ঘন কুয়াশাজনিত কারণে সকাল প্রায় ১০টা পর্যন্ত মহাসড়কে বাস ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহন হেড লাইট জ্বালিয়ে চলাচল করে। কয়েক ঘণ্টা সূর্যের মুখ দেখা গেলেও বিকাল থেকে আবারও কুয়াশার চাদরে ঢেকে যায় এ অঞ্চল। এতে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশংকা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন:পঞ্চগড়ে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ, শীতে দুর্ভোগ সাধারণ মানুষের
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সপ্তাহ ধরে জেলায় প্রচণ্ড শীত ও ঘন কুয়াশা অব্যাহত রয়েছে। এতে শিশুসহ অনেকের জ্বর, সর্দি ও বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে।
শনিবার রাত থেকে এই শীতের প্রভাব বাড়ছে। কৃষকরা মাঠে নামতেও হিমশিম খাচ্ছে। গ্রামঞ্চলে খড়কুটা জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে। সকাল থেকেই স্থানীয় হাট-বাজারে শীতবস্ত্র ও পুরাতন গরম কাপড় কেনারও হিড়িক পড়েছে।
তবে মূল্য বেশি থাকায় দিনমজুর ও অসহায় পরিবারের লোকজন শীতবস্ত্র ক্রয় করতে পারছে না। সন্ধ্যার পরেই জেলা উপজেলা শহরগুলোতে জনসমাগম কমে যায়।
আরও পড়ুন: শীতে ঠাণ্ডা না গরম কোন পানিতে গোসল?
যমুনা নদীর তীরবর্তী চৌহালী, শাহজাদপুর, কাজিপুর, বেলকুচি ও সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার চরাঞ্চলসহ দুর্গম অঞ্চলে শীতের প্রভাব বেশি।
ইতোমধ্যে সরকারি বেসরকারি সংস্থার পক্ষ থেকে জেলার অনেক স্থানে শীতবস্ত্র বিতরণ শুরু হয়েছে।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মাদ তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দকৃত নগদ ৫৪ লাখ টাকাসহ ৪১ হাজার ৪০০ পিস কম্বল বিতরণ শুরু করা করেছে। সেই সাথে চালসহ ৮ হাজার ৩০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।’
আরও পড়ুন: শীতের তীব্রতা বেড়েছে নওগাঁয়
সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে আরও কম্বলের চাহিদা পাঠানো হচ্ছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
এদিকে উত্তরের আরেক জেলা পঞ্চগড়ে জেঁকে বসেছে শীত। মাঝারি শৈত্যপ্রবাহে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। বিকাল হলেই উত্তরের হিমেল হাওয়ার সাথে কনকনে ঠান্ডা নেমে আসে এবং রাতে কুয়াশাবৃষ্টি পড়ে।
রাস্তায় বের হলেই কুয়াশায় গা ভিজে যাচ্ছে। সন্ধ্যা থেকে কুয়াশার পরিমাণ বাড়তে থাকে। বৃষ্টির মতো কুয়াশা ঝরছে। ফলে রাস্তা-ঘাট, মাঠ ভিজে যাচ্ছে কুয়াশায়। জেলায় সব থেকে কষ্টে রয়েছে দিনমুজুর, রিকশা-ভ্যানচালক, ইজিবাইক চালক, পাথর শ্রমিক, চা শ্রমিকসহ ছিন্নমুল মানুষ। সকালের ঠান্ডায় কাজে যোগ দিতে দুর্ভোগে পড়ছেন এসব খেটে খাওয়া মানুষেরা। ঠান্ডার কারণে হাত-পা জড়ো হয়ে আসায় কাজ করতে পারছেন না তারা। শীতের তীব্রতা বৃদ্ধির সাথে সাথে জেলার হাসপাতালগুলোতে শীত ও শীতজনিত রোগী ভর্তির সংখ্যা বাড়ছে।
আরও পড়ুন: শীতে পা ফাটার সমস্যা দূর করবেন যেভাবে
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের সিনিয়র পর্যবেক্ষক জীতেন্দ্রনাথ রায় জানান, রবিবার সকাল ৯টায় পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। শনিবার পঞ্চগড়ে ৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল। সকালে সূর্য উঠলেও উত্তরের হিমেল বাতাসের কারণে তাপমাত্রা নিচে নেমেছে। তাপমাত্রা রেকর্ড অনুযায়ী এখানে ক্রমশ শীতের তীব্রতা বাড়ছে। এখানে তাপমাত্রা আরও কমবে।
আরও পড়ুন: শীতের শুষ্কতায় উপকারী বন্ধু তেল
তিনি জানান, তাপমাত্রা ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে মৃদু, ৬ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে মাঝারি এবং ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামলে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়।