স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, বর্তমানে সিলেটে ১৪০টিরও বেশি মেডিকেল টিম কাজ করছে; প্রস্তুত রয়েছে আরও দু’হাজারের বেশি কর্মী।
সোমবার দুপুরে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজের সম্মেলন কক্ষে সিলেট বিভাগের বন্যা পরিস্থিতি, ত্রাণ ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ কথা জানান তিনি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এবারের বন্যায় না খেয়ে কিংবা বিনা চিকিৎসায় একজন মানুষও মারা যায়নি, এটাই বড় প্রাপ্তি।
জাহিদ মালেক আরও বলেন, বন্যা পরবর্তী অসুখ মোকাবিলায় স্বাস্থ্য বিভাগ প্রস্তুত আছে।
আরও পড়ুন: সিলেটে পানি কমছে ধীরগতিতে, বাড়ছে দুর্ভোগ
বন্যা কবলিত এলাকায় কমিউনিটি ক্লিনিক, স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও হাসপাতালে সৃষ্ট সমস্যা নিরসনে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
চলমান বন্যায় ১৮ জুন পানি ঢুকে পরে ওসমানী হাসপাতালে। এতে তলিয়ে যায় হাসপাতালের নিচতলা। পানি ঢুকে পড়া ও বিদ্যুতহীনতার কারণে ব্যাহত হয় চিকিৎসা সেবা। নতুন রোগী ভর্তিও বন্ধ হয়ে যায় সেদিন।
পানি ঢুকে নষ্ট হয়ে পড়েছে হাসপাতালটির রেডিওথেরাপি, সিটিস্ক্যান ও এম আর আই যন্ত্র। নষ্ট হয়ে গেছে হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্সও। হাসপাতালের জেনারেটর রুমে পানি ঢুকে পড়ায় বিদ্যুৎ ব্যবস্থা কিছুটা ব্যাহত হয়।
তিনি বলেন, আমরা তাৎক্ষণিকভাবে ঢাকা থেকে বিকল্প জেনারেটরের ব্যবস্থা করে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা স্বাভাবিক করি। যার ফলে ওসমানী হাসপাতালে রোগীদেরকে স্বাস্থ্যসেবা দেয়ার ক্ষেত্রে কোনো ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়নি।
ওসমানী হাসপাতালে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা না থাকা ও চিকিৎসা সেবা বিঘ্নিত হওয়া প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ভবিষ্যতে এমন জলাবদ্ধতা ঠেকাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
আরও পড়ুন: সিলেটে বন্যা: এবার ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই শুরু
এ সময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, স্থানীয় প্রশাসন ও বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ ছিল এবং যে সময় যা দরকার, সে চাহিদা পূরণ করেছি। আমাদের সেনাবাহিনী, পুলিশ, স্থানীয় প্রশাসন, সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়রসহ সবাই অক্লান্ত পরিশ্রম করেছে এবং বন্যার্তদের সহযোগিতায় এগিয়ে এসেছে।
জাহিদ মালেক বলেন, আমরা যেভাবে বিগত সময়ে করোনা মোকাবিলা করেছি, যেভাবে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছি, ঠিক সেভাবে বন্যাপরবর্তী রোগবালাই ছড়ালে সেগুলোও মোকাবিলা করার সকল প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। বন্যাকবলিত প্রত্যেক জেলা-উপজেলায় মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে এবং টিমগুলো কাজ করছে। প্রয়োজনীয় ওষুধ স্থানীয় প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই।
এসময় সিলেট সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) হিমাংশু লাল রায়, ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহবুবুর রহমান ভূঁইয়া, মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি মাসুক উদ্দিন আহমদসহ স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মন্ত্রী হেলিকপ্টারে করে সুনামগঞ্জের বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন।
এ সময় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পক্ষ থেকে সিলেট-সুনামগঞ্জের প্রায় সাত হাজার বন্যার্ত মানুষের মধ্যে ত্রাণসহায়তা দেয়া হয়।