আইন ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে এবং গত জুলাই-আগস্ট মাসে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য আন্তর্জাতিক মানদণ্ড নিশ্চিতে আইনের খসড়া করছে সরকার।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক ও জাতীয় বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের সুপারিশের আলোকে আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩ এর সংশোধনের খসড়া চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।
এই আইন সংশোধনী অধ্যাদেশ বুধবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে তোলা হবে বলেও জানান তিনি। তিনি বলেন, অধ্যাদেশটি পাস হলে সে অনুযায়ী কার্যক্রম শুরু হবে।
আরও পড়ুন: প্রয়োজনীয় সংস্কারের পর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নির্বাচন: আইন উপদেষ্টা
মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) সচিবালয়ে ‘অন্তর্বর্তী সরকারের ১০০ দিন: আইন মন্ত্রণালয়ের কৈফিয়ত’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
আইন উপদেষ্টা বলেন, এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন সহায়তা করেছে আইন মন্ত্রণালয়। চিফ প্রসিকিউটরসহ ১১ জন প্রসিকিউটর নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
তাছাড়া অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসে ২৩৯ জন আইন কর্মকর্তা তথা সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ও অ্যাটর্নি জেনারেল নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
উপদেষ্টা জানান, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগের বিচারপতি নিয়োগ আইনের খসড়া চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। আশা করছি, নতুন আইনের মাধ্যমেই পরবর্তী বিচারপতি নিয়োগ দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, অধস্তন আদালতের বিচারক, রেজিষ্ট্রেশন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা এবং আইন মন্ত্রণালয় ও এর অধীন দপ্তর সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব সংগ্রহ করা হয়েছে। এই হিসাব বিবরণী এখন যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনের সংশোধন অধ্যাদেশ হচ্ছে, সেখানে কোনও রাজনৈতিক দলের বিচারের ধারা যুক্ত হচ্ছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে আসিফ নজরুল বলেন, ‘একটা-দুটো দিন অপেক্ষা করেন। আর সংশোধনীটা তো উপদেষ্টা পরিষদকে গ্রহণ করতে হবে। আমাদের প্রস্তাবনায় যেটা আছে সেখানে আদালতকে সরাসরি ক্ষমতা দেওয়া হয়নি। তবে আদালত যদি মনে করেন, তাহলে তারা এ বিষয়ে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে কনসার্ন অথরিটির কাছে সুপারিশ করতে পারেন।’
লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের মাধ্যমে বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৪ এবং জাতির পিতার পরিবার-সদস্যগণের নিরাপত্তা (রহিতকরণ) অধ্যাদেশ, ২০২৪ সহ মোট ১০টি অধ্যাদেশ প্রণয়ণে ভেটিং সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ৯৫টি প্রজ্ঞাপন, ৩৩টি বৈদেশিক চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক ভেটিং করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: দুই-তিন দিনের মধ্যেই নির্বাচন কমিশন গঠনের সার্চ কমিটি ঘোষণা: আইন উপদেষ্টা
ট্রাইব্যুনালের সংস্কার কাজ দ্রুত শেষ করার তাগিদ আইন উপদেষ্টার