বুলবুল
নিহত বুলবুলের বুক পিঠ পাঁজরে ছুরিকাঘাতের চিহ্ন: ময়নাতদন্তের রিপোর্ট
দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে নিহত হওয়া সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থী মো. বুলবুল আহমদের বুকে, পাঁজরে, পিঠে তিনটি মারাত্মক ছুরিকাঘাত এবং হাতে আরেকটি আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) দুপুরে ওসমানী মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. শামসুল ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘বুলবুল আহমদের বুকে, পাঁজরে ও পিঠে তিনটি মারাত্মক ছুরির আঘাত এবং হাতে আরেকটি আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। ছুরিকাঘাতের কারণে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়েছে।’
এদিকে নিহত হওয়া শিক্ষার্থী বুলবুল আহমেদের সঙ্গে থাকা মেয়ে বন্ধুকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের হেফাজতে রাখা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক, হল প্রাধ্যক্ষ, বিভাগীয় প্রধান ও কাউন্সেলিং সাইকোলজিস্ট মেয়েটির সার্বক্ষণিক নজর রাখছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলের নিজের কক্ষেই মেয়েটি অবস্থান করছেন। গত বুধবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত বিভাগীয় প্রধান ও কাউন্সেলিং সাইকোলজিস্ট মেয়েটির সঙ্গে স্বাভাবিক সময় কাটানোর চেষ্টা করেছেন। এছাড়াও মেয়েটির সঙ্গে থাকা সহপাঠীদেরও খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুৃন: শাবিপ্রবি শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় আটক ৩
বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. ফারজানা সিদ্দিকা বলেন, ছুরিকাঘাতে নিহত শিক্ষার্থী বুলবুলের ঘটনাটি আমাদের সবার জন্য হৃদয়বিদারক। এই ঘটনায় পাশে থাকা তার মেয়ে বন্ধু একধরনের মানসিক ট্রমায় ভুগছে। আমরা চাইছি মেয়েটিকে স্বাভাবিক একটি নিয়মে ফেরাতে। এছাড়াও মেয়েটির সঙ্গে থাকা সহপাঠীদের মাঝেও যে একটি ভয় কাজ করছে তা দূর করতে আমরা সর্বত্র কাজ করছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কাউন্সেলিং সাইকোলজিস্ট ফজিলাতুন্নেছা শাপলা জানান, মেয়েটি প্রথম বর্ষের। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শুরুতেই এমন একটি ধাক্কা মেয়েটির জন্য বড়ই দুঃখজনক। সরেজমিনে তার নজর রাখছি। এই ধাক্কা কাটিয়ে মেয়েটি যেনো স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারে সেজন্য বাড়তি নজর সবসময় থাকবে।
ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক আমিনা পারভীন বলেন, আমরা প্রথম থেকেই মেয়েটির সার্বক্ষণিক নজর রাখছি। মেয়েটিকে কোনো ধরনের মানসিক চাপ প্রয়োগ করা হয়নি। নিজের চোখের সামনে এমন একটি দুর্ঘটনা যে কারও মানসিকভাবে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে। মেয়েটির ক্ষেত্রেও এমনটা হয়েছে। মেয়ে ও নিহত শিক্ষার্থী বুলবুল দুজনই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। অপরাধে জড়িতদের দ্রুত ধরতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তথ্য সংগ্রহের জন্য মেয়েটির সঙ্গে সবসময় কোমল আচরণ করেছেন।
