চট্টগ্রামে বর্ষা মৌসমে পাহাড় ধসের আশংকায় পাহাড়ে অবৈধ ও ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারীদের উচ্ছেদ অভিযান চালাচ্ছে জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর।
সোমবার সকাল ১১টা থেকে নগরীর ফৌজদারহাট-বায়েজিদ লিংক রোডের বায়েজিদ অংশ থেকে এ অভিযান শুরু হয়েছে। ছয় জন ম্যাজিস্ট্রেট তিনটি দলে ভাগ হয়ে এই অভিযান পরিচালনা করছেন।
প্রথম দিনের অভিযানে বায়েজিদ লিংক রোডে অবৈধভাবে তৈরি করা ঝুঁকিপূর্ণ স্থাপনাগুলো উচ্ছেদ করা হচ্ছে।
আরও পড়ুনঃ কক্সবাজারে পাহাড় ধসে ২ রোহিঙ্গা নিহত
এর আগেও কয়েক দফা পাহাড়গুলোতে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হলেও সেখানে আবারও বসতি গড়ে তোলা হয়েছে।
চট্টগ্রামের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মামনুন আহমেদ অনীক বলেন, বায়েজিদ লিংক রোডের দুই পাশে অবৈধ যেসব স্থাপনা আছে সব উচ্ছেদ করা হচ্ছে। লিংক রোডের কাট্টলী, হাটহাজারী ও সীতাকুণ্ড অংশে ছয় জন ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে একযোগে উচ্ছেদ অভিযান চলছে।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের তথ্যানুযায়ী জেলায় সরকারি ও ব্যক্তি মালিকানাধীন ১৭টি অতি ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ে ৮৩৫টি পরিবার বসবাস করছে। বেশি ঝুঁকিপূর্ণভাবে ব্যক্তি মালিকানাধীন ১০টি পাহাড়ে অবৈধভাবে বসবাসকারী পরিবারের সংখ্যা ৫৩১। সরকারি বিভিন্ন সংস্থার মালিকানাধীন সাতটি পাহাড়ে অবৈধ বসবাসকারী পরিবারের সংখ্যা ৩০৪। এগুলোর বাইরেও সিডিএর বায়েজিদ-ফৌজদারহাট লিংক রোড নির্মাণের সময় নতুন করে ১৬টি পাহাড় কাটা হয়। সেখানকার ৮ পাহাড়ে নতুন করে অবৈধ বসতি গড়ে উঠেছে।
আরও পড়ুনঃ চট্টগ্রামে পাহাড় কাটার অভিযোগে তমা গ্রুপকে ৫০ কোটি টাকা জরিমানা
পরিবেশবিদরা বলছেন, চট্টগ্রামের বিভিন্ন পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারীর সংখ্যা প্রায় এক লাখ। ২০০৭ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত চট্টগ্রামে পাহাড় ধসে দুই শতাধিক মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। এর মধ্যে পাহাড় ধসে সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা যায় ২০০৭ সালে। ওই বছরের ১১ জুন টানা বর্ষণের ফলে চট্টগ্রামে পাহাড় ধসে ১২৭ জনের মৃত্যু হয়। আর ২০১৭ সালে মারা যান ৩০ জন।
অভিযানে বিপুল সংখ্যক পুলিশ, র্যাব ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা অংশ নিয়েছেন। এছাড়া পরিবেশ, বিদ্যুৎ বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রতিনিধিরা উপস্থিত আছেন।