সমাবেশ করার চেষ্টা করে তাদের ওপর হামলা চালায়।
বিএনপির সদস্যদের ওপর গুলি চালানোর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে এড়িয়ে যান।
বিএনপির অভ্যন্তরীণ সূত্র জানায়, শুক্রবার বিকালে প্রেসক্লাবের সামনে সরকারের পদত্যাগ, ভুয়া মামলা বন্ধ, গণগ্রেপ্তার এবং সরকারের দুর্নীতির প্রতিবাদসহ ১০ দফা দাবিতে জনসভার নির্ধারিত সময় ছিল।
জেলা ও নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে দলীয় নেতাকর্মীরা দুপুর থেকেই সমাবেশস্থলে জড়ো হতে থাকেন। পুলিশ সমাবেশস্থলের দিকে অগ্রসর হওয়া মিছিলে বাধা দিলে সংঘর্ষ শুরু হয়।
আরও পড়ুন: 'আপনার সময় শেষ': সরকারের প্রতি ফখরুল