আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার পরমেশ্বর্দী এলাকায় আওয়ামী লীগের দুপক্ষের সংঘর্ষে একজন নিহত হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভাঙচুর ও লুটপাট হয়েছে।
জানা গেছে, শুক্রবার পরমেশ্বরদী ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান নুরুল আলম মিনার গ্রুপ ও গত নির্বাচনের পরাজিত প্রার্থী মান্নান মাতুব্বর গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে আহত হয় উভয় পক্ষের কমপক্ষে ২০ জন। এদের মধ্যে গতরাতেই ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ট্রমা সেন্টারে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান চেয়ারম্যান গ্রুপের কৃষক শহীদ ফকির (৪৭)।
শহীদ ফকিরের মৃত্যুর খবর এলাকায় পৌঁছতেই রাত থেকে দফা দফায় কাটা খাল ও ফকির পাড়ার অর্ধশত বসবাড়ি ও দোকানপাটে হামলা ও লুটপাট চালায় নিহত পক্ষের সমর্থকরা।
পড়ুন: ফরিদপুরে করোনা ও উপসর্গে আরও ১০ মৃত্যু
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বর্তমানে প্রতিপক্ষের মামলার ভয়ে পুরো এলাকা পুরুষ শূন্য, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মোতায়েন রয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ। নিহত শহীদ ফকিরের বাড়ি ছাড়া অন্য কোনো কোনো বাড়িতে পুরুষ সদস্যদের দেখা মেলেনি।
ক্ষতিগ্রস্ত পরমেশ্বর্দীএলাকার বাসিন্দা লতিফা বেগম(৩৫) বলেন, শুক্রবার দিবাগত রাতে পার্শ্ববর্তী খারদিয়া গ্রামের লোকেরা তাদের বাড়ির গোলা থেকে ধান ও পাট লুট করে নিয়ে যায়। দেশীয় অস্ত্রের মুখে আমরা নিজেরাই ঘরের তালা খুলে দিতে বাধ্য হই।
পড়ুন: ফরিদপুর মেডিকেলে করোনায় আরও ১৯ প্রাণহানি
ফরিদপুরে আশ্রয়ণের সুবিধা ভোগীদের অন্যরকম ঈদ
তিনি জানান, তাদের আকন গোষ্ঠীর পুরুষ সদস্যরা শুক্রবারের দিনের কাইজায় (মারামারিতে) অংশ না নেয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের নিজ গ্রামের লোকেরাও তাদের এখন হত্যা মামলায় ফাসিয়ে দেয়ার ভয় দেখাচ্ছে।
ওই গ্রামের আরেক ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার রুবেল আকনের স্ত্রী রাবেয়া আক্তার (২৫) বলেন, ‘হামলাকারীরা আমাদের বাড়ির গরু, পাট, পেঁয়াজ এমনকি ফ্রিজটাও লুটে নিয়ে গেছে। বাধা দিতে গেলে গলায় রামদা ধরে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে গেছে।’
পাশের বাড়ির প্রবাসীর স্ত্রী খাদিজা আক্তার বলেন, ‘আমাদের বাড়ির তিনটি গোয়ালের ১০টি গরুই নিয়ে গেছে ওরা, বাড়ির মজুত যা ছিল সবই বস্তায় ভরে মাথায় করে লুট করে নিয়ে গেছে। এখন আমাদের ঘরে খাবার কিছুই নেই।’
বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. নুরল আলম বলেন, ‘এলাকায় নতুন করে অপ্রিতিকর ঘটনা এড়াতে আমরা তৎপর রয়েছি, মারামারির ঘটনায় কেউ এখনো লিখিত অভিযোগ না দিলেও প্রকৃত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।’
ঘটনাস্থল পরিদশনে আসা পুলিশের মধুখালী সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার সুমন কর বলেন, পুরো বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি। সঠিক তদন্তের মাধ্যমে দ্রুততম সময়ের মধ্যে দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে।