রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রবিউল ইসলামের সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করলে আদালত পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে।
সোমবার বিকালে সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ২য় আদালতের বিচারক সাইফুর রহমান এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এসময় রবিউলের পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা ও দায়রা জজ আদালতের এপিপি খোকন কুমার দত্ত।
এর আগে দুপুরে একই আদালতে এ মামলার আসামি সাইফুর রহমান ও অর্জুন লস্করেরও ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।
সিলেট মহানগর পুলিশের সহকারী কমিশনার অমূল্য ভূষণ চৌধুরী জানান, তিন আসামিকেই আদালতে হাজির করে ৭ দিন করে রিমান্ড চাওয়া হয়েছিলে। আদালত তাদের পাঁচদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করে।
আদালতে জামিন শুনানিতে আসামিদের পক্ষে কোনো আইনজীবী অংশ নেননি বলে জানান এপিপি অ্যাডভোকেট খোকন কুমার দত্ত।
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার এমসি কলেজে স্বামীর সাথে বেড়াতে গিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন এক তরুণী। রাত সাড়ে ৮টার দিকে এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে স্বামীকে বেঁধে রেখে ওই তরুণীকে ধর্ষণ করে ছাত্রলীগের কর্মীরা।
এ ঘটনায় তরুণীর স্বামীর দায়ের করা মামলায় আসামিরা হলেন- সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার উমেদনগরের রফিকুল ইসলামের ছেলে তারেকুল ইসলাম তারেক (২৮), হবিগঞ্জ সদরের বাগুনীপাড়ার মো. জাহাঙ্গীর মিয়ার ছেলে শাহ মো. মাহবুবুর রহমান রনি (২৫), জকিগঞ্জের আটগ্রামের কানু লস্করের ছেলে অর্জুন লস্কর (২৫), দিরাই উপজেলার বড়নগদীপুর (জগদল) গ্রামের রবিউল ইসলাম (২৫) ও কানাইঘাটের গাছবাড়ি গ্রামের মাহফুজুর রহমান মাসুমকে (২৫)। এছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও তিনজনকে আসামি করা হয়।
আলোচিত এ মামলায় এখন পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এছাড়া আটক বাকি তিনজন মাহমুদুর রহমান রনি, অজ্ঞাত রাজন ও আইনুলকে র্যাব হেফাজতে রাখা হয়েছে।
এর আগে রবিবার সকালে সাইফুরকে সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক উপজেলা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। অপরদিকে পৃথক এক অভিযানে একইদিন সকালে হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার মনতলা থেকে অর্জুন লস্করকেও গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত সাইফুর রহমান বালাগঞ্জ উপজেলার চান্দাই পাড়া গ্রামের বাসিন্দা তাহমিদ মিয়ার ছেলে আর অর্জুন জকিগঞ্জ উপজেলার আটগ্রাম গ্রামের কানু লস্করের ছেলে।
এছাড়া রবিবার দিবাগত রাতে হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ থেকে শাহ মো. মাহবুবুর রহমান রনিকে গ্রেপ্তার করে র্যাব আর নবীগঞ্জ থেকে রবিউল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃত শাহ মো. মাহবুবুর রহমান রনি হবিগঞ্জ সদর থানার বাগুনীপাড়ার শাহ মো. জাহাঙ্গীর মিয়ার ছেলে আর রবিউল ইসলাম সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই থানাধীন বড়নগদীপুর (জাগদল) গ্রামের বাসিন্দা।
অন্যদিকে, রবিবার দিবাগত রাত ১টার দিকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় রাজন নামে এক ছাত্রলীগ নেতাকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-৯। এ সময় রাজনকে সহযোগিতা করায় আইনুল নামের আরেক ব্যক্তিকেও আটক করা হয়। রাজন তরুণীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ মামলার অজ্ঞাত আসামি ছিল বলে জানা গেছে।
এদিকে, সিলেট মহানগর হাকিম ৩য় আদালতের বিচারক শারমিন খানম নিলার কাছে রবিবার দুপুরে সেই রাতের ঘটনার জবানবন্দি দেন নির্যাতনের শিকার তরুণী। এ সময় তিনি ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দেন। আদালত তরুণীর জবানবন্দি রেকর্ড করে।