সদর উপজেলার পাশাপাশি সীমান্তবর্তী গোয়াইঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, কানাইঘাট, জৈন্তাপুর, ফেঞ্চুগঞ্জ, বিশ্বনাথ ও বালাগঞ্জ উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে আছে। এছাড়া সিলেট নগরীর বিভিন্ন এলাকাও প্লাবিত হয়েছে।
জেলায় কয়েক দিনের ব্যবধানে দ্বিতীয় দফায় সৃষ্ট এ বন্যায় জনজীবনে স্থবিরতা নেমে এসেছে। বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। প্লাবিত এলাকায় বাঁধ ও পাকা রাস্তাসহ বিভিন্ন জায়গায় আশ্রয় নেয়া লোকজন বিশুদ্ধ পানি, খাদ্য ও শৌচাগারের অভাবে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। বন্যাকবলিত এলাকায় বাঁধ ও পাকা রাস্তা ভেঙে যাওয়ায় মানুষজনকে চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
গোয়াইনঘাটে বন্যার পানি কিছুটা কমলেও এখনও নিমজ্জিত রয়েছে অনেক ঘরবাড়ি, চালু হয়নি জেলা ও উপজেলার সড়ক যোগাযোগ। শ্রমিক ও দিনমজুরা বেকার রয়েছেন, গো-খাদ্যের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। উপজেলার পিরিজপুর-সোনারহাট রাস্তার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। চলতি মৌসুমে এ নিয়ে দুই দফা বন্যার মাঝে ঘরবাড়ি থেকে পানি নামলেও ফসলের মাঠ আর ভেসে উঠেনি।
গোয়াইনঘাটে ২০টি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়কে আশ্রয়কেন্দ্র ঘোষণা করা হলেও এদের বেশির ভাগই ডুবে রয়েছে। কোনো আশ্রয়কেন্দ্রে নেই আক্রান্তদের তাৎক্ষণিক উদ্ধারের ব্যবস্থা।
সিলেট জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, জেলার মধ্যে পাঁচ উপজেলার একটি পৌরসভা ও ৩৭টি ইউনিয়ন বন্যাকবলিত হয়েছে। এসব এলাকায় ২১৫ মেট্রিক টন চাল, ৫ লাখ টাকা নগদ এবং প্রায় ৯ শ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর সিলেটের আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী বলেন, ‘কানাইঘাট ও ভারতের মেঘালয়ে প্রবল বর্ষণের কারণে সুরমা নদীর পানি বেড়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। অবশ্য আগামী চার-পাঁচ দিন পানি কমবে। কিন্তু ১৯, ২০, ২১ ও ২২ জুলাই সিলেটে ভারী বর্ষণে আবারও বন্যার আশঙ্কা রয়েছে।’
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, পানিবন্দী তিন লাখ মানুষ
জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলাম বলেন, ‘বন্যাকবলিত এলাকাগুলোতে সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখা হচ্ছে। প্রতিনিয়ত প্রয়োজনীয় খাদ্য, নগদ টাকা ও শুকনো খাবার বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি বন্যাকবলিত এলাকায় বিদ্যালয়গুলোকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।’