এদিকে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার আজবাহার আলী শেখ আসামি গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে বুধবার সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ছিনতাই করতেই খুন করা হয় শাবি শিক্ষার্থী বুলবুল আহমেদকে। এ ঘটনার সঙ্গে আর কোনো ঘটনার সম্পৃক্ততা নেই।
ঘটনার পর বুলবুলের সঙ্গে থাকা মেয়ে বন্ধুর হাসপাতাল ত্যাগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ওই ছাত্রী তাদের জানিয়েছেন, বুলবুলের লাশ ক্যাম্পাসে নেয়া হবে। শেষ দেখার জন্য তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে গেছেন। এর পেছনে অপরাধমূলক কোনো কিছু পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া তাঁর কললিস্ট চেক করে গ্রেপ্তারদের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুৃন: শাবি শিক্ষার্থী বুলবুল হত্যায় ৩ জনের সম্পৃক্ততা মিলেছে: পুলিশ
নিহত বুলবুলের পরিবারকে ৫ লাখ টাকা দিচ্ছে শাবিপ্রবি প্রশাসন
২ বছর আগে
নিহত বুলবুলের পরিবারকে ৫ লাখ টাকা দিচ্ছে শাবিপ্রবি প্রশাসন
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) ক্যাম্পাসে ছুরিকাঘাতে নিহত শিক্ষার্থী বুলবুল আহমেদের পরিবারকে পাঁচ লাখ টাকার আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বুধবার (২৭ জুলাই) দুপুরে প্রশাসনিক ভবনের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, আগামী সপ্তাহে বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিল থেকে এই টাকা বুলবুলের পরিবারের কাছে টাকা পৌঁছে দেয়া হবে।
উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন বলেন, ক্যাম্পাসের বেশিরভাগ জায়গায়ই ক্লোজড সার্কিট টেলিভিশিন ক্যামেরা (সিসিটিভি) আছে। যেসব জায়গায় এখনও ক্যামেরা নেই দ্রুত সেসব জায়গায় ক্যামেরা বসানো হবে।
এ সময় তিনি পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকায় সন্তুোষ প্রকাশ করে বলেন, ‘পুলিশ খুব দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছে। ইতোমধ্যে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে। অতি দ্রুতই এই হত্যা রহস্য উদঘাটন হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।’
এই হত্যার ঘটনাকে দুঃখজনক উল্লেখ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সবার সহযোগিতা কামনা করেন উপাচার্য।
পড়ুন: শাবি শিক্ষার্থী বুলবুল হত্যায় ৩ জনের সম্পৃক্ততা মিলেছে: পুলিশ
শাবিপ্রবিতে নিহত শিক্ষার্থীর বান্ধবীকে নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন
২ বছর আগে
শাবি শিক্ষার্থী বুলবুল হত্যায় ৩ জনের সম্পৃক্ততা মিলেছে: পুলিশ
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থী বুলবুল হত্যা মামলায় তিনজনের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
বুধবার (২৭ জুলাই) আটকদের জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাদের মধ্যে একজন কামরুল হোসেন (৩০)। কামরুল টিলারগাঁওয়ের গোলাপ মিয়ার ছেলে। তিনি আশপাশের এলাকায় রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। এ ঘটনায় মোট পাঁচ জনকে আটক করা হয়েছে।
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার আজবাহার আলী শেখ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, অভিযুক্ত তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এরপর বেলা ১১টায় অভিযুক্ত কামরুলকে সঙ্গে নিয়ে টিলারগাঁও এলাকায় তার বাড়িতে যায় পুলিশ। এ সময় কামরুলের ঘরের সানসেটের ভেতর থেকে একটি দেশীয় অস্ত্র (চাকু) ও নিহত বুলবুলের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন উদ্ধার করে পুলিশ।
