সবুজ বৃক্ষের সজীবতা ও পাখিদের কলকাকলিতে এক সময় মুখরিত থাকলেও টাঙ্গুয়ার হাওর এখন যেন বিরানভূমি। নেই আগের মতো পাখির কিচিরমিচির, নেই সবুজের সমারোহ।
প্রতি বছর শীতের সময় সুদূর সাইবেরিয়া থেকে লাখ লাখ পাখি এসে ভিড় জমায় অভয়ারণ্য হিসেবে খ্যাত টাঙ্গুয়ার হাওরে। কিন্তু অতিথি পাখিদের নিরাপদে হাওরে নিঃশ্বাস নিতে দেয় না স্থানীয় শিকারিরা।
হাওরে পানি আটকে মাছ শিকার, সুনামগঞ্জে বোরো আবাদে শঙ্কা
রাতের আঁধারে হাওরে গিয়ে দেখা যায়, ঝাঁকে ঝাঁকে শিকারির দল ঝাঁপিয়ে পড়ছে অতিথি পাখি নিধনযজ্ঞে। সন্ধ্যা হতে না হতেই এসব দস্যুর দল তীব্র আলোর টর্চলাইট, পাখি মারার হাতিয়ার (স্থানীয় ভাষায় থুড়ি, মঘা, হাত্তর) ও বস্তা হাতে বেরিয়ে পড়ে পাখি শিকারে।
টাঙ্গুয়ার হাওরের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা কমিউনিটি গার্ড ও আনসার সদস্যরা এ বিষয়ে নিচ্ছেন না কোনো পদক্ষেপ। স্থানীয় সচেতন মহল বলছে, আনসার বাহিনী ও কমিউনিটি গার্ড সদস্যদের চোখের সামনেই হচ্ছে হাওরের বৃক্ষ, মৎস্য ও পাখি নিধন। এর ফলে ধ্বংস হচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ও পাখি।
টাঙ্গুয়ার হাওরে পরিযায়ী বিভিন্ন পাখির মধ্যে রয়েছে- বেগুনি কালেম, ডাহুক, লেনজা, প্যালাসেস, পানকৌড়ি, গাঙচিল, কিংস্টর্ক, সারস, শঙ্কচিল, মরচেরং, ভুঁতিহাঁস, পিয়ংহাঁস, বালিহাঁস, ডুবুরি, মৌলভী, তিলা, রামের কুর্রা ও বোর্রাল।
হাওরপাড়ের শিক্ষক সানজু মিয়া বলেন, ‘বর্তমানে হাওরটি প্রায় অভিভাবক শূন্য। এই হাওরটি পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে স্বীকৃতি পেলেও, মিলছে না প্রশাসনিক তদারকি। টাঙ্গুয়ার হাওরের বনায়ন সংরক্ষণ ও জীববৈচিত্র্যের ভাণ্ডার অক্ষুণ্ন রাখতে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণে সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।’
'হাওর ভিত্তিক পর্যটন' উন্নয়নে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে: পর্যটন প্রতিমন্ত্রী
কমিউনিটি গার্ড সভাপতি মনির মিয়া বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে হাওরের জন্য যথেষ্ট করছি। কিন্তু সংখ্যালঘু হওয়ায় যথেষ্ট পেরে উঠছি না।’
এ বিষয়ে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পদ্মাসন সিংহ।
আরও পড়ুন: হাওরাঞ্চলের অসহায় নারীদের কল্যাণে পৈত্রিক ভিটা দান করলেন পরিকল্পনামন্ত্রী