সিলেটের প্রায় ১০টি হাসপাতালে ঘুরে কোনো শয্যা না পেয়ে শেষে বিয়ানীবাজার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের করোনা আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছিলেন মৌলভীবাজারের বড়লেখার লালচান বিবি (৭২)। শ্বাসকষ্ট ও জ্বরসহ কোভিডের উপসর্গ ছিল তার শরীরে। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। ভর্তির তিন ঘণ্টা পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান চান বিবি।
জানা গেছে, বিয়ানীবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের করোনা রোগীদের জন্য স্থাপিত আইসোলেশন ওয়ার্ডের ১০টি শয্যা গত সপ্তাহ পর্যন্ত খালি পড়ে ছিল। কিন্তু গত কয়েকদিনে হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডের সেই শয্যাগুলো প্রায় পূর্ণ হয়েছে। দশ শয্যার সব কয়টিতে চিকিৎসা নিচ্ছেন করোনায় আক্রান্ত রোগী। এসব রোগীদের একজন হচ্ছেন লাল চান বিবি।
লাল চান বিবিসহ হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডের ভর্তি হওয়া করোনা রোগীদের দেয়া হচ্ছিল প্রয়োজনীয় সেবা। কিন্তু ভর্তির তিন ঘণ্টা পর শনিবার বিকাল ৪টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. ইসহাক আজাদ বলেন, ওই বৃদ্ধাসহ ১০ জন করোনা রোগী হাসপাতালের নির্ধারিত আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন ছিলেন। লাল চান বিবির শ্বাসকষ্টের সমস্যা প্রকট। তাছাড়া শারীরিক অবস্থাও খুব একটা ভালো ছিল না। তাকে আমরা প্রয়োজনীয় অক্সিজেন সাপোর্ট দিয়ে রেখেছিলাম, কিন্তু তিনি ভর্তির তিন ঘণ্টা পর মারা যান।
পড়ুন: দু’একদিনের মধ্যেই অ্যাস্ট্রাজেনেকার দ্বিতীয় ডোজ দেয়া শুরু
তিনি বলেন, বৃদ্ধার স্বজনরা জানিয়েছেন সিলেটের দশটি হাসপাতালে তাকে নিয়ে ছুটে বেড়িয়েছেন। কিন্তু কোথাও শয্যা না পেয়ে বিয়ানীবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন তারা। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তাকে হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে অক্সিজেন সাপোর্ট দেয়া হচ্ছিল।
বিয়ানীবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোয়াজ্জেম আলী খান চৌধুরী বলেন, আমাদের আইসোলেশন ওয়ার্ডে দশটি শয্যা রয়েছে। এরই মধ্যে সবগুলো শয্যায় ভর্তিরত রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে। যদিও আমাদের হাসপাতাল করোনা ডিডেক্টেড নয়, তবুও বৃদ্ধা লাল চান বিবির শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় মানবিক দৃষ্টিকোন থেকে আমরা ভর্তি করে চিকিৎসা দিচ্ছিলাম। কিন্তু তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওইদিন বিকালেই মারা গেছেন। এর আগে আমরা তার করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করে পিসিআর ল্যাবে প্রেরণ করেছি।
পড়ুন: সিলেটে করোনায় আরও ৯ মৃত্যু, শনাক্ত ৩৪০
সিলেট বিমানবন্দরে প্রবাসী নারীকে হয়রানির অভিযোগ
তিনি বলেন, সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্যস্থ বিয়ানীবাজারবাসীর একটি সামাজিক সংগঠন থেকে তিনটি কনসেনট্রেটর পাওয়ায় করোনা রোগীদের সেবা প্রদানে সহযোগিতা হচ্ছে।
আনুসাঙ্গিক চিকিৎসা সরঞ্জাম আরও যুক্ত হলে করোনার আইসোলেশন ওয়ার্ডে শয্যার সংখ্যা আরও বাড়ানোর কথা জানান তিনি।