বৃদ্ধার নাম পারভীন আক্তার। বয়স সত্তরের ওপরে হবে বলে ধারণা পাওয়া যায়। আপন বলতে এই পৃথিবীতে কেউ নেই। অনেক বছর আগে স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে একা বলে দাবি করেন তিনি।
আরও পড়ুন: স্বজনদের অপেক্ষায় হাসপাতালে বৃদ্ধার অপেক্ষা!
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দ্বিতীয় তলায় নারীদের ওয়ার্ডের মেঝেতে ঠাঁই হয়েছে পারভীন আক্তারের। বয়সের ভারে যেসব সমস্যা থাকে সেগুলোর লক্ষণ আছে শরীরে। তবে তিনি রোগী নন। তবু হাসপাতালে ঠাঁই নিয়েছেন শুধু থাকা আর খাবারের নিশ্চয়তায়।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ওই বৃদ্ধা মাস তিনেকের মতো হাসপাতাল থেকে গেছেন। তবে একসময় হাসপাতাল ছাড়তে হয়। গত ৬ জানুয়ারি আবার হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। রোগীর চাপ থাকায় মেঝেতে রাখা হয়েছে বৃদ্ধা পারভীন আক্তারকে। তবে অন্য রোগীদের মতোই তিন বেলা নিয়মিত খাবার দেয়া হচ্ছে তাকে।
আরও পড়ুন: নাটোরের বড়াইগ্রামে আগুনে পুড়ে বৃদ্ধার মৃত্যু
অস্পষ্ট ভাষায় পারভীন আক্তার জানান, সহায়-সম্পদ কিংবা স্বজন কেউ নেই। আখাউড়ার খড়মপুর এলাকায় থাকতেন। দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে সুযোগমতো কাজ করতেন। এখন আর পারেন না। শক্তিতে কুলায় না। তাই কয়েক মাস আগে হাসপাতালে চলে আসেন। কিছুদিনের জন্য বাইরে গিয়ে আবার এসেছেন। এখানে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা আছে বলে থেকে যেতে চান।
হাসপাতালে কর্মরত সিনিয়র স্টাফ নার্স রিজিয়া আক্তার বলেন, 'ওই নারী কোমরে ব্যথার জন্য দুইটা ওষুধ খায়। তবে ওনার তেমন কোনো সমস্যা নেই। তিনি এর আগেও হাসপাতালে কয়েক মাস থেকে গেছেন।'
আরও পড়ুন: মোহনগঞ্জে গরুকে বাঁচাতে গিয়ে ট্রেনে কাটা পড়ে বৃদ্ধার মৃত্যু
যোগাযোগ করা হলে আবাসিক মেডিকেল অফিসার শ্যামল কুমার ভৌমিক বলেন, 'ওই নারীর তেমন কোনো সমস্যা নেই। তিনি মূলত থাকা-খাওয়ার জন্যই আগে কয়েক মাস টানা হাসপাতালে ছিলেন'।
উদ্বাস্ত হিসেবে কাউকে হাসপাতালে রাখার নিয়ম নেই উল্লেখ করে আরএমও শ্যামল বলেন, ওই নারী রোগী হিসেবেই ভর্তি আছেন।
আরও পড়ুন: পাবনায় ট্রেনের ধাক্কায় বৃদ্ধার মৃত্যু
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রাশেদুর রহমান বলেন, 'রেলওয়ে জংশন হওয়ায় ও মাজার শরীফ থাকায় এখানে মাঝে মাঝে এ ধরনের লোক আসে, যাদের পরিচয় পাওয়া যায় না। ওই নারীরও পরিচয় পাওয়া যায়নি। তবে তিনি তেমন অসুস্থ নন। মূলত থাকা-খাওয়া নিশ্চিত করতেই তিনি এখানে আছেন। আমাদের পক্ষ থেকে ওই নারীকে সব ধরনের সেবা দেয়া হচ্ছে।'