তিনি আরও বলেন, ঘটনার পরপরই আমরা জোর তদন্তে নামি। তদন্তের এক পর্যায়ে সন্দেহজনক তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করি। তার মধ্যে একজন খুনে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আরও দুজন জড়িত থাকার তথ্য দেন। এই তিনজনকে ব্যাপকভাবে আলাদা আলাদাভাবে জিজ্ঞেস করে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাই।
আজবাহার আলী বলেন, গ্রেপ্তার কামরুলকে নিয়ে তার বাড়িতে আসলে তার দেখানো মতে বুলবুলের মুঠোফোন উদ্ধার ও খুনে ব্যবহৃত ছোরা উদ্ধার করতে সক্ষম হই। তবে কেন বুলবুলকে হত্যা করেছে, তাদের কি উদ্দেশ্য ছিল, মূল মোটিভ ছিল কি, আরও কেউ জড়িত কি-না, কার সম্পৃক্ততা কতটুকু বিস্তারিত তদন্ত সাপেক্ষে পরে জানানো হবে।
গত সোমবার (২৫ জুলাই) সন্ধ্যার পর ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরের টিলায় ঘুরতে গিয়ে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে নিহত হন লোকপ্রশাসন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. বুলবুল আহমেদ (২২)। তার বাড়ি নরসিংদী জেলায়।
এ ঘটনার পর সোমবার রাতে সিলেট মহানগরের জালালাবাদ থানায় মামলা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মুহাম্মদ ইশফাকুল হোসেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, বন্ধুদের নিয়ে টিলায় বেড়াতে গিয়ে দুষ্কৃতকারীদের উপর্যুপরি ছুরিকাঘাতে বুলবুল নিহত হন। বুকের বাম পাশে ছুরিকাঘাতে প্রচুর রক্তক্ষরণে বুলবুল মারা যান বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
পড়ুন: শাবিপ্রবিতে নিহত শিক্ষার্থীর বান্ধবীকে নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন
শাবিপ্রবি শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় আটক ৩
২ বছর আগে
দুর্যোগ ঝুঁকিতে কয়রার হাজার হাজার মানুষ
সিডর, আইলা, মহসিন, বুলবুল, আম্পান ও ইয়াসের মত ঝড়, বন্যা, জলোচ্ছ্বাস প্রতিনিয়ত আঘাত হানে উপকূলীয় খুলনা জেলার উপকুলীয় কয়রা উপজেলায়। ঝড়-বন্যা-জলোচ্ছ্বাসের সাথে যুদ্ধ করে টিকে থাকতে হয় উপকূলের মানুষের। প্রতি বছর যখনই ঝড় বন্যায় নদীর পানি বৃদ্ধি পায় তখন পানি উন্নয়ন বোর্ডের দুর্বল বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে। ক্ষতিগ্রস্ত হয় উপকূলের মানুষ। ভেসে যায় মৎস্য ঘের, ফসলি জমিসহ ঘর বাড়ি।
স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে সেই বাঁধ আবার নির্মাণ হয়। অনেক সময় পানি উন্নয়ন বোর্ড ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধে দায়সারা ভাবে কাজ করে। তবে দুর্বল বেড়িবাঁধ কখনোই টেকসই বেড়িবাঁধ হয়ে ওঠে না। বাধেঁর তদারকি না করায় আবারও ভেঙে প্লাবিত হয়। এমনই অভিযোগ উপকূলবাসীর।
উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের মঠবাড়ি গ্রামের সুবোলের মোড় থেকে মঠবাড়ি পুলিশ ক্যাম্প পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ভেকু মেশিন দিয়ে মাটি তুলে নির্মাণ কাজ চলছে।
আরও পড়ুন: রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শক্তিশালী ভূমিকম্প
