খুলনা মেডিকেল কলেজের আরটি পিসিআর মেশিনে সোমবার ৩৭৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করে একদিনে সর্বোচ্চ ১৩১ জনের শরীরে নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়। যা মোট নমুনা পরীক্ষার ৩৪ দশমিক ৮৪ শতাংশ।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও পাঁচ জন মারা গেছেন। খুলনার করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়।
খুলনা করোনা হাসপাতালের ফোকাল পার্সন ও খুমেক হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. সুহাস রঞ্জন হালদার জানান, মঙ্গলবার (৮ জুন) সকালে করোনা হাসপাতালে ১২৯ জন রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এদের মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ভর্তি হয়েছেন ৪৭ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৩৩ জন। আর মারা গেছেন পাঁচ জন।
খুমেক পিসিআর ল্যাবের তথ্য গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৭৬ জনের করোনা পরীক্ষা করা হয়। যার মধ্যে ৩১৫ জন খুলনা মহানগরী ও জেলার। এরমধ্যে ১৩১ জনের করোনা পজিটিভ এসেছে। যার মধ্যে খুলনা মহানগরী ও জেলার ১১৫ জন, বাগেরহাটের আট, যশোরের তিন, সাতক্ষীরার তিন, নড়াইলের এক ও মাগুরা জেলার দুই জন রয়েছেন।
খুলনা করোনা হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, সোমবার রাত সাড়ে ১১টায় করোনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক নারী মৃত্যুবরণ করেন। তিনি খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার বাসিন্দা। রাত ৮টার দিকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মোংলার এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়। সকাল সাড়ে ৬টায় খুলনা সদর থানার শেরে বাংলা রোডের এক তরুণী মৃত্যুবরণ করেন।
খুমেক পিসিআর ল্যাবের তথ্য গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৭৬ জনের করোনা পরীক্ষা করা হয়। যার মধ্যে ৩১৫ জন খুলনা মহানগরী ও জেলার। এর মধ্যে ১৩১ জনের করোনা পজিটিভ এসেছে। যার মধ্যে খুলনা মহানগরী ও জেলার ১১৫ জন, বাগেরহাটের আট, যশোরের তিন, সাতক্ষীরার তিন, নড়াইলের এক ও মাগুরা জেলার দুই জন রয়েছেন।
খুমেক হাসপাতালের করোনা প্রতিরোধ ও চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা কমিটির সার্বিক সমন্বয়কারী ডা. মো. মেহেদী নেওয়াজ বলেন, গত ২ জুনের জেলা কমিটির মিটিংয়ে জনবল ও বেড বৃদ্ধির জন্য প্রস্তাব করা হয়েছিল। ওই মিটিংয়ে সিভিল সার্জন বলেছিলেন তার আওতায় থাকা ৪০ জন নার্সকে করোনা হাসপাতালে পদায়ন করা হবে। আবার বিভাগের ১০ জেলার মধ্যে খুলনা বাদে অন্য নয়টি জেলা থেকে দু’জন বা একজন করে ডাক্তার করোনা হাসপাতালের জন্য বদলী করে আনার জন্য বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের প্রতিনিধির ওপর দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল। সিভিল সার্জনের মাধ্যমে জেলার নয়টি উপজেলা থেকে অন্যান্য জনবল আনার জন্য বলা হয়েছিল। কিন্তু তার কিছুই এখন পর্যন্ত হয়নি। যে কারণে পুরো চাপ সামলাতে হচ্ছে খুমেক হাসপাতালের ডাক্তার, নার্স ও অন্যান্যদের। ওই মিটিংয়ে করোনা হাসপাতালের দ্বিতীয় ইউনিট খোলার জন্য অবশ্যই জনবল পদায়ন দরকার বলেও মতামত দেয়া হয়। কিন্তু তার কিছুই করা হয়নি।
আরও পড়ুন: খুলনার করোনা হাসপাতালে ধারণ ক্ষমতার বেশি রোগী ভর্তি
খুলনা মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবের গত এক সপ্তাহের হিসাবে দেখা যায়, ১ জুন করোনা শনাক্ত হয় ২৫ দশমিক ৮৮ শতাংশ, ২ জুন ২৪ দশমিক ৪৬ শতাংশ, ৩ জুন ২৯দশমিক ৭৩ শতাংশ, ৪ জুন ২৯ দশমিক ২৫ শতাংশ, ৫ জুন ২০ দশমিক ৯২ শতাংশ, ৬ জুন ২৬দশমিক ৫৯ শতাংশ এবং গতকাল শনাক্ত হয় ৩৪ দশমিক ৮৪ শতাংশ।
খুলনার পাশাপাশি বিভাগের করোনার চিত্রও একই। প্রতিদিনই বাড়ছে করোনার রোগী, বাড়ছে মৃত্যুও।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. রাশেদা সুলতানা বলেন, বিগত সাত দিনে খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে ২৯জনের মৃত্যু হয়। সেই সাথে গত সাত দিনে শনাক্ত হয়েছে দু’হাজার ১২০জনের। দিনদিন যে হারে করোনা রোগী বাড়ছে ও মৃত্যু হচ্ছে সেটি উদ্বেগের বলেও তিনি মনে করেন। এ অবস্থায় সকলকেই তিনি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানান।