বরিশাল সদর সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে মঙ্গলবার পাবনা জেলার জাবরকোলের সিরাজুল ইসলাম ও জুয়েনা নীতি নামে দুই পরীক্ষার্থী যৌথভাবে মামলাটি দায়ের করেন।
আদালতের বিচারক রুবাইয়া আমেনা মামলাটির আদেশ অপেক্ষমান রেখেছেন।
মামলার অন্য বিবাদীরা হলেন- হাসপাতালের উপপরিচালক ও কর্মচারী নিয়োগ কমিটির সদস্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব, বরিশাল জেলা প্রশাসক, বরিশাল বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য), বিভাগীয় হিসাব নিয়ন্ত্রক এবং মেহেন্দিগঞ্জের উলানিয়ার আশা এলাকার আবুল কালাম, পটুয়াখালীর বাউফলের বিলবিলাস এলাকার আশ্রাফুজ্জামান ও ঝালকাঠীর কাঠালিয়ার জোরখালী এলাকার মিজানুর রহমান।
আরও পড়ুন: বরিশালের শেবাচিমে দ্বিতীয় দিনে মতো ধর্মঘটে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা
মামলা পরিচালনাকারী আইনজীবী আজাদ রহমান জানান, ২০২০ সালের ২৩ ডিসেম্বর বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ১২টি ক্যাটাগরিতে ৩২ জন তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রচার করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বরিশাল, ঝালকাঠী, পিরোজপুর, পটুয়াখালী, বরগুনা, মাদারীপুর ও বাগেরহাট জেলার প্রার্থীদের আবেদন না করার জন্য বলা হয়। এ পরিপ্রেক্ষিতে সিরাজুল ইসলাম ও জুয়েনা নীতি সব কাগজপত্র সংযুক্ত করে ফার্মাসিস্ট পদে আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নিয়োগ কমিটির সদস্য সচিব হাসপাতালের উপপরিচালক তাদের প্রবেশপত্র ইস্যু করেন।
কিন্তু ৫ ফেব্রুয়ারি নিয়োগ পরীক্ষার দিন কমিটির সদস্যরা তাদের পছন্দের প্রার্থীদের নিয়োগ পাইয়ে দিতে বাইরে থেকে নকল সরবরাহ করেন। বরিশাল বিভাগের ভোলা জেলা বাদে বাকি পাঁচ জেলার কোটা বাদ দিয়ে হাসপাতালে ১২টি ক্যাটাগরিতে ৩২ জনকে নিয়োগের কথা থাকলেও বরিশালের বাসিন্দা ও হাসপাতালে কর্মরত কর্মচারীরা জাল জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে তাদের স্বজনদের জন্য আবেদন করেন।
আরও পড়ুন: কর্মবিরতিতে শেবাচিম হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা
মামলায় বলা হয়, মেহেন্দিগঞ্জের উলানিয়ার আশা এলাকার আবুল কালাম বর্তমানে নগরীর রুপাতলী এলাকায় বসবাস করেন। তিনি সাবেক ও বর্তমান পরিচালকের ঘনিষ্ঠজন হওয়ায় দুই বছর পূর্বে তার চাকরির বয়স সীমা পেরিয়ে গেলেও গাজীপুর জেলার ঠিকানা ব্যবহার করে ড্রাইভার পদে আবেদন করেন। একইভাবে হাসপাতালের অফিস সহকারী সৈয়দ নান্না এবং চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী সমিতির সভাপতি মোদাচ্ছের কবিরের মেয়েকে চাকরি পাইয়ে দিতে একই জাল জালিয়াতির মাধ্যমে আবেদন করা হয়। আবুল কালাম শর্তানুসারে নিয়োগ পেতে অযোগ্য হলেও পরিচালকসহ অন্যদের সহায়তায় তিনি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। এছাড়া, পটুয়াখালীর আশ্রাফুজ্জামান ও ঝালকাঠীর মিজানুর রহমান শর্তানুসারে অযোগ্য হলেও তারা ফার্মাসিস্ট পদের লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন।
পরিচালক ৬ ফেব্রুয়ারি ২৪ ঘণ্টায় ৪৪৪ প্রার্থীর পরীক্ষার ফলাফল বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে প্রকাশ করেন। তার চাকরির মেয়াদ আগামী মার্চ মাসে শেষ হবে। তাই তিনি তড়িঘড়ি করে বেআইনিভাবে পছন্দের ব্যক্তিদের নিয়োগ দেয়ার পায়তারায় লিপ্ত হন।
এ ঘটনায় নিয়োগের সব কার্যক্রম বাতিল চেয়ে পুনরায় সঠিকভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য মামলাটি দায়ের করা হয়।
এই অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে তা নাকচ করে দিয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া সুষ্ঠভাবে হওয়ার কথা জানান শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক ডা. বাকির হোসেন।