দুর্যোগ
সরকারের ‘দুর্যোগ সহনীয় ঘরের’ পিলার ভেঙ্গে বৃদ্ধার মৃত্যু
গৃহহীনের জন্য সরকারের ‘দুর্যোগ সহনীয় ঘর’এর পিলার ভেঙ্গে হবিগঞ্জে এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। ঘর নির্মাণের তিন বছরের মাথায় কোন দুর্যোগ ছাড়াই ভেঙে পড়েছে সেই ঘর। শনিবার সন্ধ্যায় জেলার বানিয়াচং উপজেলার মাদারিটুলা মহল্লায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত শিরাপজান বিবি (৮৯) মাদারিটুলা মহল্লার মৃত নেয়ামত উল্লাহর স্ত্রী।
স্থানীয়রা জানান, নেয়ামত উল্লাহ’র ছেলে শরিফ উল্লাহর জায়গা থাকলেও কোন ঘর ছিল না। ২০১৯ সালে গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) ও কাজের বিনিময়ে টাকা (কাবিটা) কর্মসূচির বিশেষ বরাদ্দের অর্থ দিয়ে সারাদেশে এক লাখ ২৫ হাজার ঘর দেয় সরকার। এ সময় শরিফ উল্লাহ একটি ঘর বরাদ্দ পান।
আরও পড়ুন: কেরানীগঞ্জে অগ্নিদগ্ধ হয়ে বৃদ্ধার মৃত্যু
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. জাহাঙ্গীর মিয়া জানান, শনিবার সন্ধায় শিরাপজান বিবি ঘরের বারান্দার একটি পিলারের সঙ্গে হেলান দিয়ে চেয়ারে বসা ছিলেন। হঠাৎ পিলারটি ভেঙে তার উপর পড়ে যায়। এতে তিনি গুরুত্বর আহত হন। পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে বানিয়াচং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
বানিয়াচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পদ্মাসন সিংহ বলেন, ‘তিন বছর আগে নির্মাণ করা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রনালয়ের বরাদ্দের একটি ঘরে বাস করতেন বৃদ্ধার পরিবার। তবে তার মৃত্যুর ঘটনাটি আমরা নেহাতই একটি দুর্ঘটনা হিসেবে দেখছি। আপাতত উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহতের দাফনের টাকা দেয়া হচ্ছে। পরবর্তীতে ওই পরিবারকে আর্থিক সহায়তা করা হবে।
বানিয়াচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এমরান হোসেন বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তবে নিহতের ছেলের জেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে একটি আবেদনের প্রেক্ষিতে ময়না তদন্ত ছাড়াই লাশ দাফন করা হয়।
আরও পড়ুন: দশ হাসপাতাল ঘুরে শয্যা না পেয়ে বৃদ্ধার মৃত্যু
২ বছর আগে
খুলনায় বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের ‘এক টাকায় আহার’
খুলনায় অসহায় মানুষের জন্য শুরু হয়েছে এক টাকায় আহার বিতরণ কার্যক্রম। স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের আয়োজনে মহানগরী ও জেলার তিনটি স্পটে বিতরণ করা হয়েছে এক টাকার আহার।
শুক্রবার রূপসার রাজাপুরের একটি বস্তিতে শতাধিক অসহায় মানুষকে এক টাকায় আহার বিতরণ করা হয়েছে। এর আগে গত বৃহস্পতিবার প্রথম দিন জোড়া খাসি দিয়ে এক টাকার আহার বিতরণ কার্যক্রম শুরু করা হয়। প্রতিদিন তাদের এ কার্যক্রম চলবে। পাশাপাশি অসহায় মানুষকে ত্রাণ বিতরণ করা হবে।
আরও পড়ুনঃ বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের ভাসমান হাসপাতালের যাত্রা শুরু
ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবকরা জানায়, শুক্রবার ভাত ও মুরগির গোশত রান্না করে নগরীর জেলাখানা ঘাটের ওপারে রূপসা উপজেলার রাজাপুরের এক টাকায় শতাধিক হত দরিদ্র মানুষকে আহার দেওয়া হয়েছে। এদিন সবুরণনেছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাঙ্গনে ১০৫ জন অসহায় দুস্থ শিশুদের মধ্যে এক টাকার আহার বিতরণ করা হয়। এ সময় প্রতিটি শিশু এক টাকার বিনিময় এই খাদ্য গ্রহণ করে।
