দুর্ঘটনা এড়াতে শনিবার দুপুর থেকে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে যানবাহন পারাপার বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
এর আগে শুক্রবার দুপুর থেকে লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। একটি ছোট ঘাট দিয়ে ছোট ফেরিতে যাত্রী পারাপার করায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা।
শনিবার সরেজমিনে দেখা যায়, ১ নম্বর ফেরি ঘাট ভেঙে যাওয়ায় সংযোগ সড়ক বাঁচাতে রাজবাড়ী পাউবো বালুভর্তি বস্তা ফেলা হচ্ছে। ফেরিঘাট সংলগ্ন মজিদ শেখের পাড়ার বাসিন্দারা দ্রুত ঘর-বাড়ি সরিয়ে নিচ্ছে। অনেকে আবার সরিয়ে নেয়ার সময়টুকো পাচ্ছে না। ১ নম্বর ঘাট পেরিয়ে ২ নম্বর ঘাটের আগে সিদ্দিক কাজী পাড়ার একই অবস্থা।
গ্রাম সংলগ্ন ২ নম্বর ফেরি ঘাট শুক্রবার রাতে ভেঙে গেছে। স্রোত ও ভাঙন বেড়ে যাওয়ায় ৩, ৪ ও ৫ নম্বর ঘাটের পন্টুন ধরে রাখার চেষ্টা চলছে। ৬ নম্বর ইউটিলিটি বা ছোট ফেরি ঘাটে তুলনামূলক শক্তিশালি ইঞ্জিন সম্পন্ন চারটি ইউটিলিটি ফেরি ভিড়ছে। এসব ফেরিতে শুধু যাত্রী পারাপার করা হচ্ছে। বেলা সাড়ে ১১টা থেকে গাড়ি পারাপার বন্ধ ও একটি ঘাট কোনো রকম চালু রাখা হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগম ঘাট পরিদর্শন শেষে দুর্ঘটনা এড়াতে এই নৌপথে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন। গাড়ি পারাপার বন্ধ থাকায় যাত্রীবাহী বাস ও অন্যান্য গাড়ির দীর্ঘ লাইন দেখা যায়।
এ দিকে শনিবার সার্বিক পরিস্থিতি দেখতে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চেয়ারম্যান কমডোর মাহবুবুল আলম দৌলতদিয়া ঘাট এলাকা পরিদর্শন করেন।
রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপ-সহকারী প্রকৌশলী আরিফ সরকার বলেন, ভাঙন এতই ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে যে মনে হয় না ঘাট রক্ষা করা যাবে। ভাঙন অব্যাহত থাকলে আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যে ফেরি ঘাট বিলীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আমরা রাত-দিন চেষ্টা করে যাচ্ছি। সর্বশেষ পর্যন্ত কাজ চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবো। শনিবার পর্যন্ত ১৪ হাজার বস্তা ফেলা হয়েছে বলে জানান তিনি।
বিআইডব্লিউটিসি আরিচা কার্যালয়ের এজিএম আব্দুস সোবহান বলেন, দৌলতদিয়ার ছয়টির মধ্যে ১ ও ২ নম্বর ফেরি ঘাট ভেঙে গেছে। ৩, ৪ ও ৫ নম্বর ঘাট ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে। তীব্র স্রোতের কারণে এই তিনটি ঘাটে কোনো ফেরি ভিড়তে পারছে না। বেলা ১১টা থেকে স্রোতের গতি অনেক বেড়ে যাওয়ায় বাধ্য হয়ে বেলা সাড়ে ১১টা থেকে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। ৬ নম্বর ঘাটে স্রোত তুলনামূলক কম থাকায় চারটি ছোট ফেরিতে যাত্রী পার করা হচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ কোনো ছোট গাড়ি পার করার প্রয়োজন হলে সেটা বিবেচনা করা হচ্ছে।
এদিকে নদী পাড়ি দিতে আসা ঢাকাগামী যাত্রীবাহী বাস ও গুরুত্বপূর্ণ পণ্যবাহী গাড়ি আটকে প্রায় চার কিলোমিটার দীর্ঘ সারি তৈরি হয়েছে।