এলাকাবাসীর দেওয়া তথ্য মতে, ষাট দশকের দূর্বল বেড়িবাঁধ নির্মাণ না হওয়ায় প্রতি বছর ঝড়, বন্যা, জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেয়ে, কোথাও বেড়িবাঁধ ভেঙে, কোথাও বেড়িবাঁধ উপচে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে। চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয় এলাকাবাসী। কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ডের উদাসীনতায় আইলার এক যুগেও নির্মাণ করা হয়নি এই বেড়িবাঁধ। তাই নদী ভাঙ্গনের ক্ষতি থেকে রক্ষা পেতে এলাকাবাসীর অর্থায়নে শুরু হয়েছে বেড়িবাঁধের নির্মাণ কাজ।
মঠবাড়ি গ্রামের বিপুল সরকার বলেন, প্রতিবছর কোন না কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগে বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয় আমাদের ঘর বাড়িসহ আমাদের আয়ের প্রধান উৎস মাছের ঘের। তাই আমরা প্রাকৃতিক দুর্যোগের হাত থেকে রক্ষা পেতে নিজেরা ঘের মালিকদের কাছ থেকে টাকা তুলে বাঁধের উপর মাটি দিয়ে বাঁধ মজবুত করার চেষ্টা করছি।
আরও পড়ুন: আবারও ভূমিকম্পে কেঁপে উঠলো সিলেট
২ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বর নিরাপদ মন্ডল বলেন, ২০০৯ সালের ঘুর্ণিঝড় আইলার পর থেকে এখন পর্যন্ত কয়রা নদীর পাউবোর বাঁধের উপর পানি উন্নয়ন বোর্ড এক চাপ মাটিও দেয়নি। এবারে ইয়াসে বাঁধ উপচিয়ে ও ভেঙে মঠবাড়ি গ্রামের ৪ টা চর সহ পার্শ্ববর্তী মহারাজপুর গ্রাম প্লাবিত হয়ে গেছে। প্রতি বছর কোন না কোন দুর্যোগে প্লাবিত হয় আর এলাকাবাসী স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে সেই বাঁধ নির্মাণ করে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের উদাসীনতায় আজও এই বেড়িবাঁধে মাটি দেওয়া হয়নি। এজন্য এলাকাবাসীর সম্মিলিত চেষ্টায় আমরা বাঁধটি মেরামত করছি।
মহারাজপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘এলাকাবাসী নিজেদের অর্থায়নে যে রাস্তাটির কাজ করছে ওখানে পানি উন্নয়ন বোর্ড রাস্তার কাজ করার জন্য প্রস্তাবনায় রেখেছিলো। কিন্তু পাশ হওয়ার আগেই ঘুর্ণিঝড় ইয়াসে বাঁধ ভেঙে যায়। ওখানে একটা প্রকল্প দিয়ে এলাকাবাসীর অর্থ যাতে ফেরত দেওয়া যায় তার ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আমি পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলেছি।’
আরও পড়ুন: সপ্তাহের ব্যবধানে সিলেটে ফের ভূমিকম্প অনুভূত
পানি উন্নয়ন বোর্ডের ১৩/১৪-১ নম্বর ফোল্ডারের দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেন বলেন, এলাকাবাসী নিজের অর্থায়নে কাজ করছে জানতে পেরে আমি সেখানে গিয়েছলাম। ওখানকার কাজের প্রস্তাবনা দেওয়া আছে। যেহেতু এলাকাবাসী কাজ করছে, এজন্য উপজেলা প্রশাসনের সাহায্য নিয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী স্যার বরাবর একটি আবেদন করার জন্য তাদেরকে বলা হয়েছে। আমাদের অফিসের নিয়মানুযায়ী সেখানে একটা প্রকল্প দিয়ে এলাকাবাসীর টাকা ফেরত দেওয়ার চেষ্টা করা হবে।
আরও পড়ুন: জলোচ্ছ্বাসে ডুবেছে সুন্দরবন, ভেসে আসছে বন্য প্রাণী
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাসেদুল ইসলাম বলেন, ‘জনগণ নিজেরা কাজ করছে এটা আমার জানা নেই। আর যদি কাজ করে থাকে সেখানে আমরা এই সময়ে কাজ করবোনা।’
