গ্রেপ্তার যুবকরা হলো- ওই গ্রামের আব্দুস সালামের ছেলে ইসহাক মিয়া (৩০) ও রবিউল মিয়া (২০)। তাদেরকে মঙ্গলবার ৭ দিনের রিমান্ড আবেদনসহ আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ। আদালতের বিচারিক হাকিম মোহসিনা হোসেন তুশি আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর রিমান্ড শুনানির তারিখ ধার্য করে তাদের জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এদিকে নির্যাতনের ক্ষত নিয়ে গত তিন দিন ধরে নালিতাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছে ওই কিশোর। ওই নির্যাতনের ঘটনার একটি ভিডিও ভাইরাল হওয়ায় এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, গত রবিবার নালিতাবাড়ীর পশ্চিম রাজনগর বন্ধুপাড়া গ্রামের আলী হোসেনের বাড়ি থেকে একটি মোবাইল ফোন সেট চুরি হয়। এ ঘটনায় আলী হোসেনের বাড়ির লোকজন একই গ্রামের ১৩ বছর বয়সী দরিদ্র কিশোরকে সন্দেহ করে। ওইদিন ওই কিশোরকে গ্রামের একটি রাস্তা থেকে ধরে আলী হোসেনের ভাই আব্দুস সালামের বাড়িতে নিয়ে যায় সালামের দুই ছেলে ইসহাক ও রবিউলসহ অন্যরা। পরে তাকে ওই বাড়ির নারকেল গাছে পেছনে হাতমোড়া দিয়ে রশিতে বেঁধে শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়। এক পর্যায়ে কিশোরটি অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে খবর পেয়ে কিশোরের নানা বাড়ির লোকজন অনেক অনুরোধ করে তাকে ছাড়িয়ে নিয়ে নালিতাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
এ নির্যাতনের ঘটনার একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি পুলিশের নজরে আসে এবং পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে পদক্ষেপ গ্রহণ করে।
কিশোরকে মোবাইল চুরির অপবাদে শারীরিক নির্যাতনের বিষয়টি জানতে পেয়ে পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজীম সোমবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং নালিতাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন কিশোরকে দেখতে যান এবং তার চিকিৎসার খোঁজখবর নেন।
এ ঘটনায় নির্যাতনের শিকার কিশোরের নানা বাদী করে নালিতাবাড়ী থানায় আলী হোসেন, ইসহাক মিয়া ও রবিউল মিয়ার নাম উল্লেখ সহ অজ্ঞাতনামা ২/৩ জনের বিরুদ্ধে একটি নিয়মিত মামলা দায়ের করেন। পুলিশ ওই রাতেই অভিযান চালিয়ে ইসহাক ও রবিউলকে গ্রেপ্তার করে।
এ ব্যাপারে নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বশির আহমেদ বাদল জানান, মোবাইল চুরির সন্দেহে গাছে বেঁধে কিশোরকে নির্যাতনের ঘটনায় থানায় নিয়মিত মামলা গ্রহণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে এজাহারভুক্ত ২ জনকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ড আবেদনসহ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। ভিডিও ক্লিপ দেখে অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নালিতাবাড়ী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জহুরুল হক জানান, নির্যাতনের শিকার কিশোরটির বাবা ও মায়ের মধ্যে ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে। বর্তমানে কিশোরটির মা ঢাকায় গার্মেন্টে কাজ করেন। বাবাও তার কোন ধরনের খোঁজ করেন না। তাই কিশোরটি তার নানা বাড়িতে থেকে বড় হচ্ছিল।