লঞ্চে আগুন
সদরঘাটে লঞ্চের আগুন নিয়ন্ত্রণে
সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালের লালকুঠি ঘাট এলাকায় শুক্রবার সকালে একটি লঞ্চে আগুন লাগার পর তা নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে।
ময়ূর-৭ লঞ্চে কোনো যাত্রী ছিল না, কারণ আগুন লাগার আগেই সবাই লঞ্চ ছেড়ে গিয়েছিল।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সদর দপ্তরের মিডিয়া সেলের গুদাম পরিদর্শক আনোয়ারুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে দুপুর ১২টা ১০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
আরও পড়ুন: ঢাকার ওয়ারীতে গ্যাস লাইন লিকেজের আগুনে দদ্ধ একজনের মৃত্যু
১ বছর আগে
চাঁদপুরে বরিশালগামী লঞ্চে আগুন, দ্রুত নিয়ন্ত্রণ
চাঁদপুরে বরিশালগামী একটি লঞ্চে শনিবার রাতে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। তবে আগুন লঞ্চে ছড়িয়ে পড়ার আগেই কর্মীরা দ্রুত নিভিয়ে ফেলে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চাঁদপুর বন্দরের কর্মকর্তা কায়সার আলম জানান, এমভি সুরভি-৯ লঞ্চের ইঞ্জিন রুমে আগুন ছড়িয়ে পড়ার আগেই নিভিয়ে ফেলা হয়েছে।
তবে এতে কোনো ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন: লঞ্চে আগুন: প্রতিবেদন জমা দিলো তদন্ত কমিটি
লঞ্চ কর্মীরা জানান, শনিবার রাত ১০টার দিকে লঞ্চটি মতলব উত্তরের মোহনপুর এলাকায় পৌঁছালে আগুন লাগে। আগুন লঞ্চের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়ার আগেই তারা নিয়ন্ত্রণে আনে।
খবর পেয়ে চাঁদপুর থেকে নৌ ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে যায়।
নৌ পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওহিদুজ্জামান জানান, মোহনপুর নৌ পুলিশ রাতে যাত্রীদের নিরাপত্তা দিয়েছে।
বিআইডব্লিউটিএ’র চাঁদপুর বন্দরের কর্মকর্তা কায়সার আলম জানান, নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনা করে যাত্রীদের আরেকটি লঞ্চে করে বরিশালে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া এমভি সুরভি-৯ লঞ্চটি মোহনপুর ঘাটে ডক করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: লঞ্চে অগ্নিকাণ্ড: নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪৯
এদিকে গত ২৪ ডিসেম্বর ভোররাতে ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে ঢাকা থেকে বরগুনাগামী এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে আগুন লাগার ঘটনায় ৩ জানুয়ারি পর্যন্ত ৪৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।
২ বছর আগে
লঞ্চে আগুন: প্রতিবেদন জমা দিলো তদন্ত কমিটি
ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।
সোমবার রাতে কমিটি তাদের প্রতিবেদন জমা দেয় বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘নৌপরিবহন সচিবের কাছে প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়েছে। তিনি করোনা আক্রান্ত। আমাকে প্রতিবেদনটি দেখতে হবে। একবার দেখার পর আমি বিস্তারিত বলতে পারবো।’
তিনি বলেন, ‘যত দূর আমি জানি, এমভি অভিযান-১০ লঞ্চের মালিক, শ্রমিক ও চালকদের ত্রুটি উঠে এসেছে প্রতিবেদনে। ডকইয়ার্ডেরও সমস্যা ছিল।’
আরও পড়ুন: লঞ্চে অগ্নিকাণ্ড: নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪৯
ইঞ্জিনে সমস্যা ছিল উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এটার জন্য ডকইয়ার্ড কর্তৃপক্ষ দায়ী। এজন্য তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা হবে।
এ ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
এর আগে ৩০ ডিসেম্বর কমিটিকে তদন্ত সম্পন্ন করতে আরও তিনদিন দেয়া হয়।
২৪ ডিসেম্বর, নৌপরিবহন মন্ত্রণালেয়র যুগ্মসচিব তোফায়েল আহমেদকে আহ্বায়ক করে সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে মন্ত্রণালয়। তাদের তিনদিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেয়ার কথা বলা হয়। তবে তারা সেদিন প্রতিবেদন জমা দিতে পারেনি।
আরও পড়ুন: লঞ্চে অগ্নিদগ্ধদের হাসপাতালে দেখতে গেলেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী
এদিকে গত ২৪ ডিসেম্বর ভোররাতে ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে ঢাকা থেকে বরগুনাগামী এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে আগুন লাগার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এছাড়া,রেড ক্রিসেন্ট বাংলাদেশের ঝালকাঠি জেলা কার্যালয়ের করা তালিকা অনুযায়ী,গত বুধবার পর্যন্ত অন্তত ৫৮ জন নিখোঁজ রয়েছেন।
২ বছর আগে
লঞ্চে আগুন: কেরানীগঞ্জ থেকে এক মালিক গ্রেপ্তার
ঝালকাঠিতে এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মো. হামজালাল শেখ নামে লঞ্চটির এক মালিককে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার সহকারী পরিচালক (এএসপি) এ এন এম ইমরান খান জানান, সোমবার ভোরে কেরানীগঞ্জ থেকে হামজালালকে গ্রেপ্তার করা হয়।
নৌপরিবহন অধিদপ্তরের করা মামলায় ঢাকার নৌআদালত লঞ্চটির চার মালিকসহ আটজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করলে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মামলার আসামিরা হলেন- লঞ্চটির চারজন মালিক মো. হামজালাল শেখ, মো. শামীম আহম্মেদ, মো. রাসেল আহাম্মেদ ও ফেরদৌস হাসান রাব্বি, লঞ্চের ইনচার্জ মাস্টার মো. রিয়াজ সিকদার, ইনচার্জ চালক মো. মাসুম বিল্লাহ, দ্বিতীয় চালক আবুল কালাম ও দ্বিতীয় মাস্টার মো.খলিলুর রহমান।
আরও পড়ুন: চলন্ত লঞ্চে আগুন: নিহতদের ৫০ লাখ ও দগ্ধদের ২০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণের দাবিতে রিট
এছাড়া লঞ্চ ও এর চালকদের লাইসেন্স স্থগিত করেছে নৌপরিবহন বিভাগ।
এ ঘটনার অধিকতর তদন্তের জন্য রবিবার নৌপরিবহন অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সদস্যদের লঞ্চটিতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা তদন্ত করে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, শুক্রবার দিবাগত ৩টায় ঢাকা থেকে প্রায় ৮০০ যাত্রী নিয়ে ঢাকা থেকে বরগুনাগামী এমভি অভিযান-১০ নামের লঞ্চটিতে আগুন লাগে। এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪১ জনে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া ৭০ জনের বেশি আহত হয়েছেন এবং আহতদের অনেকেই বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
তবে লঞ্চটিতে ঠিক কত জন যাত্রী ছিলেন এবং নিখোঁজ যাত্রীর সঠিক সংখ্যা এখনও জানা যায়নি।
আরও পড়ুন: লঞ্চে আগুন: বাবা-মেয়ে দগ্ধ, বাঁচতে পারেনি মা
২ বছর আগে
লঞ্চে আগুন: সুগন্ধা নদীতে তৃতীয় দিনের মতো চলছে উদ্ধার অভিযান
ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে ঢাকা থেকে বরগুনাগামী এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিখোঁজদের সন্ধানে টানা তৃতীয় দিনের মতো উদ্ধার অভিযান চলছে।
ঝালকাঠি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খলিলুর রহমান জানিয়েছেন, সুগন্ধা নদীতে ঘটনাস্থলের অংশ পাশের এলাকায় উদ্ধার অভিযান অব্যাহত আছে।
তিনি বলেন, ‘বেলা ১১টার দিকে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত নদী থেকে নতুন করে আর কোন মরদেহ উদ্ধার হয়নি।’
জেলা প্রশাসনের কন্ট্রোল রুমের দায়িত্ব পালন কারী কর্মকর্তা আবু সাঈদ জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত নিখোঁজ ২৫ জনের তালিকা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: চলন্ত লঞ্চে আগুন: বরগুনায় গণকবরে অজ্ঞাত ২৩ লাশ দাফন
এর আগে লঞ্চ অগ্নিকাণ্ডে নিহত অজ্ঞাত পরিচয়ের ২৩ জনের লাশ শনিবার বেলা ১২ টায় বরগুনা সদর উপজেলার পোটকাখালী সরকারি গণকবরে দাফন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার গভীর রাত ৩টার দিকে ঢাকা থেকে ২৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে ঝালকাঠি জেলার সদর উপজেলার উপকূলে সুগন্ধা নদীর মাঝখানে ৮০০ যাত্রী নিয়ে ‘অভিযান-১০’ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
শনিবার রাত পর্যন্ত অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪১ জনে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া ৭০ জনের বেশি আহত হয়েছেন এবং তাদের অনেকেই বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
পড়ুন: ঝালকাঠিতে লঞ্চে অগ্নিকাণ্ড: ৩৩ মরদেহ বরগুনায় পৌঁছেছে
লঞ্চে অগ্নিকাণ্ড: ৩০ জনের জানাযা সম্পন্ন
২ বছর আগে
আহতদের চিকিৎসা সহায়তায় সরকার পাশে দাঁড়াবে: নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী
ঝালকাঠিতে লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডে আহত যাত্রীদের সম্ভাব্য সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
শুক্রবার রাতে ঢাকায় শেখ হাসিনা বার্ণ ইউনিটে 'এমভি অভিযান-১০' লঞ্চে আগুনে আহত ব্যক্তিদের দেখতে গিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
লঞ্চে এ ধরণের মর্মান্তিক ঘটনা আগে ঘটেনি বলে জানান খালিদ মাহমুদ।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার একটি মানবিক সরকার। তিনি নৌপথের উন্নয়নে খুবই আন্তরিক। তার নেতৃত্বে নৌপথের আরও বেশি নিরাপদে সক্ষম হব।’
আরও পড়ুন: আগুন লাগার পরও লঞ্চ ৪০ মিনিট চলে
এর আগে প্রতিমন্ত্রী ঝালকাঠি হাসপাতালে আহতদের দেখতে যান এবং তাদের চিকিৎসার খোঁজখবর নেন।
এদিকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা তদন্তে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ পৃথক দুটি কমিটি গঠন করেছে। তিন দিনের মধ্যে তাদেরকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীর দিয়াবাড়ি নামক স্থানে শুক্রবার ভোরে ঢাকা থেকে বরগুনাগামী এমভি অভিযান ১০ নামে একটি লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৩৯ জনের লাশ এবং আহত ৭২ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে।
পড়ুন: লঞ্চের আগুনে নিহত প্রত্যেক পরিবারকে দেড় লাখ টাকা দেয়ার ঘোষণা