এর আগে বৃহস্পতিবার নগরীর ফুলবাড়িগেটে এ্যাজাক্স জুট মিল শ্রমিকদের শিশু ও দৌলতপুর মহেশ্বরপাশা এলাকায় জোড়া খাসির গোশত ও ভাত দিয়ে এক টাকায় আহার কার্যক্রম শুরু করা হয়। ওই দিন ২৫০ জন শিশু ও বৃদ্ধদের খাবার বিতরণ করা হয়।
তারা বলেন, এক বেলার এই খাবার যেন অসহায় মানুষেরা ভিক্ষাবৃত্তি বলে মনে না করেন সেজন্য সবার কাছ থেকে এক টাকা নেয়া হচ্ছে। এক টাকায় এক প্যাকেট খাবার পেয়ে খুশিতে আত্মহারা দরিদ্র মানুষগুলো।
বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন খুলনা শাখার দায়িত্বরত কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান সম্রাট বলেন, ১ আগস্ট নগরীর সোনাডাঙ্গা গোবরচাকা মোল্লাবাড়ি মোড়ের শিকদার প্লাজায় অফিস নিয়ে কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। এখন থেকে খুলনা শাখার আওতায় প্রতিদিন এক টাকায় আহার বিতরণ করা হবে। শুধুমাত্র দরিদ্র, অসহায় ও বঞ্চিতদের এ খাবার দেয়া হবে। পাশাপাশি ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম চলবে। তবে বৃহস্পতিবার প্রথম জোড়া খাসি রান্না করে এক টাকায় আহার বিতরণ কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। আজ দ্বিতীয় দিনের মতো জেলখানা ঘাটের নদীর ওপারে এক টাকায় আহার বিতরণ করা হয়। এছাড়া আজ আমরা সাতক্ষীরার গাবুরা ও কয়রার গেতেরঘেরীতে ত্রাণ বিতরণ করেছি।
তিনি বলেন, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল যেহেতু দুর্যোগ প্রবণ এলাকা। এখানে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন ত্রাণ কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছিল। এখানকার উপকূল অঞ্চলের মানুষের ক্ষতি বেশি হয়। তাদের পাশে দাঁড়াতে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন কাজ করে যাচ্ছে। গত এক মাসে খুলনা বিভাগের যশোর, নড়াইল, কুষ্টিয়া, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা জেলায় ত্রাণ বিতরণ করা হয়।
৩ বছর আগে
দুর্যোগ ঝুঁকিতে কয়রার হাজার হাজার মানুষ
সিডর, আইলা, মহসিন, বুলবুল, আম্পান ও ইয়াসের মত ঝড়, বন্যা, জলোচ্ছ্বাস প্রতিনিয়ত আঘাত হানে উপকূলীয় খুলনা জেলার উপকুলীয় কয়রা উপজেলায়। ঝড়-বন্যা-জলোচ্ছ্বাসের সাথে যুদ্ধ করে টিকে থাকতে হয় উপকূলের মানুষের। প্রতি বছর যখনই ঝড় বন্যায় নদীর পানি বৃদ্ধি পায় তখন পানি উন্নয়ন বোর্ডের দুর্বল বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে। ক্ষতিগ্রস্ত হয় উপকূলের মানুষ। ভেসে যায় মৎস্য ঘের, ফসলি জমিসহ ঘর বাড়ি।
স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে সেই বাঁধ আবার নির্মাণ হয়। অনেক সময় পানি উন্নয়ন বোর্ড ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধে দায়সারা ভাবে কাজ করে। তবে দুর্বল বেড়িবাঁধ কখনোই টেকসই বেড়িবাঁধ হয়ে ওঠে না। বাধেঁর তদারকি না করায় আবারও ভেঙে প্লাবিত হয়। এমনই অভিযোগ উপকূলবাসীর।
উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের মঠবাড়ি গ্রামের সুবোলের মোড় থেকে মঠবাড়ি পুলিশ ক্যাম্প পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ভেকু মেশিন দিয়ে মাটি তুলে নির্মাণ কাজ চলছে।
আরও পড়ুন: রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শক্তিশালী ভূমিকম্প
