জাতিসংঘের স্বাস্থ্য সংস্থাটি জানিয়েছে, বিশ্বজুড়ে স্তন ক্যান্সার এখন নারীদের মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ হিসেবে দেখা দিয়েছে।
ডব্লিউএইচওর ননকমিউনিকেবল ডিসিজ ডিপার্টমেন্টের ডা. আন্ড্রে ইলবাউই মঙ্গলবার বলেছেন, নতুন করোনাভাইরাস সংকট শুরু হওয়ার পরের এক বছরেরও বেশি সময়ে ক্যান্সারের যত্নের উপর তীব্র প্রভাব পড়েছে। মহামারির কারণে বিশ্বের অর্ধেক দেশের সরকারের ক্যান্সার সেবা আংশিক বা পুরোপুরি বিঘ্নিত হয়েছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগী বেড়েছে
ইউএন নিউজের বরাতে তিনি বলেন, ক্যান্সার নির্ণয়ে দেরি হওয়া এখন স্বাভাবিক নিয়মে পরিণত হয়েছে। থেরাপিতে বাধা বা বাতিল হওয়া উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। এবং এর কারণে আগামী বছরগুলোতে ক্যান্সারে আক্রান্ত মোট মৃত্যুর সংখ্যায় প্রভাব পড়বে।
সেবা প্রদানের উপর চাপ
ডা. আন্ড্রে ইলবাউই বলেন, স্বাস্থ্যসেবা নিয়োজিতদের সেবা দিতে গিয়ে প্রচণ্ড চাপের মধ্যে রয়েছেন এবং গবেষণা ও ক্লিনিকাল ট্রায়াল এনরোলমেন্ট উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। সহজভাবে বলতে গেলে ক্যান্সার নিয়ন্ত্রণের প্রচেষ্টায় করোনা মহামারি মারাত্মক প্রভাব ফেলছে।
ডব্লিউএইচওর এ চিকিৎসক বলেন, আয়ের সকল স্তরের অনেক দেশ এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যদিও নেদারল্যান্ডসসহ কিছু ধনী দেশে ক্যান্সার নির্ণয় এবং লক্ষণগুলোর চিকিৎসা সেবায় গতি বাড়ানোর জন্য নেয়া বিশেষ পদক্ষেপের কারণে মহামারির প্রভাব মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়েছে।
আরও পড়ুন: উহানের গবেষণা কেন্দ্র পরিদর্শন করল ডব্লিউএইচও’র তদন্ত দল
ক্যান্সার রোগীদের জন্য কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন কোনটা সবচেয়ে বেশি কার্যকর হতে পারে এর তথ্য না থাকায় বেশি অসুস্থরা অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছেন জানিয়ে ডা. ইলবাউই বলেন, ‘ভ্যাকসিনের চলমান ক্লিনিকাল ট্রায়ালের ফল এখনও প্রকাশ করা হয়নি।’
তিনি বলেন, আমরা কৃতজ্ঞ যে এই ক্লিনিকাল ট্রায়ালগুলোতে ক্যান্সার রোগীদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। যদিও ক্যান্সার রোগীরা তাদের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকার কারণে কোভিড-সম্পর্কিত অসুস্থতা এবং মৃত্যুর বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন।
ট্রিলিয়ন-ডলার ইস্যু
ডব্লিউএইচও এর মতে, বিভিন্ন সম্প্রদায়ের উপর ক্যান্সারের অর্থনৈতিক চাপ বিশাল এবং ক্রমাগত বাড়ছে। ২০১০ সালে এর ব্যয় ধরা হয়েছিল ১.১৬ ট্রিলিয়ন ডলার।
ডা. ইলবাউই বলেন, ২০২০ সালে বিশ্বব্যাপী ক্যান্সারে আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা এক কোটি ৯৩ লাখে পৌঁছেছে। ক্যান্সারে মৃতের সংখ্যা বেড়ে এক কোটিতে পৌঁছেছে।
আরও পড়ুন: ডব্লিউএইচও গবেষকরা উহানে কী জানার চেষ্টা করছেন?
সংস্থাটির মতে, ২০২০ সালে স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত নতুন রোগীর সংখ্যা ছিল ২৩ লাখ। যা ক্যান্সারে আক্রান্তদের প্রায় ১২ শতাংশ। ক্যান্সারে বিশ্বের নারীদের মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ এটি।