বিধি নিষেধ উপেক্ষা করেই শুক্রবার ভোর থেকে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাটে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল থেকে আসা বিভিন্ন ধরনের যানবাহনের পাশাপাশি মানুষের ভিড় দেখা গেছে । তবে বেলা বাড়ার সাথে সাথে পরিবহন বা মানুষের চাপ কমতে থাকায় বেলা ১১টার পর দৌলতদিয়া ঘাট অনেকটা ফাঁকা হয়ে যায়। এখন শুধুমাত্র জরুরি গাড়ি, এ্যাম্বুলেন্স এবং পণ্যবাহী গাড়ি পারাপার হচ্ছে।
এছাড়া সকাল ৬টার পর থেকে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া রুটে সকল লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে।
আরও পড়ুনঃ পদ্মা সেতুর পিলারে ফেরির ধাক্কা, আহত ২০
শুক্রবার ভোর থেকে দৌলতদিয়া ঘাটে অবস্থান করে দেখা যায়, বৃহস্পতিবার নদী পাড়ি দিতে আসা ঢাকামুখী বিভিন্ন ধরনের যানবাহনের লম্বা লাইন পড়ে। ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের দৌলতদিয়া ফেরি ঘাট থেকে যানবাহনের লাইন গোয়ালন্দ বাজার বাসস্ট্যান্ড ছাড়িয়ে ৭ কিলোমিটার লম্বা হয়। ছোট-বড় ১৬টি ফেরি নিয়মিত চলায় রাতভর পারাপারে গাড়ির চাপ কমতে থাকে। ঘাটে আসা দূরপাল্লার নৈশ কোচ শুক্রবার সকাল ১০টা পর্যন্ত পাড়ি দেয়। ব্যক্তিগত গাড়ি প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস সাথে অসংখ্য মানুষও আজ সকালেও পারাপার হয়। বেলা ১১টার পর যানবাহনের চাপ কমে ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক ফাঁকা হতে থাকে। লঞ্চ ঘাট মোড়ে ফেরিতে ওঠার অপেক্ষায় হাতে গোনা কয়েকটি পণ্যবাহী গাড়ি দেখা যায়।
লঞ্চ ঘাট মোড় এলাকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী কামাল হোসেন বলেন, শুক্রবার ভোর থেকে বেলা ১০টা পর্যন্ত মহাসড়কে ফেরি ঘাট এলাকায় প্রায় দুই কিলোমিটার লম্বা লাইনে যাত্রীবাহী পরিবহন, পণ্যবাহীসহ বিভিন্ন ধরনের গাড়ি ফেরিতে ওঠার অপেক্ষায় থাকে। বিকল্প সড়কের ৫ নম্বর ঘাট সংযোগ সড়কে বেশ কিছু ব্যক্তিগত গাড়ি ফেরিতে ওঠার অপেক্ষায় লম্বা লাইন দেয়। বেলা ১০টার পর থেকে মহাসড়ক ফাঁকা হতে থাকে। ফেরি ঘাটেও মানুষজনের ভিড় কমতে থাকে। বেলা ১১টার দিকে ঘাট এলাকায় তেমন যানবাহন বা মানুষজনের চাপ নেই বললেই চলে। দুপুরের দিকে হয়তো আরো ফাঁকা হয়ে যাবে।
আরও পড়ুনঃ পদ্মা সেতুর পিলারে ধাক্কা: ফেরির মাস্টার সাময়িক বরখাস্ত
এদিকে ঘাটসহ উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে উপজেলা প্রশাসন ও গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশের অবস্থান নিতে দেখা গেছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আজিজুল হক খান, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. রফিকুল ইসলাম এবং গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল তায়াবীর নেতৃত্বে বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ অবস্থান নেন।
গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল তায়াবীর বলেন, ‘সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী উপজেলা প্রশাসনের পাশাপাশি পুলিশ বিশেষ দায়িত্ব পালন করছে। করোনার সংক্রমণ রোধে কঠোর বিধি নিষেধ যথাযথভাবে পালনের চেষ্টা করা হচ্ছে। খুবই জরুরী কাজে বাইরে আসা ব্যক্তিদের বাদে বাকি সবাইকে বুঝিয়ে শুনিয়ে ফেরত পাঠানোর চেষ্টা করছি। ‘
আরও পড়ুনঃ শনিবার থেকে দিনে ফেরি চলাচল বন্ধ ঘোষণা
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক শিহাব উদ্দিন বলেন, সকাল ৯টা পর্যন্ত সার্বক্ষণিক ১৪টি ফেরি দৌলতদিয়া এবং পাটুরিয়া ঘাটে আটকে থাকা গাড়ি পারাপার করে। এখন উভয় ঘাটে গাড়ির চাপ না থাকায় কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে পাটুরিয়ায় ছয়টি রো রো ও তিনটি ইউটিলিটি এবং দৌলতদিয়ায় তিনটি রো রো ও তিনটি ইউটিলিটি ফেরি রাখা হয়েছে। একটি মাত্র কেটাইপ ফেরি ভিআইপি পারাপারের ক্ষেত্রে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আইন শৃঙ্খলাবাহিনী এবং প্রশাসনের চেক পোস্ট অতিক্রম করে আসা গাড়ি ফেরিতে পারাপার হবে। এছাড়া যাত্রী পারাপারে নিষেধ রয়েছে বলেও তিনি জানান।