আমন ধান রোপণের ভরা মৌসুম চললেও চারা সংকটে আছেন চাষিরা। তাদের কেউ কেউ সরকারি ও বেসরকারিভাবে পুনরায় বীজ সংগ্রহ করতে পারলেও নতুন করে বীজতলা করার জায়গা এখনও পানিতে ডুবে থাকায় তা বপন করা সম্ভব হচ্ছে না।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসাব মোতাবেক, জেলার ৫৯ হেক্টর জমির বীজের চারা নষ্ট হয়েছে। লাখ লাখ টাকার চারা নষ্ট হওয়ায় চরম দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন আমন চাষিরা। এখন কোথায় পাবেন নতুন বীজ, কোথায় পাবেন কেনার টাকা, বন্যার পানি নামবে কবে- এমনই ভাবনায় আছেন জেলার কৃষকরা।
সদর উপজেলার হবতপুর গ্রামের আব্দুর রউফ বলেন, ‘বন্যার পানিতে চারা গাছ নষ্ট হওয়ায় মহাজনের কাছ থেকে ঋণ করে ১৮০০ টাকা মণ দরে আবার বীজ সংগ্রহ করেছি, কিন্তু পানি না নামায় তা বপন করতে পারছি না।’
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার বাঘমারা গ্রামের জমির আলী বলেন, ‘আমন ধানের চারা নষ্ট হওয়ায় দিশেহারা হয়ে গেছি। খাবার যোগাড় করতে হলে ধান চাষ করতে হবে, অন্য কোনো উপায় নেই, কিন্তু আবার বীজ কেনার টাকাও নেই।’
ধর্মপাশা উপজেলায় যোগাযোগ করা হলে কৃষক নেতা খাইরুল বাশার ঠাকুর খান বলেন, ‘আমাদের এলাকার বীজতলায় এখনও কোথাও হাঁটুপানি, কোথাও দুই ফুট পানি আবার কোথাও এক ফুট পানি। কখন পানি নামবে বুঝতে পারছি না। এলাকার আমন চাষিরা চরমঅনিশ্চয়তায় আছেন।’
এ বিষয়ে কৃষক লীগ সুনামগঞ্জ জেলা কমিটির আহ্বায়ক আব্দুল কাদির শান্তি মিয়া বলেন, ‘আমরা সংগঠনের পক্ষ হতে বিশ্বম্ভরপুর, দোয়ারাবাজার ও জামালগঞ্জ উপজেলা পরিদর্শন করে দেখেছি কৃষকদের ভয়াবহ ক্ষতির দৃশ্য। আমাদের সরকার কৃষিবান্ধব সরকার, সরকারের পক্ষ থেকে অবশ্যই কৃষকদের স্বার্থে জরুরি পদক্ষেপ নেয়া হবে।’
বাংলাদেশ কৃষক সংগ্রাম সমিতির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শাহজান কবির বলেন, ‘সুনামগঞ্জে আমন চাষিদের জন্য বীজতলার এ ক্ষতি স্মরণকালের বড় ধরনের ক্ষতি। কৃষকরা যাতে সময়মতো বীজতলা পুনরায় প্রস্তুত করতে পারেন সে জন্য আমন চাষিদের দ্রুত বিনামূল্যে সার ও বীজ ধান সরবরাহ এবং নগদ আর্থিক সহযোগিতার আওতায় আনার জোর দাবি জানাই।’