এলাকাবাসীর দেওয়া তথ্য মতে, ষাট দশকের দূর্বল বেড়িবাঁধ নির্মাণ না হওয়ায় প্রতি বছর ঝড়, বন্যা, জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেয়ে, কোথাও বেড়িবাঁধ ভেঙে, কোথাও বেড়িবাঁধ উপচে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে। চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয় এলাকাবাসী। কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ডের উদাসীনতায় আইলার এক যুগেও নির্মাণ করা হয়নি এই বেড়িবাঁধ। তাই নদী ভাঙ্গনের ক্ষতি থেকে রক্ষা পেতে এলাকাবাসীর অর্থায়নে শুরু হয়েছে বেড়িবাঁধের নির্মাণ কাজ।
মঠবাড়ি গ্রামের বিপুল সরকার বলেন, প্রতিবছর কোন না কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগে বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয় আমাদের ঘর বাড়িসহ আমাদের আয়ের প্রধান উৎস মাছের ঘের। তাই আমরা প্রাকৃতিক দুর্যোগের হাত থেকে রক্ষা পেতে নিজেরা ঘের মালিকদের কাছ থেকে টাকা তুলে বাঁধের উপর মাটি দিয়ে বাঁধ মজবুত করার চেষ্টা করছি।
আরও পড়ুন: আবারও ভূমিকম্পে কেঁপে উঠলো সিলেট
২ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বর নিরাপদ মন্ডল বলেন, ২০০৯ সালের ঘুর্ণিঝড় আইলার পর থেকে এখন পর্যন্ত কয়রা নদীর পাউবোর বাঁধের উপর পানি উন্নয়ন বোর্ড এক চাপ মাটিও দেয়নি। এবারে ইয়াসে বাঁধ উপচিয়ে ও ভেঙে মঠবাড়ি গ্রামের ৪ টা চর সহ পার্শ্ববর্তী মহারাজপুর গ্রাম প্লাবিত হয়ে গেছে। প্রতি বছর কোন না কোন দুর্যোগে প্লাবিত হয় আর এলাকাবাসী স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে সেই বাঁধ নির্মাণ করে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের উদাসীনতায় আজও এই বেড়িবাঁধে মাটি দেওয়া হয়নি। এজন্য এলাকাবাসীর সম্মিলিত চেষ্টায় আমরা বাঁধটি মেরামত করছি।
মহারাজপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘এলাকাবাসী নিজেদের অর্থায়নে যে রাস্তাটির কাজ করছে ওখানে পানি উন্নয়ন বোর্ড রাস্তার কাজ করার জন্য প্রস্তাবনায় রেখেছিলো। কিন্তু পাশ হওয়ার আগেই ঘুর্ণিঝড় ইয়াসে বাঁধ ভেঙে যায়। ওখানে একটা প্রকল্প দিয়ে এলাকাবাসীর অর্থ যাতে ফেরত দেওয়া যায় তার ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আমি পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলেছি।’
আরও পড়ুন: সপ্তাহের ব্যবধানে সিলেটে ফের ভূমিকম্প অনুভূত
পানি উন্নয়ন বোর্ডের ১৩/১৪-১ নম্বর ফোল্ডারের দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেন বলেন, এলাকাবাসী নিজের অর্থায়নে কাজ করছে জানতে পেরে আমি সেখানে গিয়েছলাম। ওখানকার কাজের প্রস্তাবনা দেওয়া আছে। যেহেতু এলাকাবাসী কাজ করছে, এজন্য উপজেলা প্রশাসনের সাহায্য নিয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী স্যার বরাবর একটি আবেদন করার জন্য তাদেরকে বলা হয়েছে। আমাদের অফিসের নিয়মানুযায়ী সেখানে একটা প্রকল্প দিয়ে এলাকাবাসীর টাকা ফেরত দেওয়ার চেষ্টা করা হবে।
আরও পড়ুন: জলোচ্ছ্বাসে ডুবেছে সুন্দরবন, ভেসে আসছে বন্য প্রাণী
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাসেদুল ইসলাম বলেন, ‘জনগণ নিজেরা কাজ করছে এটা আমার জানা নেই। আর যদি কাজ করে থাকে সেখানে আমরা এই সময়ে কাজ করবোনা।’