২ বছর আগে
আগুন লাগার পরও লঞ্চ ৪০ মিনিট চলে
‘এমভি অভিজান-১০’ এ আগুন লাগার সাথে সাথে তাৎক্ষণিকভাবে তীরে ভিড়লে হয়তো এতো বড় দুর্ঘটনা এড়ানো যেত। সেক্ষেত্রে বেঁচে যেত সবাই। এমনটাই মনে করছেন মাঝ নদীতে অগ্নিকাণ্ডে লাশের স্তুপ গড়া লঞ্চ এমভি অভিযান ১০’র বেঁচে যাওয়া যাত্রীরা।
রাত ২টা নাগাদ বরিশাল নদী বন্দর পার হয় লঞ্চটি। এর ঠিক ২০-২৫ মিনিট পর সুগন্ধি নদীর দপদপিয়া পয়েন্ট পার হওয়ার সময় প্রথম ইঞ্জিন রুমে আগুন জ্বলতে দেখেন লঞ্চের যাত্রী বরগুনার বামনা উপজেলার বাসিন্দা রাশেদ।
বরিশাল শেরে বাংলা চিকিৎসা মহবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রাশেদ বলেন, ‘লঞ্চ বোঝাই ছিল যাত্রী। কোথাও জায়গা না পেয়ে ইঞ্জিন রুমের পাশেই ছিলাম। দপদপিয়া এলাকা পেরুনোর পরপরই ইঞ্জিন রুমের পাশে জ্বলতে দেখি আগুন। তখন অবশ্য তা খুব বেশি ছিল না। এই অবস্থাতেই চলতে থাকে লঞ্চ। সেই সাথে স্টাফরা চেষ্টা চালাতে থাকে তা নেভানোর। এভাবে প্রায় ৪০-৪৫ মিনিট চলার পর হঠাৎ করেই বেড়ে যায় আগুনের ভয়াবহতা।’
আগুন লাগার পর লঞ্চ তীরে না ভিড়িয়ে চালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন সদ্য সচিব পদে পদোন্নতি পাওয়া বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার সাইফুল আহসান বাদল।
সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘চালকের অদক্ষতা এক্ষেত্রে বড় অপরাধ হিসেবে কাজ করেছে। আগুন লাগার পর ঝুঁকি না নিয়ে লঞ্চ থামিয়ে দিলে হয়তো এতো বড় মর্মান্তিক ঘটনা ঘটতো না।’
যাত্রীদের দাবি ইঞ্জিন রুমে আগুনের সূত্রপাত
ইঞ্জিন রুমের পাশেই থাকা চিকিৎসাধীন দগ্ধ যাত্রী বরগুনার ঢলুয়া এলাকার বাসিন্দা কালু মিয়া বলেন, ‘ইঞ্জিন রুমের পাশেই ছিল ৭ ব্যারেল তেল। আগুনের উত্তাপে এর পর্যায়ে সেগুলো বিস্ফোরিত হলে মুহূর্তেই আগুন ছড়িয়ে যায় পুরো লঞ্চে।এর ভয়াবহতা এতোটাই বেশি ছিল যে তৃতীয় তলার কেবিনে থাকা যাত্রীদের প্রায় কেউই আর বেরুতে পারেনি। মুহূর্তেই পুড়ে কয়লা হয়ে গেছে সবাই।’
বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরেক যাত্রী বরগুনার খোলপটুয়া গ্রামের আসিফ সিকদার বলেন, ‘তীব্র শীতে ঠান্ডা বাতাসের হাত থেকে বাঁচতে একদিকে যেমন লঞ্চে ঢোকা বেরুনোর সবগুলো গেট আটকানো ছিল তেমনি চারপাশের মোটা পর্দাগুলো নামিয়ে রাখা হয় বেঁধে। চোখের পলকে ছড়িয়ে পড়া আগুনে সবার আগে পুড়তে শুরু করে পর্দাগুলো। তীব্র উত্তাপে স্টীল কাঠামোর আয়তন বেড়ে যাওয়ায় আটকে যায় গেট। ফলে লঞ্চের দু’দিক দিয়ে যেমন যাত্রীরা ঝাপ দিতে পারেনি নদীতে তেমনি গেট আটকে যাওয়ায় বেরুতেও পারেনি কেউ। বদ্ধ উনোনে পুড়ে মরেছ মানুষ।’
লঞ্চের বেঁচে যাওয়া যাত্রী কামরুল ইসলাম বলেন, ‘বৃহস্পতিবার বিকালে ঢাকা সদর ঘাট থেকে লঞ্চটি ছাড়ার পর থেকেই খানিকটা অদ্ভুত শব্দ হচ্ছিল লঞ্চের ইঞ্জিন থেকে।’ নিয়মিত লঞ্চ যাত্রী কামরুল’র ভাষ্যমতে, ‘শব্দটা ছিল অস্বাভাবিক। সাধারণতঃ এরকম শব্দ এর আগে আর কখনো শুনিনি অন্য কোন লঞ্চে। এভাবেই ঢাকা থেকে সুগন্ধা নদীর দপদপিয়া পর্যন্ত আসার পর আগুর জ্বলে উঠে ইঞ্জিন রুমে। চালকসহ লঞ্চের অন্যান্য কর্মকর্তারা এসময় যদি লঞ্চ না চালিয়ে তীরে ভিড়িয়ে দিতেন তাহলে হয়তো এতোবড় দুর্ঘটনা ঘটতোনা। কিন্তু তারা তা না করে আগুন নেভানোর চেষ্টার পাশাপাশি লঞ্চ চালাতো থাকেন। গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন যাত্রীদেরকেও জানানো হয়নি কিছুই। এরপর যখন বিস্ফোরণ এবং মুহূর্তেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে তখন আর কারও কিছু করার ছিল না।’
