চট্টগ্রামে শিশু আলীনা ইসলাম আয়াতকে ছয় টুকরো করে হত্যার ঘটনায় একমাত্র আসামি আবীর আলীকে সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
সোমবার দুপুরে তাকে আদালতে হাজির করে দুই দিনের রিমান্ড শেষে দ্বিতীয় দফায় ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
শুনানীকালে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আবদুল হালিমের আদালত সাতদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জে শিশু হত্যার দায়ে ৫ জনের যাবজ্জীবন
বাদির আইনজীবী অ্যাডভোকেট সেলিম উল্লাহ চৌধুরী বলেন, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা অভিযুক্ত আবীর আলীর ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। আদালত শুনানি শেষে সাতদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে গত ২৬ নভেম্বর বিকালে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাদ্দাম হোসেনের আদালতে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। আদালত শুনানি শেষে দু’দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছিলেন।
এদিকে, সকালে ঘাতক আবীর আলীকে কড়া নিরাপত্তায় আদালত প্রঙ্গণে হাজির করা হয়। তার আগেই সকাল থেকে হাজার হাজার মানুষ আদালত এলাকায় ভিড় করে। দুপুরে প্রিজন ভ্যান থেকে আসামি আবীর আলীকে নামানোর সময় মানুষ তার ফাঁসি দাবি করে শ্লোগান দেয়। এক পর্যায়ে বিক্ষুব্ধ জনতা পুলিশের কাছ থেকে আসামিকে ছিনিয়ে নিয়ে গণপিটুনী দেয়ার চেষ্টা করে। এসময় আসামিকে প্রিজন ভ্যান থেকে নামিয়ে আদালতে নিতে পুলিশকে হিমশিম খেতে হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর পরিদর্শক মনোজ কুমার দে জানান, আলীনা ইসলাম আয়াতকে অপহরণের পর লাশ কেটে ছয় টুকরা করে সাগরে ভাসিয়ে দেয় আসামি আবীর। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে আবীর একই দাবি করেছে। ঘটনাস্থল চিনিয়ে দিতে রাজি হলে আবীরকে নিয়ে ঘটনাস্থলে যাওয়া হয়। তার দেখানোমতে আবার তল্লাশি করা হয়। তবে কোনো দেহাবশেষ উদ্ধার করা যায়নি। পরে আবীরের মায়ের বাসায় তল্লাশি করে একটি ডায়েরি পেয়েছি।
রবিবার (২৭ নভেম্বর) দুপুরে আবীর আলীকে সঙ্গে নিয়ে পিবিআই সদস্যরা বে-টার্মিনাল এলাকায় সাগরতীরে প্রায় তিন ঘণ্টা তল্লাশি চালায়। কিন্তু আয়াতের দেহের খণ্ডিত কোন অংশ পাওয়া যায়নি।
এর আগে গত ২৫ নভেম্বর আসামি আবীরকে নিয়ে নগরের বিভিন্ন আকমল আলী সড়কের স্লুইস গেট সংলগ্ন নালাসহ বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি চালায় পুলিশ।
প্রসঙ্গত, গত ১৫ নভেম্বর নগরীর ইপিজেড থানার বন্দরটিলার এলাকার নয়ারহাট বিদ্যুৎ অফিস এলাকার বাসা থেকে পার্শ্ববর্তী মসজিদে আরবি পড়তে যাওয়ার সময় নিখোঁজ হয় আলিনা ইসলাম আয়াত (৫)। এর পরদিন শিশুর বাবা সোহেল রানা এ ঘটনায় ইপিজেড থানায় নিখোঁজের ডায়েরি করে। নিখোঁজের ১০ দিনের মাথায় ২৪ নভেম্বর রাতে শিশু আয়াতকে খুনের মামলায় আবীরের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পায় পুলিশ। রাতেই তাকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই। পরে আকমল আলী সড়কে তার মায়ের বাসার সামনে একটি ঝোপ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত বঁটি উদ্ধার করা হয়।
এছাড়া, আয়াতের বাসার পাশে কবরস্থানে আয়াতের পায়ের স্যান্ডেলও উদ্ধার করা হয়।
আরও পড়ুন: জয়পুরহাটে বিরোধের জেরে শিশু হত্যা: ৪ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
গাইবান্ধায় শিশু হত্যা: এক আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল, ২ জন খালাস