রবিবার সকাল ৯টার দিকে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের পানি গত ১২ ঘণ্টায় ৬ সেন্টিমিটার বেড়ে শেরপুর ফেরিঘাট পয়েন্টে বিপদসীমার ২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের গেজ রিডার মোস্তফা মিয়া জানান, গত দুইদিনের তুলনায় রবিবার পানি বাড়ার গতি কিছুটা কমেছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, শ্রীবরদী উপজেলার ভেলুয়া ও কেকেরচর ইউনিয়নের ২৫টি গ্রামেও বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে। মৃগী নদীতে পানি বাড়ায় শেরপুর শহরে মধ্যশেরী, শেরীর চর, নামা শেরি, অস্টমীতলা, এলাকার নিম্নাঞ্চলও বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। নকলার রেহাই অস্টাধর গ্রামে নদী ভাঙন শুরু হয়েছে।
বন্যায় সদর, নকলা ও শ্রীবরদী উপজেলার ১৩ ইউনিয়নের ৫০ গ্রামের প্রায় ৬০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ছে। বিস্তীর্ণ এলাকার ফসলি জমি, পাট, রোপা আমন, সবজির আবাদ ও আমন বীজতলা ডুবে গেছে।
এদিকে, শেরপুর-জামালপুর সড়কের পোড়ার দোকান ও শিমূলতলী কজওয়েতে পানিতে ডুবে গেছে। এতে গত তিনদিন ধরে শেরপুর থেকে জামালপুর হয়ে উত্তরা লের সাথে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা জানান, সরকারি সহায়তা ছাড়া তাদের পক্ষে ঘুরে দাঁড়ানো কঠিন হবে।
শ্রীবরদী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ হুমায়ুন দিলদার বলেন, ১০০ হেক্টর রোপা আমন ধানের খেত, ১৫ হেক্টর পাটখেত, আমন ধানের বীজতলা ২৫ হেক্টর ও ২০ হেক্টর জমির সবজি খেত বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। তবে এখনও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরুপন করা হয়নি। পানি কমলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বলা যাবে।
নকলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাহিদুর রহমান জানান, বন্যায় রেহাই অস্টাধর গ্রামে নদী ভাঙন শুরু হয়েছে। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি জন্য বলা হয়েছে।
শেরপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফিরোজ আল মামুন জানান, আপাতত বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ১৫০ মেট্রিক টন চাল ও আড়াই লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
অপরদিকে, স্থানীয় সংসদ সদস্য হুইপ আতিউর রহমান আতিক বন্যাকবলিত সদর উপজেলার চরপক্ষিমারী ইউনিয়নের কুলুরচর-বেপারীপাড়া এলাকা পরিদর্শন করে তিন শতাধিক মানুষের হাতে খাদ্য সহায়তা ও ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেন। এসময় ক্ষতিগ্রস্তদের উদ্বিগ্ন না হয়ে ধৈর্য্যরে সাথে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলা করার অনুরোধ জানান তিনি।