এদিকে আইলা, সিডর, আম্পান তারপর ইয়াস, উপকুলীয় জনপদ কয়রাকে ছিন্নভিন্ন, বিপন্ন, বিপর্যস্ত করেছে। মানবতার চরম বিপর্যয় ঘটিয়েছে, প্রকৃতির রুদ্রমুর্তি ছিল সিডর, আইলা আর আম্ফানে কিন্তু সদ্য আবির্ভূত হয়ে শেষ হওয়া ইয়াসের রুদ্রমূর্তি থাকলেও বিপন্নতা আর জন মানুষের চরম ক্ষয়ক্ষতির দোরগোড়ায় নিয়েছে। উপজেলার প্রায় ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দী জীবন যাপন করছে।
আরও পড়ুন: বন্যপ্রাণী হত্যা ও পাচার রোধে সুন্দরবনে রেড এ্যালার্ট
আম্পানের ক্ষত শুকায়নি দক্ষিণ বেদকাশি, উত্তর বেদকাশি ও কয়রা সদরের বিস্তীর্ণ জনপদে, তার উপর গত ২৬ মে ইয়াস, কয়রা বরাবরই দুর্যোগ প্রবন এলাকা এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ দুর্বিপাকে সর্ব প্রথম আঘাত হানে বেড়িবাধগুলোতে, কিন্তু বাস্তবতা হলো সাতক্ষীরার পানি উন্নয়ন বোর্ড কয়রাবাসীকে রক্ষার মূলস্তম্ভ বেড়িবাঁধগুলোর যথাযথ সংরক্ষন, সুদৃঢ়, মজবুত ও টেকসই করেনি, যার খেসারাত দিতে হচ্ছে লাখ লাখ মানুষের।
কেবল জীবন যাত্রায় বিপন্নতা নয়, অর্থনীতিতেও নেমে এসেছে দুরবস্থা। বাঁধ ভেঙ্গে গ্রামের পর গ্রামে প্রবেশ করেছে নদী আর সাগরের লবণাক্ত পানি যা জনসাধারণের বসত ঘর, রান্না ঘর ছুইছে। গবাদী পশু আর মানুষ একই সাথে বসবাস করছে। সাপ, ব্যাঙ, মাছ আর মানুষ একই বৃত্তে দিন ও রাত যাপন করে চলেছে।
ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের তাণ্ডব প্রত্যক্ষ করা যায়নি, অর্থাৎ ঝড় বা ব্যাপক ঝড় বাতাস প্রত্যক্ষ করা যায়নি কিন্তু পানি প্রবাহের অবিরাম অনুপ্রবেশ, একের পর এক বাঁধ ভেঙ্গে জনপদ প্লাবিত হওয়া যেন জীবনের সাথে জীবনের যুদ্ধাবস্থা।
কোটি কোটি টাকার চিংড়ি ভেসে গেছে, ঘের ব্যবসায়ীদের একটি অংশ পথে বসতে চলেছে। গত কয়েক দিন যাবৎ নদী সংলগ্ন ঘেরগুলোতে জোয়ারের সময়ে পানি প্রবেশ করছে ভাটায় নেমে যাচ্ছে। অনেক ঘের ব্যবসায়ীরা মওসুমের প্রথম চালানের চিংড়ি বাজারজাত করতেও পারেনি। কেবল চিংড়ি নয় ভেসে গেছে কোটি কোটি টাকার সাদা প্রজাতির মাছ।
সম্প্রতি ২/১ বছর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক ভাবে সাদা প্রজাতির মাছ চাষ হচ্ছে। চিংড়ি ঘেরগুলোতে আষাঢ়, শ্রাবণ মাসে পানির লবণাক্ততা হ্রাস পেলে সাদা প্রজাতির মাছ ছাড়া হয়, আর সেই পরিস্থিতিতে সাদা মাছ চাষে বিশেষ বিপ্লব হয়েছে। কিন্তু সর্বনাশ ইয়াস আর দুর্বল, অরক্ষিত বেড়িবাধ ভেঙ্গে যাওয়ায় চাষীদের স্বপ্ন আর অর্থ দুটোই সর্বশান্ত হয়েছে।
বীজতলায় পানি জমেছে, নানান ধরনের রবিশষ্য, কাটা খদ নষ্ট হয়েছে দক্ষিণ বেদকাশি, উত্তর বেদকাশি, কয়রা সদর, মহারাজপুর আর বাগালী ইউনিয়নে। মানুষের কান্না, আতঙ্ক আর উদ্বেগে একাকার। চেষ্টা করছে বেঁচে থাকবার, আর তাই স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে বেড়িবাঁধ নির্মানে দিন রাত কাজ করছে জনসাধারণ। যত ক্ষোভ আর অনিষ্টের কারণ হিসেবে চিহ্নিত করছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডকে।
জনসাধারণের এই চরম দুঃসময়ে কেবল উচ্চারণ হচ্ছে বেড়িবাঁধ না ভাঙ্গলে এমন ক্ষতি হতো না।
উপকুলীয় এলাকার সর্বশান্ত মানুষগুলোর বারবার উচ্চারণ তারা ‘ত্রাণ নয় তারা চায় টেকসই বাঁধ, যে বাঁধ নদীর উত্তাল স্রোতধারাকে রোধ করবে, প্রকৃতির হিংস্রতাকে প্রতিহত করবে। বারবার অর্থ বরাদ্ধ হয়, ভাঙ্গনরোধে কাজ হয়, কিন্তু বাস্তবতা হলো সেই কাজ কতটুকু টেকসই, মজবুত ও স্থায়ী বাঁধের জন্য যথাযথ?
