বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লার আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে তিনজন গবেষক এ মূর্তিটির আপেক্ষিক সময়কাল নির্ধারণ করে গত ১৯ অক্টোবর প্রতিবেদন দাখিল করেছে।
বুধবার জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা তার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বান্দরবান রাজগুরু বৌদ্ধ বিহারের মূর্তি সম্পর্কিত এ তথ্য জানান।
চেয়ারম্যান জানান, মূর্তি তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ করে বান্দরবান রাজগুরু বৌদ্ধ বিহারে রক্ষিত মূর্তিটি মিয়ানমারের প্যাগান শিল্পরীতির প্রভাবে নির্মিত হয়েছে। মূর্তিটির নির্মাণ শিল্পরীতির বিবেচনায় আনুমানিক খ্রিস্টীয় ১২ থেকে ১৫ শতকের মধ্যে নির্মিত হতে পারে। সেই মোতাবেক মূর্তিটির নির্মাণ আনুমানিক সাড়ে ৫০০ থেকে ৮০০ বছর আগের হতে পারে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে এক দল গবেষক এর আগে বান্দরবান রাজগুরু বৌদ্ধ বিহার পরিদর্শন করেন। তারা আলোকচিত্র ও বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ করেন।
গবেষক দলের সদস্যরা হলেন- প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের মাঠ কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহিন আলম, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের প্রভাষক শারমিন রেজওয়ানা ও প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের আঞ্চলিক পরিচালক ড. মো. আতাউর রহমান।
গবেষক দলটি বান্দরবান রাজগুরু বুদ্ধ বিহারে রক্ষিত মূর্তিগুলোর সাথে ১৪ থেকে ১৫ শতকে নির্মিত মিয়ানমারের মিউয়াং বৌদ্ধ মূর্তির নির্মাণ শৈলীর সাদৃশ্য ও প্রভাব খুঁজে পান। তারা পিতলের তৈরি রাজগুরু বৌদ্ধ বিহারে রক্ষিত মূর্তিটির সাড়ে ৫০০ থেকে ৮০০ বছরের পুরানো বলে মতামত দেন।
বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা বলেন, প্রাচীন এ বৌদ্ধমূর্তিটি দেশের সম্পদ। এটিকে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য জেলা পরিষদ ও মন্দির পরিচালনা কমিটির মাধ্যমে একটি স্বেচ্ছাসেবক কমিটি গঠন করা হচ্ছে। এছাড়াও ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের অংশ হিসেবে স্বীকৃতি পেতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়, জেলা প্রশাসন ও বোমাং রাজাকেও এ বিষয়টি জানানো হয়েছে।
জেলা পরিষদের এ চেয়ারম্যান জানান, বাংলাদেশে এক হাজার পাঁচশত বছরের পুরনো বৌদ্ধমূর্তি আছে বলে জানা যায়। তবে পার্বত্যাঞ্চলে এর চেয়ে পুরনো কোনো বৌদ্ধ মূর্তি নেই। এটি নিয়ে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীসহ পর্যটক ও স্থানীয়দের মাঝে বেশ কৌতূহল ও আগ্রহ রয়েছে।