এদিকে আইলা, সিডর, আম্পান তারপর ইয়াস, উপকুলীয় জনপদ কয়রাকে ছিন্নভিন্ন, বিপন্ন, বিপর্যস্ত করেছে। মানবতার চরম বিপর্যয় ঘটিয়েছে, প্রকৃতির রুদ্রমুর্তি ছিল সিডর, আইলা আর আম্ফানে কিন্তু সদ্য আবির্ভূত হয়ে শেষ হওয়া ইয়াসের রুদ্রমূর্তি থাকলেও বিপন্নতা আর জন মানুষের চরম ক্ষয়ক্ষতির দোরগোড়ায় নিয়েছে। উপজেলার প্রায় ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দী জীবন যাপন করছে।
আরও পড়ুন: বন্যপ্রাণী হত্যা ও পাচার রোধে সুন্দরবনে রেড এ্যালার্ট
আম্পানের ক্ষত শুকায়নি দক্ষিণ বেদকাশি, উত্তর বেদকাশি ও কয়রা সদরের বিস্তীর্ণ জনপদে, তার উপর গত ২৬ মে ইয়াস, কয়রা বরাবরই দুর্যোগ প্রবন এলাকা এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ দুর্বিপাকে সর্ব প্রথম আঘাত হানে বেড়িবাধগুলোতে, কিন্তু বাস্তবতা হলো সাতক্ষীরার পানি উন্নয়ন বোর্ড কয়রাবাসীকে রক্ষার মূলস্তম্ভ বেড়িবাঁধগুলোর যথাযথ সংরক্ষন, সুদৃঢ়, মজবুত ও টেকসই করেনি, যার খেসারাত দিতে হচ্ছে লাখ লাখ মানুষের।
কেবল জীবন যাত্রায় বিপন্নতা নয়, অর্থনীতিতেও নেমে এসেছে দুরবস্থা। বাঁধ ভেঙ্গে গ্রামের পর গ্রামে প্রবেশ করেছে নদী আর সাগরের লবণাক্ত পানি যা জনসাধারণের বসত ঘর, রান্না ঘর ছুইছে। গবাদী পশু আর মানুষ একই সাথে বসবাস করছে। সাপ, ব্যাঙ, মাছ আর মানুষ একই বৃত্তে দিন ও রাত যাপন করে চলেছে।
ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের তাণ্ডব প্রত্যক্ষ করা যায়নি, অর্থাৎ ঝড় বা ব্যাপক ঝড় বাতাস প্রত্যক্ষ করা যায়নি কিন্তু পানি প্রবাহের অবিরাম অনুপ্রবেশ, একের পর এক বাঁধ ভেঙ্গে জনপদ প্লাবিত হওয়া যেন জীবনের সাথে জীবনের যুদ্ধাবস্থা।
কোটি কোটি টাকার চিংড়ি ভেসে গেছে, ঘের ব্যবসায়ীদের একটি অংশ পথে বসতে চলেছে। গত কয়েক দিন যাবৎ নদী সংলগ্ন ঘেরগুলোতে জোয়ারের সময়ে পানি প্রবেশ করছে ভাটায় নেমে যাচ্ছে। অনেক ঘের ব্যবসায়ীরা মওসুমের প্রথম চালানের চিংড়ি বাজারজাত করতেও পারেনি। কেবল চিংড়ি নয় ভেসে গেছে কোটি কোটি টাকার সাদা প্রজাতির মাছ।
সম্প্রতি ২/১ বছর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক ভাবে সাদা প্রজাতির মাছ চাষ হচ্ছে। চিংড়ি ঘেরগুলোতে আষাঢ়, শ্রাবণ মাসে পানির লবণাক্ততা হ্রাস পেলে সাদা প্রজাতির মাছ ছাড়া হয়, আর সেই পরিস্থিতিতে সাদা মাছ চাষে বিশেষ বিপ্লব হয়েছে। কিন্তু সর্বনাশ ইয়াস আর দুর্বল, অরক্ষিত বেড়িবাধ ভেঙ্গে যাওয়ায় চাষীদের স্বপ্ন আর অর্থ দুটোই সর্বশান্ত হয়েছে।
বীজতলায় পানি জমেছে, নানান ধরনের রবিশষ্য, কাটা খদ নষ্ট হয়েছে দক্ষিণ বেদকাশি, উত্তর বেদকাশি, কয়রা সদর, মহারাজপুর আর বাগালী ইউনিয়নে। মানুষের কান্না, আতঙ্ক আর উদ্বেগে একাকার। চেষ্টা করছে বেঁচে থাকবার, আর তাই স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে বেড়িবাঁধ নির্মানে দিন রাত কাজ করছে জনসাধারণ। যত ক্ষোভ আর অনিষ্টের কারণ হিসেবে চিহ্নিত করছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডকে।
জনসাধারণের এই চরম দুঃসময়ে কেবল উচ্চারণ হচ্ছে বেড়িবাঁধ না ভাঙ্গলে এমন ক্ষতি হতো না।
উপকুলীয় এলাকার সর্বশান্ত মানুষগুলোর বারবার উচ্চারণ তারা ‘ত্রাণ নয় তারা চায় টেকসই বাঁধ, যে বাঁধ নদীর উত্তাল স্রোতধারাকে রোধ করবে, প্রকৃতির হিংস্রতাকে প্রতিহত করবে। বারবার অর্থ বরাদ্ধ হয়, ভাঙ্গনরোধে কাজ হয়, কিন্তু বাস্তবতা হলো সেই কাজ কতটুকু টেকসই, মজবুত ও স্থায়ী বাঁধের জন্য যথাযথ?