কয়রা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ভাংগন রোধে দৃশ্যত স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে কাজ চলছে। কয়রা উপজেলা প্রশাসন ভাঙ্গন কবলিত, পানি বন্দী মানুষের পাশে থাকছেন। বিশেষ করে বাঁধ নির্মাণে সশরীরে উপস্থিত থাকছেন।
উপকুলীয় এ জনপদ কয়রার সর্বস্তরের মানুষের প্রত্যাশা কয়রা উপজেলা প্রশাসন যন্ত্র সরকারের উচ্চমহলকে অবহিত করবেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের দায়িত্বহীনতায় উপজেলাবাসী কতটুকু ক্ষতিগ্রস্ত এবং স্থায়ী বাঁধ নির্মাণে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
৩ বছর আগে
ভূমিকম্প ঝুঁকি কমাতে বিল্ডিং কোড হালনাগাদ হচ্ছে: দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী
ঝুঁকিপূর্ণ ভবনসমূহ রেট্রোফিটিংসে'র মাধ্যমে ভূমিকম্প সহনীয় করার কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা: মোঃ এনামুর রহমান।
তিনি বলেন, ভূমিকম্পে প্রাণহানি ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে ইতিমধ্যে দেশের ছয়টি সিটি করপোরেশন ও তিনটি জেলার ভূমিকম্প ঝুঁকি মানচিত্র তৈরি করা হয়েছে। ভূমিকম্পসহ যেকোনো দুর্যোগ থেকে উত্তরণের জন্য জাতীয় কন্টিনজেন্সি প্ল্যানও তৈরি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: সপ্তাহের ব্যবধানে সিলেটে ফের ভূমিকম্প অনুভূত
বৃহস্পতিবার সিলেটে আয়োজিত "ভূমিকম্প ঝুঁকি হ্রাস বিষয়ক অবহিতকরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী। ভূমিকম্প সহনশীল ভবন নির্মাণে বিল্ডিং কোড হালনাগাদের লক্ষ্যে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সাথে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় একযোগে কাজ করছে বলে জানান মন্ত্রী।
এ সময় তিনি বলেন, ভূমিকম্প এমন একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ যার পূর্বাভাস দেয়ার উপায় এখনো বের করা যায়নি। আমাদের দেশের প্রধান প্রধান শহরগুলোতে মানুষ বাড়ার পাশাপাশি আবাসিক-অনাবাসিক স্থাপনা বাড়ছে পাল্লা দিয়ে। কিন্তু এসব স্থাপনা কতটা মানসম্পন্ন, বড় ধরনের ভূমিকম্পে সেগুলো টিকে থাকবে কিনা এই আশঙ্কা প্রবল। ভূমিকম্পের মত দুর্যোগে নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে প্রয়োজনীয় খোলা জায়গাও নেই আমাদের বড় শহরগুলোতে। অভিযোগ রয়েছে দেশে ভবন নির্মাণে বিল্ডিং কোড মানা হয়না। ফলে মাঝারি ধরনের ভূমিকম্পও বিপর্যয়ের কারণ হতে পারে। আর বড় ধরনের ভূমিকম্প ডেকে আনতে পারে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়। তাই ভূমিকম্পের বিপর্যয় থেকে রক্ষা পেতে সব ধরনের অবকাঠামো দূর্যোগ মোকাবেলার উপযোগী করে গড়ে তুলতে কার্যক্রম চলমান রয়েছে ।
আরও পড়ুন: আবারও ভূমিকম্পে কেঁপে উঠলো সিলেট
এনামুর রহমান বলেন,বড় ধরনের ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি কতটা নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে তা বলা মুশকিল, তবে প্রস্তুতি থাকলে মোকাবিলা করতে সুবিধা হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার সে কাজটাই করে যাচ্ছে। এ জন্য দল-মত নির্বিশেষে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ মোহসীন বলেন, বর্তমানে দেশে ভূমিকম্পন পরিমাপের জন্য ১০টি স্টেশন রয়েছে। জাপান থেকে ভূমিকম্প ও সুনামি বিষয়ে (জাপানের) টোকিও'র জিআরআইপিএস ইউনিভার্সিটি থেকে মাস্টার্স অব ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্টে দুই বছরের কোর্স সমাপ্ত করে চারজন বিজ্ঞানীর মধ্যে একজন সিলেট স্টেশনে কর্মরত আছেন। ভূমিকম্পসহ অন্যান্য দুর্যোগে দ্রæত উদ্ধার ও অনুসন্ধান কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সি সার্চবোট, মেরিন রেস্কিউ বোট, মেগাফোন সাইরেনসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম, যন্ত্রপাতি ও যানবাহন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর এবং সশস্ত্র বাহিনী বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে দেয়া হয়েছে। এ কাজ সহজ করার জন্য আরো অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামাদি সংগ্রহের কাজ চলছে ।
