তবে, তাকে কেন জামিন দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে আদালত। আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে সংশ্লিষ্টদের এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
জামিনের বিষয়ে করা আবেদনের শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ আদেশ দেয় বলে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক জানিয়েছেন।
আদালতে আসামির জামিন আবেদনের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন মো. হুমায়ুন কবির বুলবুল। দুদকের পক্ষে ছিলেন মো. খুরশিদ আলম খান। অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক এবং সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মাহজাবিন রাব্বানী দীপা ও আন্না খানম কলি।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের আবাসিক ভবনের জন্য ১৬৯ কোটি টাকার কেনাকাটায় দুর্নীতির অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) পৃথক তিনটি মামলা দায়ের করে। পরে এসব মামলায় পাবনা গণপূর্ত বিভাগের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুদুল আলম, উপসহকারী প্রকৌশলী মো. শফিকুল ইসলামসহ ১৩ জনকে ২০১৯ সালের ১২ ডিসেম্বর গ্রেপ্তার করা হয়।
মামলায় উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল ছাড়াও আরও কয়েকজনকে আসামি করা হয়। তারা হলেন- আহমেদ সাজ্জাদ খান, মোহাম্মদ তাহাজ্জুদ হোসেন, সহকারী প্রকৌশলী মো. তারেক খান, আমিনুল ইসলাম, ঠিকাদার আসিফ হোসেন ও শাহাদাত হোসেন।
রূপপুর প্রকল্পের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বসবাসের জন্য নির্মাণাধীন গ্রিনসিটি আবাসন প্রকল্পের ২০ ও ১৬ তলা ভবনের আসবাবপত্র ও প্রয়োজনীয় মালামাল কেনা ও ভবনে উত্তোলন কাজে অস্বাভাবিক ব্যয় নিয়ে গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশ হলে ২০১৯ সালের ১৯ মে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করে।
দুর্নীতির নমুনা তুলে ধরে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, একটি বালিশের পেছনে ব্যয় দেখানো হয়েছে ৬ হাজার ৭১৭ টাকা। এর মধ্যে, বালিশের দাম ৫ হাজার ৯৫৭ টাকা, আর সেই বালিশ ফ্ল্যাটে ওঠানোর খরচ ৭৬০ টাকা। একইভাবে টেলিভিশন, খাট, রেফ্রিজারেটর, বৈদ্যুতিক চুলা, বৈদ্যুতিক কেটলি, রুম পরিষ্কারের মেশিন, ইলেকট্রিক আয়রন, মাইক্রোওয়েভ ইত্যাদি কেনাকাটা ও ভবনে তুলতে অস্বাভাবিক খরচ দেখানো হয়। এ ঘটনা পরে বালিশকাণ্ড হিসেবে পরিচিতি পায়।
গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের দুই কমিটির তদন্তেই ৬২ কোটি ২০ লাখ ৮৯ হাজার টাকার অনিয়মের কথা উঠে আসে। যেখানে চুক্তিমূল্যের চেয়ে ৩৬ কোটি ৪০ লাখ টাকার বেশি সরকারি কোষাগারে ফেরত আনতে সুপারিশসহ বিষয়টি দুদকে পাঠানো হয়। হাইকোর্টের নির্দেশে গত জুলাইয়ে আদালতে জমা দেয়া ওই তদন্ত প্রতিবেদনে দুর্নীতির জন্য ৩৪ প্রকৌশলীকে দায়ী করা হয়।