রবিবার রাতে ওই দুইজনকে বাড়ি থেকে তুলে নেয়া হয়।
শ্রমিক নেতারা হলেন- সদ্য বন্ধ ঘোষিত স্টার জুট মিলের শ্রমিক ও পাটশিল্প রক্ষা যুব জোটের আহ্বায়ক অলিয়ার রহমান এবং প্লাটিনাম জুবিলি জুটমিলের শ্রমিক ও পাটশিল্প রক্ষা যুব জোটের উপদেষ্টা নূর ইসলাম।
তবে পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করেনি বলে জানিয়েছে।
অলিয়ার রহমানের ছেলে নাইম শেখ বলেন, ‘রবিবার রাত আড়াইটার দিকে নগরীর খানজাহান আলী থানার মশিয়ালী গ্রামের বাড়িতে কয়েকজন লোক এসে প্রশাসনের লোক পরিচয় দিয়ে ঘরের দরজা খুলতে বলে। তাদের হাতে ওয়ারলেস ও রাইফেল ছিল। দরজা খুললে তারা বলে আব্বাকে নিয়ে মিলে (পাটকল) যাবে। আমরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই বাবাকে গাড়িতে করে নিয়ে চলে যায়।’
তিনি বলেন, ‘আমরা থানায় গেলে ওসি (খানজাহান আলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) বলেন, রাতে আমাদের কোনো অভিযান হয়নি। আমরা কিছুই জানি না।’
এদিকে, নূর ইসলামের ছেলে মো. জুয়েল বলেন, ‘রাত সাড়ে ৩টার দিকে কিছু লোক আসে খালিশপুরের বাসায়। এ সময় তারা বলতে থাকে, এই দরজা খুলুন আগুন লেগেছে। তখন আমরা তাদের বলি আপনারা কারা, তারা বলে, আমরা ফায়ার সার্ভিসের লোক। তারপর চোখের পলকে বাবাকে নিয়ে চলে যায়। আমরা অনেকভাবে তাদের পরিচয় জানা চেষ্টা করি কিন্তু তারা কোনো পরিচয় দেয়নি।
বাংলাদেশ রাষ্ট্রায়ত্ত্ব পাটকল সিবিএ-ননসিবিএ সংগ্রাম পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মুরাদ হোসেন বলেন, ‘আমি ফেসবুকে দেখেছি, তারা কাল (রবিবার) খালিশপুরে গোপনে মিটিং করেছে মিলের বদলি শ্রমিক ও বাম দলের নেতাদের সাথে। মিল বন্ধ নিয়ে যখন সারা দেশের শ্রমিকরা শান্ত, তখন তাদের এ মিটিং করার কী দরকার?’
তবে কারা ধরে নিয়ে গেছে, কী কারণে ধরে নিয়ে গেছে, তা তিনি জানেন না বলে জানিয়েছেন।
গণসংহতি আন্দোলন খুলনা জেলা শাখার আহ্বায়ক মুনীর চৌধুরী সোহেল বলেন, ‘সরকার পাটকল বন্ধের যে চক্রান্ত করছে, তার বিরুদ্ধে শ্রমিকদের মধ্যে থেকে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন সংগঠিত করার চেষ্টা চলছে। এ আন্দোলন যাতে সংগঠিত না হতে পারে, তার জন্য রাজনৈতিক চক্রান্তের অংশ হিসেবে প্রশাসন দিয়ে তাদের ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।’
অবিলম্বে তাদের মুক্তির দাবি জানান তিনি।
এ ব্যাপারে খালিশপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাব্বিরুল আলম বলেন, ‘আমরা কোনো শ্রমিক নেতাকে আটক করিনি। আমাদের কাছে এ বিষয়ে কোনো তথ্য নেই। আমরা এ বিষয়ে কিছু জানি না। এখন দেখছি খোঁজ নিয়ে।’
খানজাহান আলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুল ইসলামও একই কথা বলেন।