শেবাচিমের পরিস্থিতি
দুর্ঘটনার পর ঝালকাঠী থেকে ৭০ জনের মতো দগ্ধ নারী পুরুষকে চিকিৎসার জন্য দ্রুত নিয়ে আসা হয় বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে। এসব আহতদের প্রায় সবারই পোড়া চিহ্ন দেখা গেছে হাত এবং পায়ে।
এদের একজন বরগুনার বেতাগীর বাসীন্দা হারুন মিস্ত্রি বলেন, ‘আগুন ছড়িয়ে পড়ার পরপরই মুহূর্তের মধ্যে তীব্র উত্তাপে উত্তপ্ত হয়ে উঠে লঞ্চের স্টিল কাঠামো। নিচে ডেকে যেমন রাখা যাচ্ছিল না পা তেমনি হাত দিয়েও ধরা যাচ্ছিল না কিছুই। ওই অবস্থায়ই জীবন বাঁচাতে হাত পা পুড়িয়ে নদীতে ঝাপ দিতে থাকে মানুষ। মূলতঃ যারা নদীতে ঝাপ দিতে পেরেছে তারাই বেঁচে গেছে। অন্যদের ভাগ্যে জুটেছে নির্মম মৃত্যু।’
লঞ্চের বেঁচে যাওয়া একাধিক যাত্রী জানান, ‘ঘটনাস্থলে পৌছানোর পর হঠাৎ যখন লঞ্চটিকে আগুন গ্রাস করে তখন এর চালক প্রথমে তীরের দিকে নিয়ে গেলেও পরে আবার মাঝ নদীতে নিয়ে আসে। কেন সে এটা করলো তা পরিস্কার নয়।’
আরও পড়ুন: লঞ্চের আগুনে নিহত প্রত্যেক পরিবারকে দেড় লাখ টাকা দেয়ার ঘোষণা
যাত্রীর সংখ্যা নিয়ে ধোয়াশা
দুর্ঘটনার সময় অভিশপ্ত অভিযান ১০ লঞ্চে ঠিক কতজন যাত্রী ছিল তাই নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে ধোয়াশা। লঞ্চের মালিক পক্ষের দাবি অনুযায়ী সব মিলিয়ে ৩ থেকে সাড়ে ৩শ’ যাত্রী ছিল লঞ্চে। বিআইডব্লিউটিএ বরিশালের যুগ্ম পরিচালক এস এম আজগর আলী-রও দাবি যে ঢাকা থেকে ৩১০ জনের মতো যাত্রী নিয়ে বরগুনার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে লঞ্চটি। এমনকি দুর্ঘটনার পর গতকাল শুক্রবার দুপুরে আহত যাত্রীদের দেখতে বরিশালে আসা নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীও বলেছেন যে রাতের বেলা সাড়ে ৪শ’র মতো যাত্রী ধারনের অনুমতি থাকা লঞ্চটিতে ৩ সাড়ে ৩শ’র বেশি যাত্রী ছিল না।
তবে দুর্ঘটনার কবল থেবে বেঁচে ফিরে আসা যাত্রীরা বলছেন ভিন্ন কথা। তাদের মতে দেড় হাজারের বেশি যাত্রী ছিল লঞ্চে।
শেবাচিম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন যাত্রী বরগুনার রাশেদ বলেন, ‘নিচতলার ডেকে যাত্রীদের ভীড়ের কারণে বসার মতো জায়গা ছিল না। পরে ইঞ্জিনের পাশে কোনভাবে একটু জায়গা করে ফিরছিলাম বরগুনায়।’
দগ্ধ হয়ে আহত আরেক যাত্রী কালু মিয়াও বলেন একই কথা।
দুর্ঘটনার পর বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা প্রায় ৭০ জন নারী-পুরুষের পাশাপাশি লাশ উদ্ধার হওয়া ৩৯ (শুক্রবার বিকাল ৪টা পর্যন্ত) জনের খবর জানা গেলেও লঞ্চে থাকা বাকি যাত্রীদের ভাগ্যে কি ঘটেছে তা এখনো পরিস্কার নয়।
পড়ুন: ‘এমভি অভিযান-১০’ লঞ্চে কোনো যান্ত্রিক ত্রুটি নেই, দাবি মালিকের
২ বছর আগে
লঞ্চের আগুনে নিহত প্রত্যেক পরিবারকে দেড় লাখ টাকা দেয়ার ঘোষণা
ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে 'এমভি অভিযান-১০' লঞ্চের আগুনে নিহত প্রত্যেক পরিবারকে দেড় লাখ টাকা দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
