সোমবার আন্তর্জাতিক নারী দিবসের দিন রাত ১১টার দিকে গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেন রজনী।
কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শওকত কবির রজনীর আত্মহত্যার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পারিবারিকভাবে বলা হচ্ছে, বন্ধুর উপর অভিমান করে রজনী আত্মহননের পথ বেছে নেন। তবে রজনীর আত্মহত্যা নিয়ে ধুম্রজাল তৈরি হয়েছে।
আরও পড়ুন:‘ঋণের বোঝা’ সইতে না পেরে যশোরে গৃহবধূর আত্মহত্যা
রজনী অধিকারী কুষ্টিয়া শহরের থানাপাড়া এলাকার ৯ নম্বর পলানবক্স এলাকার অশোক অধিকারীর মেয়ে। তিনি খাদ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ফুড পান্ডার কুষ্টিয়া জেলার একমাত্র এবং বাংলাদেশের হাতে গোনা সাত-আটজন নারী খাদ্য সরবরাহকারীর মধ্যে একজন ছিলেন।
২০১৮ সালে কুষ্টিয়া হাইস্কুল থেকে এসএসসি পাস করেন রজনী। বর্তমানে কুষ্টিয়া শহরের আইডিয়াল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ডিপ্লোমা ইন কম্পিউটার বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন রজনী।
আরও পড়ুন:কুড়িগ্রামে গৃহবধূর আত্মহত্যা
ছেলেদের মতো ছোট করে ছাঁটা চুল। দুই হাতের আঙুলে নান্দনিক আংটি। পরণে জিন্স আর টি-শার্ট। এক সময় যেসব কাজ শুধু পুরুষের ছিল, সেসব কাজ যে নারীরাও আনন্দ নিয়েই করেছেন, রজনী তারই উদাহরণ।
শৈশব থেকেই অদম্য সাহসী ছিলেন রজনী। রোদ,বৃষ্টি, ঝড় কোনো কিছুই দমিয়ে রাখতে পারেনি রজনীর জীবন। কখনো বাইসাইকেল কখনো বা মোটরবাইক নিয়ে শহর দাপিয়ে বেড়াতেন তিনি।
রজনীর বাবা অশোক অধিকারী জানান, রজনী খুব রাগী এবং অভিমানী ছিল। বন্ধুর উপর অভিমান করে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
ফুড পান্ডার কুষ্টিয়া অফিসের আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক ফজলে রাব্বী জানান, রজনী খুব বিনয়ী ছিলেন। মন দিয়ে কাজ করতেন। খুব পরিশ্রমী ছিলেন। অল্প দিনেই তিনি গ্রাহকদের মন জয় করতে সক্ষম হয়েছিলেন।
আরও পড়ুন:যশোরে স্বামীর পরকীয়ার অভিমানে গৃহবধূর আত্মহত্যা
নাম প্রকাশ না করার শর্তে রজনীর বান্ধবীরা জানান, রজনী খুব জেদি প্রকৃতির মেয়ে ছিল। যখন-তখন মান অভিমান করে হাত কাটত, না খেয়ে থাকত। বান্ধবীদের দাবি রাজবাড়ী জেলায় তার এক বন্ধুর উপর অভিমান করে সে আত্মহত্যা করেছে।
কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শওকত কবির জানান, মঙ্গলবার সকালে রজনীর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন আসার পর মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।