বাংলাদেশ রেলওয়ে নিরাপদ ও সহজ গণপরিবহন হলেও বিগত সরকারগুলোর রেলওয়ের উন্নয়নে মনোযোগ না থাকায় রেলপথ যেভাবে উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ হবার দরকার ছিলো তা হয়নি বলে দাবি করেছে ক্যাব চট্টগ্রাম।
অন্যদিকে বিপুল পরিমাণ যাত্রীর চাহিদা থাকা সত্বেও টিকেট না পাওয়া, মন্ত্রণালয়ের লোকজন যাত্রী/ভোক্তাদের ভোগান্তি, হয়রানি ও অনিয়মের কথা শুনার সময় পাচ্ছে না।
শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এই দাবি করা হয়।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে কোভিড শয্যা বাড়ানোর দাবি ক্যাবের
এতে সংগঠনটি আরও দাবি করেছে যে মান্দাতার আমলের গ্রাহক অভিযোগ পদ্ধতি, গ্রাহক সেবা কেন্দ্রগুলোর দুরাবস্থা, অকার্যকর, টিকেট কালোবাজারীদের সঙ্গে রেল কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের আতাঁতের কারণে যাত্রী হয়রানি বন্ধ হচ্ছে না।
ভোগান্তির কথা উল্লেখ করে বলা হয় যে সাধারণ জনগণ যখন নিত্যপণ্য ও সেবার মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে চরমভাবে জর্জরিত। এমতাবস্থায় রেলওয়ের সেবা না বাড়িয়ে ও ভোগান্তি নিরসন না করে ট্রেনের টিকিটের মূল্য বাড়ানো হয়েছে। বর্ধিত ভাড়ার হার কার্যকর হয়েছে ২৫ জানুয়ারি থেকে। এতে শোভন চেয়ার শ্রেণির ৩৮০ টাকার ভাড়া নতুন করে নির্ধারণ করা হয়েছে ৪০৫ টাকা, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত (এসি) কোচে আসন প্রতি ভাড়া ৭০ টাকা বাড়িয়ে ৬৩০ টাকার ভাড়া হয়েছে। ভাড়া বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানিয়েছেন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম নেতারা।
২৮ জানুয়ারি ২০২৩ ইং গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে সই করেন ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, সহ-সভাপতি সাংবাদিক এম নাসিরুল হক, ক্যাব মহানগরের সভাপতি জেসমিন সুলতানা পারু, সাধারণ সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু, ক্যাব চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা সভাপতি আলহাজ্ব আবদুল মান্নান প্রমুখ।
বিবৃতিতে নেতারা বলেন, রেলপথ যোগাযোগের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হলেও রেল কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা, যাত্রীর স্বার্থ রক্ষায় চরম অবহেলা, অনীহা, রেল বিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সীমাহীন অনিয়ম-দুর্নীতি অব্যাহত রাখার জন্য রেল বিভাগ যাত্রী সেবার মান উন্নয়নে আন্তরিক নয়।
আরও পড়ুন: গণপরিবহনে শিক্ষার্থীদের হাফ ভাড়া নিশ্চিতে প্রজ্ঞাপন চায় ক্যাব
যার কারণে রেলের ভাড়া দ্বিগুন করা হলেও সেবার মান বাড়েনি।
আর রেল ব্যবস্থাপনায় ভোক্তাদের কোন অংশগ্রহণ গুরুত্বই পায়নি। অভিযোগ প্রতিকারে ঢাবি’র শিক্ষার্থীদের লাগাতর ধর্মঘট ডাকলেও পরিস্থিতির কোন উন্নয়ন হয়নি। এমনকি মান্দাতার আমলের সেই কোটা পদ্ধতি, টিকেট বিক্রয়ে সিন্ডিকেট প্রথা অব্যাহত আছে। যার কারণে রেলের টিকেট যাত্রীদের জন্য সোনার হরিণ হলেও কালোবাজারীদের কাছে অতি সহজলভ্য হয়ে আছে।
অনলাইনে টিকেট ছাড়ার পর সবগুলো বিক্রি দেখালেও ট্রেন ছাড়ার পর অনেক সীট খালি থাকে এবং লোকসানের সব দায়ভার রেলওয়ের ঘারে চাপে।
নেতারা অভিযোগ করে বলেন, সরকারের সদিচ্ছার কারণে রেলপথ মন্ত্রণালয় পৃথক মন্ত্রী পেলেও কাঙ্ক্ষিত সেবা নিশ্চিত হয়নি।
তাই অবিলম্বে রেলপথে যাত্রী হয়রানি, ভোগান্তি ও অনিয়ম রোধে তাৎক্ষণিক প্রতিকারের ডিজিটাল গ্রাহক সেবা কেন্দ্র (প্রয়োজনে প্রতিকার না পেলে ডিজি, মন্ত্রী, সচিবকে অবহিত করা যায় এমন ব্যবস্থা), বর্তমান টিকেট বিক্রয় ব্যবস্থাকে আরও আধুনিকায়ন ও ঢেলে সাজানো, কোটাপদ্ধতি বাতিল, যাত্রীদের জন্য টিকেটপ্রাপ্তি সহজলভ্য করা, যাত্রীসেবার অনিয়ম রোধে রেলে তাৎক্ষণিক গ্রাহক সেবা কেন্দ্র/হেলপ লাইন চালু, সিদ্ধান্ত প্রদানে সক্ষম ও যোগ্য প্রতিনিধিকে রেলস্টেশনে অবস্থান নিশ্চিত করে সপ্তাহে অন্তত একদিন গণশুনানির আয়োজন করে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ এবং রেলপথের সেবা ও ব্যবস্থাপনায় নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে ভোক্তা প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার দাবি জানান।
আরও পড়ুন: ইফতার বিতরণের পরিবর্তে অর্থ প্রদানের আহ্বান ক্যাবের