বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেছেন, রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে লুটপাট করা টাকা দিয়ে সরকার বিভিন্ন দলের ত্যাগী লোকদের নিয়োগ দিয়ে নতুন দল তৈরি করছে।
শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) এক ভার্চুয়াল প্রেস ব্রিফিংয়ে দেওয়া বক্তব্যে বলেন, বিশ্বাসযোগ্য ভোটে জয়ী হওয়ার সুযোগ না থাকায় জনগণকে একতরফা নির্বাচন করার জন্য ফাউল গেম অবলম্বন করার অভিযোগ করেন তিনি।
এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল কখনই অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের নিয়োগ দেয় না। গ্রামাঞ্চলের টাউট এবং খারাপ মানুষেরা বিরোধীদের সমস্যায় ফেলতে এটা করে...শেখ হাসিনাও একই কাজ করছেন।’
তিনি বলেন, সুবিধাবাদীরা বিভিন্নভাবে বিভিন্ন দলে অনুপ্রবেশ করে এবং এই লোকেরা নিজেদের লাভের সুযোগ পেলেই তাদের আসল রঙ পরিবর্তন করে। ‘এরশাদের শাসনামলে আমরা তাকে এই ধরনের লোক নিয়ে দল ও সরকার গঠন করতে দেখেছি। শেখ হাসিনা এখন সেই অশুভ পন্থা অনুসরণ করছেন।’
আরও পড়ুন: বিশ্ব স্বীকৃতি দিয়েছে বিএনপির বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অপপ্রচার একতরফা নির্বাচনের কৌশল: রিজভী
রিজভী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে নির্দেশ দিয়েছেন বিএনপি ও সমমনা দলের লোকদের বিভিন্নভাবে লোভ দেখিয়ে নিয়োগ দিতে।
তিনি আরও বলেন, গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এখন লোকদেরকে টাকা দিয়ে লোভ দেখিয়ে দলে নিয়ে যাচ্ছে এবং নিশ্চিত মনোনয়ন ও বিজয়ের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে।
তিনি বলেন, একদিকে তিনি (প্রধানমন্ত্রী) আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ব্যবহার করে জনগণকে দমন করতে সব ধরনের নিষ্ঠুর পদক্ষেপ নিচ্ছেন, অন্যদিকে অর্থ ব্যবহার করে বিভিন্ন পক্ষের ফেলে দেওয়া লোকদের নিয়ে দল গঠনের চালাকি চালাচ্ছেন। রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে লুট করা হয়েছে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, অন্য স্বৈরাচারীদের মতো শেখ হাসিনাও ক্ষমতাকে আঁকড়ে ধরার জন্য নির্লজ্জ ও ঘৃণ্য কর্মকাণ্ডে লিপ্ত। ‘কারণ জনগণের কাছে গিয়ে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে জয়ী হওয়ার কোনো উপায় তার নেই। তাই নির্বাচনকে সামনে রেখে তিনি সব গণবিরোধী, অনৈতিক কর্মকাণ্ড ও নানা অপকর্মে লিপ্ত হচ্ছেন।
তিনি অভিযোগ করেন, নির্বাচনের মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য সরকার বিএনপি নেতা-কর্মীদের বেপরোয়াভাবে গ্রেপ্তার এবং তাদের বাড়িতে অভিযান অব্যাহত রেখেছে। এজন্য সারাদেশে র্যাবের ৪২৮টি কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে।
বিশ্বকাপ ফাইনালে প্রতিবেশী দেশের ক্রিকেট দলের পরাজয়ে বাংলাদেশিদের উদযাপন নিয়ে ভারতীয় রাজনীতিবিদদের ক্ষোভের বিষয়ে তিনি ভারতীয় মিডিয়া ও নীতিনির্ধারকদের প্রতি বাংলাদেশে ভারতবিরোধী মনোভাব বৃদ্ধির কারণ খুঁজে বের করার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ এখন গণতান্ত্রিক ও মৌলিক অধিকারের অভাবে… শেখ হাসিনা কেন সুষ্ঠু নির্বাচন দিচ্ছেন না? কারণ অনেক দেশ (ভারত সহ) তাকে ক্ষমতায় থাকার গ্যারান্টি দিচ্ছে, যাতে সে তাদের উদ্দেশ্য পূরণ করতে পারে। এ কারণে অনেক দেশ তাকে পৃষ্ঠপোষকতা করছে।’
আরও পড়ুন: নির্বাচনে কারচুপি করতে সরকার এজেন্সিগুলো ব্যবহার করে কিংস পার্টি গঠন করছে: রিজভী