যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে করোনাভাইরাসের ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট (ধরণ) শনাক্ত করা হয়েছে।
১৬ জন ভারত ফেরত রোগীর নমুনা পরীক্ষা করে তিনজন রোগীর করোনা পজিটিভ আসে। পজিটিভ তিনজনের মধ্যে দুজনের শরীরে করোনাভাইরাসের ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত করা হয়েছে। গত ৬ মে যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল থেকে তাদের নমুনাসমূহ যবিপ্রবির ল্যাবে পাঠানো হয়।
যবিপ্রবির জিনোম সেন্টারে গতকাল শুক্রবার রাতে সেন্টারের সহযোগী পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. ইকবাল কবীর জাহিদের নেতৃত্বে একদল গবেষক সিকোয়েন্সির মাধ্যমে করোনা ভাইরাসের ভারতীয় এ ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত করেন।
গবেষণাটি সার্বিক তত্ত্বাবধান করেন যবিপ্রবির উপাচার্য ও জিনোম সেন্টারের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন। ইতোমধ্যে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট শনাক্তের বিষয়টি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, আইইডিসিআর ও যশোরের স্থানীয় প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: দেশে করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত: আইইডিসিআর
যবিপ্রবির গবেষক দলটি জানান, ই১.৬১৭.২ নামের ভ্যারিয়েন্ট জিনোম সেন্টারে শনাক্ত করা হয়েছে। এ ভ্যারিয়েন্টটি বর্তমানে ২০ শতাংশ মোট ভারতীয়দের মধ্যে বিদ্যামান। এ ছাড়া ভারতীয় এ ভ্যারিয়েন্টটি ৫৯ শতাংশ যুক্তরাজ্যের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে দেখা গেছে। ভারতীয় এ ভ্যারিয়েন্টটি ২০ শতাংশের বেশি সংক্রমনের সক্ষমতা রাখে। ভ্যাকসিন পরবর্তী ‘সেরাম এবং মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি’ এ ধরণকে কম শনাক্ত ও নিষ্ক্রিয় করতে পারে।
গবেষক দলটি ভারত থেকে আগত সবাইকে পরপর দুবার করোনা নেগেটিভ না হওয়া পর্যন্ত আইসোলেশনে রেখে পরীক্ষা করার আহ্বান জানিয়েছে। একইসাথে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত রোগীরা যে সকল ব্যক্তির সংস্পর্শে এসেছে, তাদের অতিদ্রুত পরীক্ষা করা আবশ্যিক বলে মনে করে গবেষক দলটি।
এ ছাড়া ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হওয়ায় সীমানা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ, বাণিজ্যিক বা অন্য কোনো কারণে চালক ও সহকারীদের কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন ও পরীক্ষা করার প্রয়োজন বলেও জানান গবেষক দলটি।
যবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন জানিয়েছেন, করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হওয়ার ফলে জরুরি সহায়তা দেয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের জিনোম সেন্টার ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকবে।
উল্লেখ্য গত ৪ পর্যন্ত বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে এক হাজার ৫৭৭ জন বাংলাদেশি নাগরিক দেশে ফিরেছে। যাদের বেনাপোল, ঝিকরগাছা, যশোর শহর ছাড়াও পাশের চার জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, ঝিনাইদাহ ও নড়াইল জেলার হোটেল সহ বিভিন্ন সরকারি- বেসরকারি স্থাপনায় কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে।
এদের মধ্যে গত ৬ মে যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল থেকে ১৬ জন ভারত ভেরত যাত্রীর শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্বদ্যিালয়ের জেনোম সেন্টারে পাঠানো হয় পরীক্ষার জন্য। এর মধ্যে ৩ জনের নমুনা পজেটিভ এসেছে। এ তিন জনের মধ্যে দুইজনের শরীরে করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেল।