আশ্রয়ণ প্রকল্প
সুনামগঞ্জে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে আগুন, একই পরিবারের ৬ জনের মৃত্যু
সুনামগঞ্জের ধর্মপাশায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের একটি ঘরে আগুন লেগে স্বামী-স্ত্রী ও সন্তানসহ একই পরিবারের ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ১২টার পরে উপজেলার জয়শ্রী ইউনিয়নের আদর্শগ্রাম শিমেরখাল আশ্রয়ণ প্রকল্পে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: গোবিন্দগঞ্জে করতোয়ায় নদীতে গোসলে নেমে ২ শিশুর মৃত্যু
নিহতরা হলেন- শিমেরখাল গ্রামের দিনমজুর এমারুল মিয়া (৫৫), তার স্ত্রী পলি আক্তার (৪৫), শিশু সন্তান পলাশ (৯), ফরহাদ (৭), ফাতেমা বেগম (৫) ও ওমর ফারুক (৩)।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, শিমেরখাল আশ্রয়ণ প্রকল্পের একটি ঘরে ঘুমন্ত অবস্থায় ছিলেন এমারুল, তার স্ত্রী ও চার সন্তান। হঠাৎ করে দিবাগত রতে ধোঁয়া ও আগুন দেখে চিৎকার করতে থাকে আশেপাশের লোকজন। কিন্তু ভেতর থেকে এমারুল ও তার পরিবারের কারও সাড়া মিলেনি। পরে পুলিশ ও স্থানীয়রা ঘরের দরজা ভেঙে প্রবেশ করে ভেতরে ৬ জনের দগ্ধ লাশ পড়ে থাকতে দেখেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে।
ধর্মপাশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনামুল হক আগুনে ৬ জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন: আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ট্রেন থেকে পড়ে কলেজ ছাত্রের মৃত্যু
২ মাস আগে
দেশের ৯ জেলার ২১১টি উপজেলা সম্পূর্ণরূপে ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত হচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী
আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে জমির মালিকানাসহ আরও ৩০ হাজার ৩৬৫টি পরিবারকে ঘর হস্তান্তর করা হচ্ছে। বুধবার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত থেকে এসব ঘর হস্তান্তর করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
চতুর্থ পর্যায়ে ৩০ হাজার ৩৬৫টি ঘর হস্তান্তরের মাধ্যমে দেশের ৯টি জেলার ২১১টি উপজেলা সম্পূর্ণরূপে ভূমিহীন-গৃহহীন মুক্ত হচ্ছে।
মঙ্গলবার (২১ মার্চ) দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন।
আরও পড়ুন:দেশের ভাবমূর্তি সমুন্নত রাখুন, বিদেশের আইনকে সম্মান করুন: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
তিনি জানান, মুজিববর্ষ উপলক্ষে ২০২০ সাল থেকে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত সারাদেশে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে পুনর্বাসনের লক্ষ্যে দুই লাখ ৩৭ হাজার ৮৩১টি বাড়ি বরাদ্দ করা হয়েছে।
এর ফলে সারাদেশে উপকারভোগীর সংখ্যা প্রায় ১৩ লাখে পৌঁছেছে।
এছাড়া সরকারের তথ্য অনুযায়ী, ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের সংখ্যা ২ লাখ ৫৯ হাজার ২৩৭।
এরমধ্যে প্রথম পর্যায়ে ২০২১ সালের ২৩ জানুয়ারি ৬৩ হাজার ৯৯৯টি, দ্বিতীয় পর্যায়ে ২০২১ সালের ২০ জুন ৫৩ হাজার ৩৩০টি, তৃতীয় পর্যায়ের প্রথম ধাপে ২০২২ সালের ২৬ এপ্রিল ৩২ হাজার ৯০৪টি, তৃতীয় পর্যায়ের দ্বিতীয় ধাপে ২০২২ সালের ২১ জুলাই ২৬ হাজার ২২৯টি ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে।
বুধবার (২২ মার্চ) চতুর্থ পর্যায়ে ৩৯ হাজার ৬৬৫টি ঘর হস্তান্তর করা হচ্ছে। এতে করে চিহ্নিত ২ লাখ ৫৯ হাজার ২৩৭টি পরিবারের মধ্যে দুই লাখ ১৫ হাজার ৮২৭টি পরিবারকে ঘর হস্তান্তর সম্পন্ন হচ্ছে।
অবশিষ্ট ৪৩ হাজার ৪১০টি পরিবারের মধ্যে ২২ হাজার ১০টি পরিবার চিহ্নিত করে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে দুই শতাংশ জমিসহ একক গৃহ বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। বাকি ২১ হাজার ৪০৪টি পরিবার চিহ্নিত করে তাদের পুনর্বাসনের মাধ্যমে ‘দেশের কোনও মানুষ ভূমিহীন-গৃহহীন থাকবে না’ বলে দেয়া প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়িত হবে।
আরও পড়ুন: ময়মনসিংহে প্রধানমন্ত্রী ২৩টি প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন শনিবার
মুখ্য সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ১৯৯৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত মোট ৭ লাখ ৭১ হাজার ৩০১টি পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে।
এই প্রোগ্রামে সুবিধাভোগীর সংখ্যা হল ৩৮ লাখ ৫৬ হাজার ৫০৫ জন। প্রতি পরিবারে পাঁচ জন সদস্যের ওপর ভিত্তি করে গণনা।
এর মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে ৫ লাখ ৫৪ হাজার ৫৯৭ পরিবারকে সরাসরি পুনর্বাসন করা হয়েছে।
অবশিষ্ট দুই লাখ ১৬ হাজার ৭০৪ পরিবারকে ভূমি মন্ত্রণালয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অনুরূপ কর্মসূচির আওতায় পুনর্বাসন করা হয়েছে।
এদিকে বরিশালের বানারীপাড়ায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে স্থানীয় সংসদ সদস্য মো. শাহে আলম বলেন, প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পদাঙ্ক অনুসরণ করে গৃহহীনদের বাড়ি-ঘর ও ঠিকানা দিচ্ছেন।
তিনি আরও বলেন, সবাইকে বাড়ি দেয়া তার অঙ্গীকার ও উদ্যোগ।
তিনি উল্লেখ করেন, বুধবার প্রধানমন্ত্রী প্রায় ১৪২টি ঘর বিতরণ করবেন এবং আগামী দিনে আরও ১৬৩টি বাড়ি বিতরণ করা হবে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনগণকে ভালোবাসেন এবং সর্বদা জনগণ ও তাদের কল্যাণের কথা চিন্তা করেন।
শাহে আলম বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন সরকারের গৃহহীন মানুষকে ঘর দেয়ার পদক্ষেপটি অনন্য।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আগামী ছয় মাসের মধ্যে বানারীপাড়া উপজেলাকে গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করা হবে।
ইউএনও ফাতিমা আজরিন তন্বী বলেন, প্রকৃত গৃহহীনদের খুঁজে বের করতে প্রশাসন অনেক কঠোর ও সতর্ক ছিল।
আরও পড়ুন: সমাজ পরিবর্তনে জীবনমুখী চলচ্চিত্র নির্মাণ করুন: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
১ বছর আগে
আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর দেয়ার নামে প্রতারণা, চক্রের মূল হোতা আটক
ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর দেয়ার কথা বলে প্রতারণা করে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে চক্রের মূল হোতাকে আটক করেছে র্যাব-১৪।
ভুক্তভোগীদের মামলার পরিপ্রেক্ষিতে রবিবার রাতে সদর উপজেলার বাড়ারপাড় এলাকা থেকে চক্রের মূল হোতাকে আটক করা হয়।
আরও পড়ুন: ধামরাইয়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পের গর্তের পানিতে ডুবে ২ শিশুর মৃত্যু
প্রতারক জামান মিয়া দাপুনিয়া বাড়ারপাড় এলাকার নূরুল ইসলামের ছেলে।
সোমবার দুপুরে নগরীর আকুয়া বাইপাস র্যাব কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাবের-১৪ এর উপ-অধিনায়ক মেজর শিশির মো. তালুকদার।
তিনি জানান, প্রতারক জামান দীর্ঘদিন যাবত গ্রামের নিরীহ মানুষের কাছ থেকে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রায়ণ প্রকল্পের ঘর পাইয়ে দেয়ার কথা বলে অর্থ আত্মসাৎ করে আসছে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করে।
এই প্রতারক এ পর্যন্ত ৪২ জন ভূমিহীন ও দুঃস্থদের কাছ থেকে প্রায় তিন লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়।
এ ব্যাপারে মামলা প্রক্রিয়াধীন আছে বলে জানায় র্যাব উপ-অধিনায়ক।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং: ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্প
আশ্রয়ণ প্রকল্প: ‘এহন আমাগের দিন ঘুরতে শুরু করছে’
১ বছর আগে
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং: ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্প
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্প। সোমবার এই ঘূর্ণিঝড় বাংলাদেশে আঘাত হানার সময় আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের অধীনে দুর্যোগ-প্রতিরোধী বাড়িগুলোতেই ছিল উপকূলের চার লাখ মানুষ। তাদের ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়ণ কেন্দ্রে যাওয়ার প্রয়োজন হয়নি।
ভূমিহীনদের বাড়িগুলো উপহার দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী
গত দুই বছরে চার দফায় ১৯টি উপকূলীয় জেলায় ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ৬১ হাজার ৩৭৮টি আশ্রয়ণ বাড়ি দেয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের (পিএমও) কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং-এর সময় কয়েক হাজার প্রতিবেশী আধা-পাকা বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিল।
দুর্যোগ-প্রতিরোধী ঘরগুলো ঘূর্ণিঝড়ের সময় গৃহপালিত পশু এবং অন্যান্য সম্পত্তির ক্ষতির পরিমাণ কমাতেও সাহায্য করেছিল।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং: জলাবদ্ধতা, যানজটে চরম ভোগান্তিতে রাজধানীবাসী
পিএমওর মনিটরিং সেলের তথ্যানুসারে, ঘূর্ণিঝড়ের সময় ১৯টি উপকূলীয় জেলায় মোট দুই লাখ ১৯ হাজার ৬৯০ জন মানুষ এবং ৪৫ হাজার ৪৪৫টি গবাদি পশুকে ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে নেয়া হয়েছিল। কিন্তু উপকূলীয় এলাকায় মোট ধারণক্ষমতার প্রায় ৪৩ লাখ লোকের জন্য সাত হাজার ৪৯০টি আশ্রয় কেন্দ্র রয়েছে।
আশ্রয়ণ প্রকল্প হলো প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একটি আবাসন প্রকল্প। যা সারাদেশে গৃহহীন ও বাস্তুচ্যুত মানুষের জন্য ঘর নির্মাণের লক্ষ্যে বাস্তবায়িত হচ্ছে।
এই প্রকল্পের আওতায় পটুয়াখালী জেলায় ছয় হাজার ৯৪১, বরিশালে চার হাজার ৮৩৪, বরগুনায় দুই হাজার ৬০০, ঝালকাঠিতে এক হাজার ৮৪২, পিরোজপুরে চার হাজার ৮৬৭, ভোলায় তিন হাজার ৫২৯, শরীয়তপুরে দুই হাজার ৬৬২, গোপালগঞ্জে তিন হাজার ৮০৫, বাগেরহাটে দুই হাজার ৭৯৪, নড়াইলে ৮২৯, খুলনায় তিন হাজার ৯৫০, যশোরে দুই হাজার ১৫৩, সাতক্ষীরায় দুই হাজার ৯০৬, ফেনীতে এক হাজার ৬৫৯, নোয়াখালীতে তিন হাজার ৬৮৮, লক্ষ্মীপুরে তিন হাজার ২২৮, চাঁদপুরে ৪০৮, চট্টগ্রামে পাঁচ হাজার ৪৩ এবং কক্সবাজারে তিন হাজার ৬৪০ বাড়ি দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং: মুন্সীগঞ্জে গাছ চাপায় মা-মেয়ের মৃত্যু
সিত্রাংয়ে ১০ হাজার ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত: প্রতিমন্ত্রী
২ বছর আগে
আশ্রয়ণ প্রকল্প: ‘এহন আমাগের দিন ঘুরতে শুরু করছে’
রেললাইনের বস্তিতে অনিশ্চিত জীবন কাটানো ইউনুস-সাগরিকা দম্পতির এখন পায়ের নিচে একটা শক্ত মাটি হয়েছে। মাত্র এক বছর হলো তার এই পরিবর্তন। এরইমধ্যে যেন নতুন একটি প্রাণ সঞ্চার হয়েছে তাদের মাঝে। একসময়ে অন্যের দোকানে দর্জির কারিগর হয়ে কাজ করা ইউনুছ এখন স্ত্রী সাগরিকাকেও এই দর্জির কাজে যুক্ত করে স্বপ্ন দেখছে ভাগ্য বদলের। সেই স্বপ্ন পূরণে ইতোমধ্যে বেশ এগিয়েও গেছেন তারা।
ইউনুছ মোল্যার বয়স এখন ৩৮। তার স্ত্রী সাগরিকার বয়স ৩০ এর মতো। ১২ বছর আগে তাদের বিয়ে হয়। সংসারে ১০ বছরের একটি ছেলে শাহাদাত ও ৬ বছরের মেয়ে ইয়ানুর। তবে মেয়েটি একেবারেই শারিরীক প্রতিবন্ধী। বিছানাতেই শুয়ে থাকে সারাদিন। বসেও থাকতেও পারে না।
এই হতদরিদ্র ভূমিহীন দম্পতি থাকতো সদর উপজেলার মাচ্চর ইউনিয়নের খলিলপুরের রেলের জায়গায় গড়ে তোলা অন্যের একটি বস্তি ঘরে। ইউনুছ টেইলারের কারিগর ছিল। নিজের কোন সামর্থ্য ছিল না বলে পরের দোকানেই তাকে কাজ করতে হতো। তার বদলে যাওয়া জীবনের সন্ধিক্ষণ হয়ে আসে মুজিব শতবর্ষ।
এই দম্পতির জানায়, এমনভাবে তাদের জীবন বদলে যেতে পারে সেটি তারা ভাবতেও পারেননি। একদিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্যার এসে তাদের দেখে যান। এরপর বছরখানেক আগে তারা জানতে পারেন যে, সরকার তাদের দুরাবস্থার কথা জানতে পেরে তাদের একখণ্ড জমিসহ থাকার জন্য একটি পাঁকা ঘর তৈরি করে দিচ্ছেন।
‘জায়গা ও বাড়ি পাচ্ছি খবিরটি শুনে অবাক হইয়্যা গেছিলাম। পরে যখন সত্যি সত্যি ঘরে উঠলাম, সেইদিন থিক্যাই (থেকে) আমরা দু’জনে কইছিলাম যে, এখন কিছু একটা কইর্যা (করে) জীবনডারেই (জীবনকে) বদলায় ফ্যালাবো।’
এমন প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে সাগরিকা জানান, তার স্বামী ইউনুছ মোল্যা অসুস্থ্য ছিল। গ্রামের লোকজনের সাহায্য নিয়ে তার চিকিৎসাও করিয়েছেন ঢাকায় নিয়ে। তখন তারা পরের জায়গায় থাকতেন। নিজেদের ঘরদোর না থাকায় অনেক সমস্যা হতো। পরে যখন সরকার তাদের এই ঘরটা দিল তখন তারা চিন্তা করলেন যে, যেহেতু তার স্বামী অসুস্থ তাই আর বাইরে পরের দোকানে তার কাজ করার দরকার নেই। এরপর থেকেই তারা দুজনে দুটি সেলাই মেশিন জোগাড় করে ঘরেই দর্জির কাজ শুরু করেন।
পড়ুন: আশ্রয়ণ প্রকল্পের তৃতীয় ধাপে টেকসই ঘর পাবে প্রায় ৬৫,৪৭৪ পরিবার
২ বছর আগে
ধামরাইয়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পের গর্তের পানিতে ডুবে ২ শিশুর মৃত্যু
ধামরাই সদর ইউনিয়নে এলাকায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের গর্তের পানিতে পড়ে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। গত মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে সদর ইউনিয়নের উত্তর পশ্চিম শরীফবাগ এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
নিহত রাজু আহম্মেদ (১০) ধামরাই পৌরসভার কান্দিকুল এলাকার মো. তোতা মিয়ার ছেলে এবং রাজু শরীফবাগ ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসার ছাত্র ছিলেন। নিহত অপর শিশু মো. রিয়াজুল ইসলাম (৮) ধামরাই সদর ইউনিয়নের উত্তর পশ্চিম শরীফবাগ এলাকার মো. হাবিবুর রহমানের ছেলে এবং শরীফবাগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্র।
আরও পড়ুন: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পানিতে ডুবে দুই বোনের মৃত্যু
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার বিকালে বাচ্চারা খেলছিলো। পাশেই আশ্রয়ণ প্রকল্পের জন্য ভেকু দিয়ে মাটি কেটে চতুর্দিকে আইল তৈরি করে নদী থেকে বালু উত্তোলন করে ভরাট করছিল। কিন্তু পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় সেখানে অনেক পানি জমে ছিল। সেখানে খেলা করার সময় শিশু দুটি পানিতে পড়ে যায়। সন্ধ্যা হয়ে গেলেও বাচ্চারা বাড়িতে ফিরে না আসায় পরিবারের সদস্যরা তাদেরকে খুঁজতে থাকেন। না পেয়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ওখানে কাছে জানতে পারেন তারা বিকালে পাশেই খেলা করছিল। তখন পাশের লোকজন সেই গর্তের পানিতে নেমে শিশুদের খুঁজতে থাকেন। সেখান থেকে শিশু দুটির লাশ উদ্ধার করা হয়। এরপর শিশু দুটিকে ধামরাই সরকারি হাসপাতলে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাদেরকে মৃত ঘোষণা করেন।
এবিষয়ে ধামরাই সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. মশিউর রহমান বলেন, ‘আশ্রয়ণ প্রকল্পের জায়গায় ভরাট করার জন্য ভেকু দিয়ে মাটি কেটে আইল তৈরি করে বালু ফেলে ভরাটের কাজ চলছে। সেখানে বাচ্চারা খেলা করতে গিয়ে পানিতে পড়ে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে।’
ধামরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. অতিকুর রহমান বলেন, ‘খবর শুনে ঘটস্থল পরিদর্শন করে লাশ দুটি পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন: বাগেরহাটে পানিতে ডুবে ২ বোনের মৃত্যু
বল তুলতে গিয়ে পদ্মায় ডুবে স্কুলছাত্রের মৃত্যু!
২ বছর আগে
আশ্রয়ণ প্রকল্পের তৃতীয় ধাপে টেকসই ঘর পাবে প্রায় ৬৫,৪৭৪ পরিবার
সরকারের নেয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরগুলো আরও টেকসই ও বাসিন্দা-বান্ধব করতে ঘর প্রতি খরচ বৃদ্ধি ও নকশায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। এর ফলে ভূমিহীন ও গৃহহীনরা এখন অন্তত দুই শতাংশ জমিসহ উন্নত মানের ঘর পাবেন।
বর্তমানে প্রায় ৬৫ হাজার ৪৭৪টি ঘর নতুন নকশা ও বেশি খরচে নির্মাণ করা হচ্ছে। আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের তৃতীয় ধাপে গৃহহীন পরিবারগুলো এসব ঘর পাবে।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া বলেন, ‘ঘরগুলও আরও টেকসই ও দর্শনীয় করতে প্রতিটি বাড়ির জন্য খরচ এক লাখ ৯০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে দুই লাখ ৫৯ হাজার ৫০০ টাকা করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন: ১২০ কোটি টাকা ব্যয়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পে ৫০ হাজার ঘর নির্মাণ হচ্ছে
এছাড়া চরের জমিতে অবস্থানরত গৃহহীন পরিবারগুলোকে পোর্টেবল ঘর দেয়া হয়েছে যাতে তারা ভূমিক্ষয়ের সময় তাদের বাড়িঘর সরিয়ে নিতে পারে।
২ বছর আগে
স্বাবলম্বী জমির প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর ও জমি দিলেন অন্য গৃহহীনকে
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার ঘর ও জমি পেয়ে জমির উদ্দীন এখন নিজেই স্বাবলম্বী। নিজের বসবাসের ঘরটি এলাকার অন্য দরিদ্র অসহায় মানুষকে দেয়ার জন্য উপজেলা প্রশাসনের কাছে ঘর ও জমির দলিল হস্তান্তর করে প্রশাংসায় ভাসছেন তিনি।
জমির উদ্দিন বিশ্বাস (২৮), চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর উপজেলার আন্দুলবাড়ীয়া ইউনিয়নের শাহাপুর গ্রামের মৃত খেদের বকসোর ছেলে। এক মেয়ে, স্ত্রী নিয়ে সংসার তাঁর।
গত বছরের ২০ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারা দেশে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৬৮টি ঘর উদ্বোধন করেন। সেই থেকে ভূমিহীন দিনমজুর জমির উদ্দিন আন্দুলবাড়িয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পে উপহারকৃত বাড়িতে পরিবারসহ বসবাস শুরু করেন। তখন থেকে তার আয় বাড়ায় তিনি এখন স্বাবলম্বী।
আরও পড়ুন: ১২০ কোটি টাকা ব্যয়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পে ৫০ হাজার ঘর নির্মাণ হচ্ছে
তাই জমির উদ্দিন বিশ্বাস সম্প্রতি সস্ত্রীক উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে উপস্থিত হয়ে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া উপহার বসত ঘর ও জমির দলিল জমা দেন এবং অন্য কোনো দরিদ্র ব্যক্তিকে এই ঘর দেয়ার অনুরোধ জানান। এই ঘরটি অন্য কোনো গৃহহীন-ভূমিহীন পরিবারকে দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানা গেছে।
জমির উদ্দিন বিশ্বাস পেশায় ছিলেন একজন দিনমজুর। সারা দিনের উপার্জিত অর্থ দিয়ে কোনো রকমে চলছিল সংসার। তবে ভূমিহীন হওয়ায় ঠাঁই হয়েছিল মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া শাহাপুর গ্রামের আশ্রয়ণ প্রকল্পে। এতে কিছুটা আর্থিক কষ্ট লাঘব হলেও স্বাচ্ছন্দ্য আসছিল না। তবে এবার মাথা গোজার ঠাঁই হওয়ায় বিভিন্ন এলাকা থেকে কলা ক্রয় করে বিভিন্ন বাজারে বিক্রয় করে প্রতিদিন আয় করছেন ৫শ’ থেকে এক হাজার টাকা। এতে প্রতি মাসে আয় হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা। ফলে পরিবারে এসেছে আর্থিক স্বচ্ছলতা। পরিবার-পরিজন নিয়ে এখন ভালোই আছেন তিনি।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর জমির উদ্দিন বিশ্বাস ও তাঁর স্ত্রী আফরোজা খাতুন উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে উপস্থিত হয়ে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া উপহার বসত-ঘর ও জমির দলিল জমা দেন।
তারই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে জীবননগর উপজেলা নির্বাহী (অফিসার ইউএনও) আরিফুল ইসলাম রাসেল, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) হুমায়ুন কবির, আন্দুলবাড়ীয়া ইউপি চেয়ারম্যান শেখ শফিকুল ইসলাম মোক্তারসহ জমির উদ্দিনের বাড়িতে হাজির হন এবং তাঁর সঙ্গে কথা বলেন।
এসময় জমির উদ্দিন বলেন, ‘আমার তো এখন নিজের মাথা গোজার ঠাঁই হয়েছে। সমাজে আমি ছাড়া এখনও অনেক দরিদ্র, ভূমিহীন ও গৃহহীন ব্যক্তি আছে, এই ঘরটা আমি তাদের দিতে চাই। প্রধানমন্ত্রী আমাকে স্বাবলম্বী হওয়ার পথ দেখিয়ে দিয়েছেন। তাই আমি স্বাবলম্বী হয়ে জমি ও ঘর তৈরি করে ফেলেছি। এখন এই ঘর ও জমি আমার আর প্রয়োজন নেই। তাই আমি চাই, এই ঘরটা অন্য কোনো দরিদ্র মানুষ পাক।’
আরও পড়ুন: হুমকির মুখে আশ্রয়ণ প্রকল্প, গাইবান্ধায় ২১ গ্রাম প্লাবিত
আশ্রয়ণ প্রকল্পের অন্যান্য বাসিন্দারা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আমাদের আশ্রয়স্থল দিয়েছেন। আগে আমাদের খুব খারাপ দিন গেছে। এখন আমাদের থাকার জায়গা হয়েছে, সেই সঙ্গে সংসারের স্বচ্ছলতার জন্য আয়ের সুযোগও হয়েছে। এজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাই।’
জীবননগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আরিফুল ইসলাম রাসেল বলেন, ‘আশ্রয়ণ প্রকল্প প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি স্বপ্ন, দেশে যাতে কেউ গৃহহীন না থাকে, সে জন্য তিনি ভূমিহীন ও গৃহহীন ব্যক্তিদের জমি এবং ঘর দিয়েছেন। সে ধারাবাহিকতায় জীবননগর উপজেলার শাহপুর গ্রামের দিনমজুর জমির উদ্দিনকে একটি ঘর দেয়া হয়েছিল। সেই ঘরে বসবাস করে নিজে পরিশ্রম করে আজ তিনি স্বাবলম্বী। এ জন্য তিনি নিজ নামে অন্য স্থানে জমি কিনে ঘর করে বসবাস করায় নিজে লিখিতভাবে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া জমি ও ঘর হস্তান্তর করেন। এবং অন্য দরিদ্র ব্যক্তিকে দেয়ার জন্য বলেন। তাঁর এই মহতী উদ্যোগের জন্য জীবননগর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাধুবাদ জানাই।’
উল্লেখ্য, জীবননগর আন্দলবাড়িয়ার শাহাপুরে ভূমিহীন পরিবারগুলোর জন্য গড়ে তোলা হয়েছে একটি আদর্শ আশ্রয়ণ প্রকল্প। এ প্রকল্পে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার দেয়া ঘর পান ভূমিহীনরা।
২ বছর আগে
‘জীবনেও ভাবি নাই, পাক্কা ঘরে থাকবার পামু’
জীবনেও ভাবি নাই, পাক্কা ঘরে থাকবার পামু। আর আইজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘরও পাইলাম, তার সাথে কথাও কইলাম। এই আনন্দ কয়ে বোঝানো যাইবো না।
জমিসহ নতুন ঘর পাওয়ার পর ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রীর সাথে কথা বলতে পেরে এভাবেই উচ্ছ্বাস প্রকাশ করলেন শেরপুরের তাসলিমা খাতুন (৩০)।
রবিবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মুজিববর্ষের উপহার হিসেবে দ্বিতীয় পর্যায়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই অনুষ্ঠানে শেরপুরে সীমান্তবর্তী ঝিনাইগাতী উপজেলার হলদিগ্রাম গুচ্ছগ্রাম প্রকল্প এলাকার সাথে সরাসরি যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় প্রধানমন্ত্রী উপকারভোগীদের সাথে কথা বলতে চাইলে তার সাথে কথা বলেন তাসলিমা খাতুন। তিনি প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, ‘আমি স্বামী পরিত্যক্তা। আমার কোন ঘর-বাড়ি আছিল না। বাপের বাড়িতেই আছিলাম। এহন আমারে আপনি একটা ঘর উপহার দিছেন। সেই ঘর পাইয়া অনেক ধন্য হইছি। জমি দিছেন। ঘরে বিদ্যুৎ পাইছি। আরও অনেক সুবিধা পাইছি। তার জন্য অনেক খুশি’।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর উপহার পেলো শেরপুরে ১৬৭ গৃহহীন পরিবার
তাসলিমা প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এরকম ঘরে থাকতে পারমু কহনো ভাবতে পারি নাই। মাথার ওপর ছাদ ছিলো না। এখন নিজের জমি হইছে, নিজের ঘরে শান্তিতে থাকতে পারমু। আল্লার কাছে দোয়া করি, যেন আল্লায় আপনারে ভালো করে’। এ সময় তাছলিমা প্রধানমন্ত্রীকে হলদিগ্রাম গুচ্ছগ্রামে বেড়াতে আসার আমন্ত্রণ জানান।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে গৃহহীনের অভাব ঘুচবে ১৫৭২ পরিবারের
জমি সহ ঘর পেয়ে দারুণ উচ্ছসিত হলদিগ্রাম গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দারা। উচ্ছাস যেন কমছে না ষাটোর্ধ্ব দিনমজুর লাল মিয়া ও তার স্ত্রী রেজিয়া খাতুনের। লাল মিয়া জানান, জন্মের কয়েক বছর পরেই বাবা-মা হারান। অন্যের বাড়িতে থেকে বড় হয়েছেন। বিয়ে করে শ্বশুরবাড়িতে ছিলেন দীর্ঘ দিন। পরে শ্যালকের (বউয়ের ছোট ভাই) অত্যাচারে সেই বাড়ি ছেড়ে স্ত্রী সন্তান নিয়ে পাখির মতো ঘুরে বেড়িয়েছেন। বুড়ো বয়সে এসে নিজের নামে তিনিই কিনা পেলেন জমির দলিল ও ঘরের কাগজ। শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার শালচূড়া গ্রামের বাসিন্দা লাল মিয়া ও তার স্ত্রী রেজিয়া খাতুন নতুন পাওয়া ঘর ঘুরে ঘুরে দেখিয়ে জানালেন, আধা পাকা ঘরটি তাদের খুব পছন্দ হয়েছে। থাকার কক্ষের সঙ্গে রান্নাঘর। টয়লেটের ব্যবস্থাও ভালো। বিদ্যুৎ আছে। পানি আছে। পরিবার নিয়ে এখন খুব ভালোভাবে থাকতে পারবেন।
আরও পড়ুন: মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার গৃহহীনদের জন্য ঘর
ঝিনাইগাতী উপজেলার নলকুড়া ইউনিয়নের হলদীগ্রাম আশ্রয়কেন্দ্রে ২৫টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমিসহ ঘর দেওয়া হয়েছে। রবিবার প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে জাতীয় সংসদের সরকার দলীয় হুইপ বীর মুক্তিযোদ্ধা আতিউর রহমান আতিক এমপি উপকারভোগীদের হাতে জমির দলিল ও ঘরের চাবি তুলে দেন। পরে হলদীগ্রাম আশ্রয়কেন্দ্র থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীকে প্রকল্প সম্পর্কে অবহিত করেন ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুবেল মাহমুদ। এসময় উপস্থিত ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার মো. শফিকুর রেজা বিশ্বাস, ময়মনসিংহ রেঞ্জের ডিআইজি ব্যারিস্টার মো. হারুন অর রশিদ, জেলা প্রশাসক আনার কলি মাহবুব, পুলিশ সুপার মো. হাসান নাহিদ চৌধুরী, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক এটিএম জিয়াউল ইসলাম, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট চন্দন কুমার পাল পিপি, ঝিনাইগাতী উপজেলা চেয়ারম্যান এসএমএ ওয়ারেজ নাইম, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সুধীবৃন্দ।
