গত ২৪ ঘণ্টায় খুলনা বিভাগে করোনায় ৬ জন এবং উপসর্গে এক জনের মৃত্যু হয়েছে। যার মধ্যে খুলনা করোনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া হাসপাতালের আইসিইউতে ১৩ জন এবং এইচডিইউতে ১২ জন রোগী চিকিৎসাধীন আছেন। এ অবস্থায় স্বল্প জনবল নিয়ে রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে হাসপাতালের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের।
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. সুহাস রঞ্জন হালদার জানান, খুলনা করোনা হাসপাতালে বর্তমানে ১২৫ জন রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এর মধ্যে রেডজোনে ৯৫ জন রোগী এবং ইয়েলো জোনে ৩০ জন রোগী ভর্তি রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় রোগী ভর্তি হয়েছেন ৪৭ জন। আর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৪৪ জন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় করোনা আক্রান্ত হয়ে ৫ জন এবং ১ জন উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন।
আরও পড়ুন: চাঁপাইনবাবগঞ্জে লকডাউনের ১২তম দিনে মৃত্যু ৯, শনাক্ত ১০৭
খুলনা করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালের মুখপাত্র ডা. মেহেদী নেওয়াজ বলেন, খুলনায় করোনা হাসপাতাল হওয়ার পর এক সাথে ১২৫ জন রোগী এই প্রথম ভর্তি হয়েছে। এর আগে ১০০ রোগীর কাছাকাছি ভর্তি হয়েছে। তবে এবার যে পরিমাণ রোগী ভর্তি হচ্ছে তা আগে কখনও হয়নি। এতো রোগীর চাপ সামলাতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।
এদিকে খুলনা বিভাগে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সঙ্গে নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে ২৪২ জন। এ সময় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১০১ জন। রবিবার দুপুরে খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. রাশেদা সুলতানা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন: করোনার সংক্রমণ রোধে সাতক্ষীরায় সপ্তাহব্যাপী লকডাউন শুরু
খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের দপ্তর সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন খুলনার ৩ জন, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট ও যশোরের এক জন করে মারা গেছেন। এছাড়া উপসর্গে খুমেক হাসপাতালে এক জনের মৃত্যু হয়েছে।
খুলনা করোনা হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, রবিবার সকাল পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
করোনায় মৃতরা হলেন, আমিনুর রহমান মোল্লা (৮০), নুরুল ইসলাম (৭৫), মিজানুর আকন, রেহেনা বেগম (৬১) ও ওসমান সরদার (৭৪)। এছাড়া ১ জন করোনা উপসর্গ নিয়ে ইয়েলো জোনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক জনের মৃত্যু হয়।
খুলনা বিভাগের মধ্যে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় চুয়াডাঙ্গায় গত বছরের ১৯ মার্চ। করোনা সংক্রমণের শুরু থেকে রবিবার সকাল পর্যন্ত বিভাগের ১০ জেলায় শনাক্ত হয়েছে ৩৫ হাজার ৯৮৪ জন। করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৭২ জনে। আর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৩১ হাজার ৮৫৪ জন।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জেলাভিত্তিক করোনা সংক্রান্ত তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, বিভাগে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যার দিক থেকে খুলনা জেলা শীর্ষে রয়েছে। এ পর্যন্ত খুলনায় শনাক্ত হয়েছে ১০ হাজার ৬৬৯ জন। আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১৮২ জন। সুস্থ হয়েছেন ৯ হাজার ৩৫১ জন।
আরও পড়ুন: শনিবার থেকে নোয়াখালী সদরে কঠোর লকডাউন
এ ছাড়া বাগেরহাটে করোনায় শনাক্ত হয়েছে ১ হাজার ৭৭৫ জন। আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৪৭ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৪৩২ জন। সাতক্ষীরায় শনাক্ত হয়েছে ১ হাজার ৮৪৮ জন এবং মারা গেছেন ৪৮ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১ হাজার ৪৫১ জন।
যশোরে করোনায় শনাক্ত হয়েছে ৭ হাজার ২৭০ জন, মারা গেছেন ৮২ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ৬ হাজার ৪৩৩ জন। নড়াইলে শনাক্ত হয়েছে ১ হাজার ৯০৪ জন, মারা গেছেন ২৭ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৮৩৯ জন। মাগুরায় করোনায় শনাক্ত হয়েছে ১ হাজার ২৭৩ জন, মারা গেছেন ২৩ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ২১৪ জন।
ঝিনাইদহে শনাক্ত হয়েছে ২ হাজার ৯৭১ জন, মারা গেছেন ৫৭ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৭৪৪ জন। কুষ্টিয়ায় করোনায় শনাক্ত হয়েছে