আরও পড়ুন: রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শক্তিশালী ভূমিকম্প
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ মোহসীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন, বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়(বুয়েট) এর অধ্যাপক ড. তাহামিদ এম আল হোসাইন, সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ডঃ জহির বিন আলম, আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ডক্টর শারমিম রেজা চৌধুরী, গণপূর্ত বিভাগের তত্ত¡াবধায়ক প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম, আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক শামসুদ্দিন আহমেদ, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাজ্জাদ হোসাইন, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক এবং সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এডভোকেট মোঃ লুৎফুর রহমান।
৩ বছর আগে
বাংলাদেশের মানুষকে কোনো দুর্যোগ পরাজিত করতে পারেনি: কাদের
বাংলাদেশের মানুষ সবসময় দায়িত্বশীলতার সাথে সব ধরনের দুর্যোগ মোকাবিলা করেছে এবং কখনও তারা পরাজিত হয়নি উল্লেখ করে, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
৪ বছর আগে
ঘূণিঝড় ফণির আঘাতে ভারতে তিনজনের মৃত্যু
নয়াদিল্লি, ০৩ মে (সিনহুয়া/ইউএনবি)- খুবই প্রবল ঘূর্ণিঝড় ফণির আঘাতে ভারতের উড়িষ্যায় তিনজন মারা গেছেন। ঘূর্ণিঝড়টি শুক্রবার সকালে রাজ্যটিতে আঘাত হানে।
৫ বছর আগে
ফণি মোকাবিলায় সমন্বিতভাবে কাজ করুন: প্রধানমন্ত্রী
ঢাকা, ০৩ মে (ইউএনবি)- বর্তমানে লন্ডনে অবস্থানরত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রবল ঘূর্ণিঝড় ফণি মোকাবিলায় সব সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাকে সমন্বিতভাবে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন।
৫ বছর আগে
ফণি দেশে আঘাত হানতে পারে শুক্রবার মাঝরাত থেকে শনিবার সকালের মধ্যে
ঢাকা, ০৩ মে (ইউএনবি)- অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ফণি শুক্রবার মাঝরাত ও শনিবার সকালের মধ্যে খুলনা ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে আঘাত হানতে পারে বলে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে।
৫ বছর আগে
বাগেরহাটে ফণির প্রভাবে অর্ধ শতাধিক ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত, নিহত ১
বাগেরহাট, ০৩ মে (ইউএনবি)- শরণখোলা উপজেলায় ঘূর্ণিঝড় ফণির প্রভাবে নদীতে জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ১-২ ফুট উঁচু দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বলেশ্বর নদের তীর ভেঙে বগি গ্রামের অর্ধ শতাধিক ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
৫ বছর আগে
শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌপথে ফেরি চলাচল বন্ধ
মুন্সিগঞ্জ, ০৩ মে (ইউএনবি)- ঘূর্ণিঝড় ফণির আঘাত মোকাবিলায় দক্ষিণাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ নৌপথ শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়িতে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
৫ বছর আগে