হলদীগ্রাম আশ্রয়ণ প্রকল্পটি ৩ একর ১৩ শতক আয়তনের এ জায়গায় প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় প্রথম পর্যায়ে ১৫টি পরিবার আছে। নতুন করে যুক্ত হলো আরও ২৫টি পরিবার। আশ্রয়ণ কেন্দ্রের ঘর প্রদান উপলক্ষে সেখানে উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। নতুন নির্মিত ঘরগুলোর উদ্বোধন উপলক্ষে ঘরের দরজার সামনে লাগানো হয়েছে নামফলক। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপকারভোগীদের দেওয়া হয়েছে নতুন জামা-কাপড়। সবমিলিয়ে নিজের নামে জমির দলিল ও জমির ওপর সেমি পাকা ঘর পেয়ে ঘরে ঘরে বইছে আনন্দের বন্যা।
জেলা প্রশাসক আনার কলি মাহবুব বলেন, ‘মুজিববর্ষে ‘বাংলাদেশের একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না’ প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশনা বাস্তবায়নে শেরপুর জেলায় দ্বিতীয় পর্যায়ে ১৬৭টি গৃহহীন পরিবারকে জমি সহ ঘর দেওয়া হয়েছে। তন্মধ্যে সদর উপজেলায় ৩০টি, নকলায় ৪২টি, নালিতাবাড়ীতে ৫০টি, শ্রীবরদীতে ২০টি ও ঝিনাইগাতীতে ২৫টি ঘর রয়েছে। এগুলো প্রতিবন্ধী, ভিক্ষুক, রিকশাচালক, দিনমজুর, বিধবা, কাজের মহিলাসহ বিভিন্ন পেশার মানুষের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে দেওয়া হয়। ঘর নির্মাণে মোট ব্যয় হয়েছে ৩ কোটি ১৭ লাখ ৩০ হাজার টাকা।
৩ বছর আগে
জনগণের জীবন-জীবিকা নিশ্চিতে কাজ করছে সরকার: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন যে, সীমিত সম্পদ দিয়েই সমাজের সুবিধাবঞ্চিত মানুষ থেকে শুরু করে সকলের জীবনমান উন্নয়নের চেষ্টা করছে সরকার।
রবিবার প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় ৫৩,৩৪০টি আধা-পাকা বাড়ি ভূমিহীনদের মাঝে হস্তান্তর অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন: দারিদ্র্য হার কমাতে প্রবৃদ্ধি বাড়াতে চায় সরকার
তিনি বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি আমাদের সীমিত সম্পদ দিয়ে সাধারণ এবং সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জীবন ও জীবিকা নিশ্চিত করতে। এটাই আমাদের লক্ষ্য’
আরও পড়ুন: দেশে আন্তর্জাতিক মানের ভ্যাকসিন ইনস্টিটিউট তৈরি করা হবে: প্রধানমন্ত্রী
আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় রংপুর বিভাগে ১২,৪৩৬ টি, চট্টগ্রাম বিভাগে ১০,৫৪৭টি, ঢাকা বিভাগে ৭,৬৩০ টি, রাজশাহী বিভাগে ৭,১৭২টি, বরিশাল বিভাগে ৭,১৫৩ টি, খুলনা বিভাগে ৯১১ টি, ময়মনসিংহ বিভাগে ২,৫১২ টি এবং সিলেট বিভাগে ১,৯৭৯ টি আধা-পাকা ঘর জমির মালিকানাসহ হস্তান্তর করা হয়।
আরও পড়ুন: মুক্তিযোদ্ধাদের শেষ শ্রদ্ধায় নারী কর্মকর্তায় আপত্তি, প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ আহ্বান
এসময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই সমাজের অতি দরিদ্র শেণির মানুষদের সাহায্য করার চেষ্টা করছে এবং বর্তমানে এর ফলাফল চোখে পড়ছে। ‘অতি দরিদ্ররা এখন স্বনির্ভর হতে শিখছে...তারা সমাজের সামনের দিকে এগিয়ে আসছে...আমরা এমনটা ই চাই,’ বলেন শেখ হাসিনা।
আরও পড়ুন: আঞ্চলিক প্রভাবশালী রাষ্ট্রে পরিণত হচ্ছে বাংলাদেশ: ডেভিড ব্রুস্টার
দেশের গ্রামাঞ্চলগুলোতে শিক্ষা ও সুচিকিৎসা নিশ্চিত করার পাশাপাশি সমৃদ্ধশালী করে গড়ে তোলাই সরকারের অর্থনৈতিক পরিকল্পনা বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘গ্রামকে উন্নত করাই আওয়ামী লীগের নীতি, আর এটাই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদে শিখিয়েছেন।’
৩ বছর আগে