শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় (জেএইচইউ) থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, করোনাভাইরাসে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ২৬ লাখ ৯০ হাজার ৬৬৩ জনে। এছাড়া, ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২ কোটি ১৭ লাখ ৩১ হাজার ৬৫৮ জনে।
চীনের উহানে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। গত বছরের ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাকে মহামারি ঘোষণা করে। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে ডব্লিউএইচও।
আরও পড়ুন: লকডাউনের কোনো পরিকল্পনা নেই: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
বাংলাদেশে করোনার ‘নতুন ধরনের’ ১০ রোগী শনাক্ত, জানালেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী
করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এ পর্যন্ত ২ কোটি ৯৬ লাখ ৬৫ হাজার ২০২ জন করোনায় আক্রান্ত এবং ৫ লাখ ৩৯ হাজার ৬৬৩ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।
ল্যাটিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল আক্রান্ত ও মৃত্যুর দিক দিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগী এক কোটি ১৭ লাখ ৮০ হাজার ছাড়িয়েছে এবং মৃত্যু হয়েছে ২ লাখ ৮৭ হাজার ৪৯৯ জনের।
পৃথিবীর দ্বিতীয় জনবহুল দেশ ভারত করোনায় আক্রান্ত দেশের তালিকায় তৃতীয় এবং মৃত্যু নিয়ে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে। দেশটিতে মোট আক্রান্ত এক কোটি ১৪ লাখ ৭৪ হাজার ছাড়িয়েছে এবং মারা গেছেন ১ লাখ ৫৯ হাজার ২১৬ জন।
বাংলাদেশ পরিস্থিতি
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে দেশে আপাতত লকডাউনের কোনো পরিকল্পনা নেই বলে বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘লকডাউনের সীদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করতে বলা হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে করোনা সংক্রমণ বাড়বে না।’
রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে মন্ত্রী বলেন, দেশ থেকে করোনা চলে যায়নি। সবাইকে নো মাস্ক, নো সার্ভিস পলিসি মেনে চলার আহ্বান জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, ‘দেশব্যাপী সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত, মাস্ক পরা নিশ্চিত করতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে। করোনায় স্বাস্থ্যবিধি মানলে সংক্রমণ রোধ করা যায়, এটা জানা থাকলেও মানুষ অসচেতনভাবে চলাফেরা করছে।’
এ সময় আক্রান্তের সংখ্যা কমাতে চাইলে বিয়েসহ অন্যান্য অনুষ্ঠান না করার অনুরোধ জানান তিনি।
মন্ত্রী বলেন, ‘করোনা থেকে বাঁচা ও চিকিৎসার উপায় আমরা জানি। কিন্তু সব জেনেও আমরা মানি না। করোনা নিয়ন্ত্রণে না থাকলে অর্থনীতি থাকবে না। সমস্যার সৃষ্টি হবে। তাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন।’
দেশে করোনা শনাক্তের হার আরও ঊর্ধ্বমুখী, ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত ২ হাজার ছাড়াল
বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো করোনা সংক্রান্ত নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, করোনাভাইরাসে আগের ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু ও শনাক্ত দুটোই বেড়েছে।
২৪ ঘণ্টায় এই ভাইরাসে প্রাণ হারিয়েছেন ১৬ জন। এ নিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে আট হাজার ৬২৪ জনে দাঁড়িয়েছে।
এছাড়া, গত ২৪ ঘণ্টায় ২ হাজার ১৮৭ জনের শরীরে নতুন করে প্রাণঘাতী এই ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। যার ফলে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৫ লাখ ৬৪ হাজার ৯৩৯ জনে পৌঁছেছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ করোনার নতুন ঢেউ দেখতে পারে বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের
বাংলাদেশে অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন স্থগিতের কোনো পরিকল্পনা নেই: স্বাস্থ্য সচিব
এর আগে বুধবার অধিদপ্তর জানায়, আগের ২৪ ঘণ্টায় ১১ মৃত্যু ও ১ হাজার ৮৬৫ জনের শরীরে কোভিড-১৯ শনাক্ত হয়েছে।
সারা দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ২১৯টি পরীক্ষাগারে ২১ হাজার ২১২টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। অ্যান্টিজেন টেস্টসহ পরীক্ষা করা হয় ২০ হাজার ৯২৫টি নমুনা। গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ১০.৪৫ শতাংশ। এর আগেরদিন বুধবার শনাক্তের হার ছিল ৭.৬৮ শতাংশ।
মোট পরীক্ষায় এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ১২.৯৯ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় মোট মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫৩ শতাংশ।
এদিকে, ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন আরও ১ হাজার ৫৩৪ জন। এ নিয়ে দেশে মোট সুস্থ ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ১৭ হাজার ৫২৩ জনে। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯১ দশমকি ৬১ শতাংশ।
গত বছরের ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের পর ১৮ মার্চ প্রথম একজনের মৃত্যুর কথা জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।