শুক্রবার নগরীর মেহেদীবাগস্থ নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
খসরু বলেন, সারা বিশ্বে করোনাভাইরাসের ঝুঁকি থেকে বাঁচার জন্য মানুষকে এখন একজনের সাথে আরেকজনের চার ফুট দূরত্বে থাকতে হচ্ছে। লোকজনকে ঘর থেকে বের হতে বারণ করা হচ্ছে। সরকার সারা দেশে সভা-সমাবেশ, বিয়ে, সব কিছু বন্ধ করে দিয়েছে। রাস্তা ঘাটে মানুষ এখন বের হচ্ছে না আর সেখানে বাংলাদেশে এখন নির্বাচন হচ্ছে।
বিএনপি নেতা বলেন, দেশের এরকম একটা সংকটে জাতিকে এভাবে ঝুঁকির দিকে ঠেলে দেয়া একটা গর্হিত সিদ্ধান্ত। দেশে ১৭ কোটি ঘনবসতিপূর্ণ মানুষ বাস করে। একটা যদি দুর্যোগ হয় তাহলে এর দায়দায়িত্ব কে নেবে? তাই এই মুহূর্তে নির্বাচন বন্ধ করা দরকার।
আমীর খসরু বলেন, নির্বাচন হচ্ছে নাগরিকের অধিকার। ভোট কেন্দ্রে যাওয়া এবং ভোট দেয়া সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার বিষয়। নাগরিকের যেখানে বাধ্যবাধকতা সেটা আপনারা খোলা রেখেছেন। আর যেখানে মানুষ যেতে না চাইলে না যেতে পারবে সেটা বন্ধ করে দিয়েছেন।
‘আগে নির্বাচন বন্ধ করে তারপর বাকি সব বন্ধ করা উচিত ছিল। কারণ প্রচারণায় গেলে তো লোকজন সীমিত করতে পারবেন না। মানুষ এখন লিফলেট নিতে দরজা খুলছে না। এখন পরিস্থিতি এমন অবস্থায় চলে গেছে। এমন অবস্থায় কেন নির্বাচন করতে হবে? কার স্বার্থে এই নির্বাচন?’
‘ঢাকার সংসদীয় আসনের উপ-নির্বাচন সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কারণে করছে’ ইসির এমন মন্তব্যের বিষয়ে তিনি বলেন, সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা বড়, নাকি মানুষের জীবন বড়। ইসি সংবিধানের দোহাই দিয়ে মানুষকে এভাবে একটা ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় ঠেলে দিচ্ছে। ভোটের দিন ইভিএম মেশিনে একটার পর একটা ফিঙ্গারপ্রিন্ট দেয়ার সময় কেউ যদি করোনা আক্রান্ত থাকে তাহলে তো সবাই সংক্রমিত হবে। এটার দায়দায়িত্ব কে নিবে?
এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির এই স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, ইসি কি মানুষের স্বাস্থ্য ও জীবন নিয়ে খেলা করতে চায়? আমরা মনে করি, মানুষের জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে রেখে নির্বাচনী কর্মকাণ্ড করার কোনো সুযোগ নেই। নির্বাচনী কর্মকাণ্ডে সাংবাদিকসহ সবাই জড়িত। কেউ তো রেহাই পাচ্ছে না। ইসি ভোট বন্ধ না করলে শনিবার বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে তিনি জানান।
এসময় বিএনপির মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, আমাদের কাছে মানুষের জীবনটাই মুখ্য। জনগণ তো আমাদের সাথে আছে। জনগণকে বাদ দিয়ে আমরা রাজনীতি করতে পারব না। সেজন্য জনগণের নিরাপত্তা আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ।
‘মাঠের জরিপে আমরা এগিয়ে থাকলেও নির্বাচনের বিজয়ী হওয়াটা আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়। সিভিল সার্জন ইতোমধ্যে বলেছেন, দেশের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ শহর হচ্ছে চট্টগ্রাম। এখানে সভা-সমাবেশ সমাগম সবকিছু বন্ধ করে দিতে হবে। এ অবস্থায় আমরা মনে করি, ইসি মানুষের বিরুদ্ধে কাজ করছে। মানুষের নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনে যদি নির্বাচন থেকে সরে যেতে হয় তাহলেও আমি রাজি আছি,’ বলেন তিনি।
এসময় বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ড. সুকোমল বড়ুয়া, কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহাবুবের রহমান শামিম, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দিন, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।