শুক্রবার (২৪ ডিসেম্বর) ঝালকাঠিতে দুর্ঘটনাকবলিত লঞ্চ পরিদর্শনকালে এ ঘোষণা দেন প্রতিমন্ত্রী।
এছাড়া দুর্ঘটনায় আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে বলেও প্রতিমন্ত্রী জানান।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার সাইফুল হাসান বাদল এবং বিআইডব্লিউটিএ'র চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেক উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে প্রতিমন্ত্রী ঝালকাঠি হাসপাতালে লঞ্চে আগুনে আহতদের দেখতে যান এবং তাদের চিকিৎসার খোঁজখবর নেন।
প্রতিমন্ত্রী ঢাকা থেকে ঝালকাঠি যাওয়ার পথে দুপুরে বরিশালে শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে লঞ্চে আগুনে আহতদের দেখতে যান এবং তাদের চিকিৎসার খোঁজ নেন।
আরও পড়ুন: ঝালকাঠিতে লঞ্চে আগুন, নিহত বেড়ে ৩৯
এর আগে, ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীর দিয়াবাড়ি নামক স্থানে শুক্রবার ভোরে ঢাকা থেকে বরগুনাগামী এমভি অভিযান ১০ নামে একটি লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৩৯ জনের লাশ এবং আহত ৭২ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে।
ঝালকাঠি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খলিলুর রহমান ইউএনবিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সদর দপ্তরের উপ-সহকারী পরিচালক (গণমাধ্যম শাখা) মো. শাহজাহান সিকদার ৭২ জন আহত যাত্রীকে উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আহতদের ঝালকাঠির স্থানীয় হাসপাতালসহ বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। লঞ্চটিতে আনুমানিক ৮০০ থেকে ১২০০ জন যাত্রী ছিল। বাকিরা নদীতে ঝাঁপ দিয়ে তীরে পৌঁছে।
পড়ুন: লঞ্চে অগ্নিকাণ্ড: ৭ সদস্যের কমিটি গঠন
২ বছর আগে
লঞ্চে আগুন: হতাহতের ঘটনায় নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রীর শোক
লঞ্চে আগুনে হতাহতের ঘটনায় গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
শুক্রবার নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম খান স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই বিষয়ে জানানো হয়।
এক শোকবার্তায় প্রতিমন্ত্রী নিহতদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানান। তিনি আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন।
আরও পড়ুন: জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলামের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক
এদিকে, এই ঘটনায় নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরী শোকবার্তার মাধ্যমে পৃথকভাবে শোক প্রকাশ করেছেন।
প্রসঙ্গত, ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীর দিয়াবাড়ি এলাকায় একটি লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৩৭ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। শুক্রবার ভোরে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা বরগুনাগামী এমভি অভিযান আগুনের ঘটনা আহত হয়েছে আরও ৭২ জনকে।
আরও পড়ুন: অভিনেতা মাহমুদ সাজ্জাদের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক
ঝালকাঠি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খলিলুর রহমান ইউএনবিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
২ বছর আগে