কয়রা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ভাংগন রোধে দৃশ্যত স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে কাজ চলছে। কয়রা উপজেলা প্রশাসন ভাঙ্গন কবলিত, পানি বন্দী মানুষের পাশে থাকছেন। বিশেষ করে বাঁধ নির্মাণে সশরীরে উপস্থিত থাকছেন।
উপকুলীয় এ জনপদ কয়রার সর্বস্তরের মানুষের প্রত্যাশা কয়রা উপজেলা প্রশাসন যন্ত্র সরকারের উচ্চমহলকে অবহিত করবেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের দায়িত্বহীনতায় উপজেলাবাসী কতটুকু ক্ষতিগ্রস্ত এবং স্থায়ী বাঁধ নির্মাণে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
৩ বছর আগে
ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতের ক্ষত বইছে সুন্দরবন
সুন্দরবনের কল্যাণে প্রবল ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের তাণ্ডবে ব্যাপক আকারের ক্ষয়ক্ষতির কবল থেকে রক্ষা পেয়েছে বাংলাদেশ। কিন্তু বুলবুলের আঘাতে বিশ্বঐতিহ্য সুন্দরবনের গাছ ও অবকাঠামোগত ক্ষয়ক্ষতির তথ্য পাওয়া গেছে। তবে সুন্দরবনের কোনো বন্যপ্রাণীর ক্ষয়ক্ষতির তথ্য পাওয়া যায়নি।
৫ বছর আগে
পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরবনে প্রবল গতিতে ধেয়ে আসছে ‘বুলবুল’
ভারতের আবহাওয়া দপ্তরে পূর্বাভাস অনুযায়ী, শনিবার সন্ধ্যা অথবা রাতে ১৩৫ কিলোমিটার বেগে ভয়ংকর ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ আছড়ে পড়বে সাগর ও বাংলাদেশের খেপুপাড়া উপকূলের কাছে সুন্দরবন বদ্বীপ বরাবর।
৫ বছর আগে
ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’: সমুদ্রবন্দরে ৪ নং সংকেত
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ আরও শক্তি সঞ্চয় করে প্রবল আকার ধারণ করছে। এর প্রভাবে সাগর উত্তাল হয়ে উঠেছে। শুক্রবার আবহাওয়ার এক সতর্কবার্তায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরগুলোকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
৫ বছর আগে
‘বুলবুল’ আতঙ্কে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও ওডিশার বাসিন্দারা
ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ আতঙ্কে ভুগছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও ওডিশার বাসিন্দারা। কারণ দেশটির আবহাওয়া দপ্তরে পূর্বাভাস অনুযায়ী, বঙ্গোপসাগরের ওপর ঘনীভূত ঘূর্ণিঝড়টি আরও শক্তিশালী আকার ধারণ করে আছড়ে পড়বে পশ্চিমবঙ্গ এবং ওডিশার উপকূলবর্তী অঞ্চলে।
৫ বছর আগে