বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা মামলার ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে পৌঁছেছে। বৃহস্পতিবার (৬ জানুয়ারি) সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় ডেথ রেফারেন্সটি পৌঁছায় বলে জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল অফিসার মোহাম্মদ সাইফুর রহমান।
তিনি জানান, ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে এসে পৌঁছেছে। এখন বিধি অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এর আগে গত ৮ ডিসেম্বর দুপুরে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান ২০ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড এবং পাচঁ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়ে ওই রায় ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: আবরার হত্যা: ২০ আসামির মৃত্যুদণ্ড, ৫ জনের যাবজ্জীবন
আইন অনুযায়ী বিচারিক আদালতে কোন আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হলে তার মৃত্যু অনুমোদনের জন্য মামলাটির যাবতীয় নথি হাইকোর্টে পাঠানো হয়। এরপর এটি ডেথরেফারেন্স মামলা হিসেবে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় অন্তর্ভূক্ত হয়। পরে মামলার পেপারবুক (যাবতীয় নথি সম্বলিত ফাইল) প্রস্তুত হলে সিরিয়াল অনুসরণ করে ডেথরেফারেন্সের শুনানি হয়।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন-বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট মুহতাসিম ফুয়াদ, সাবেক গ্রন্থাগার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক ইশতিয়াক আহমেদ মুন্না, সাবেক আইন বিষয় উপসম্পাদক অমিত সাহা, সাবেক ছাত্রলীগ কর্মী আকাশ হোসেন ও মোয়াজ আবু হুয়ারেরা। একইসঙ্গে আদালত তাদের ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: রায়ে সন্তুষ্ট পরিবার, বাকি ৫ আসামিরও ফাঁসি চান আবরারের মা
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন-বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল ওরফে শান্ত, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক অনিক সরকার অপু, সাবেক সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির, সাবেক ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, সাবেক সমাজকল্যাণ বিষয়ক উপসম্পাদক ইফতি মোশাররফ সকাল, সাবেক উপদপ্তর সম্পাদক মুস্তবা রাফিদ এবং সদস্য মুজাহিদুর রহমান মুজাহিদ, মুনতাসির আল জেমি এবং ইহতাশামুল রাব্বী তানিম। এ ছাড়া, ছাত্রলীগ কর্মী খন্দকার তাবাক্কারুল ইসলাম তানভীর, এএসএম নাজমুস সাদাত, মাজেদুর রহমান ওরফে মাজেদ, হোসেন মোহাম্মদ তোহা, শামীম বিল্লাহ, মুহাম্মদ মোরশেদ-উজ-জামান মণ্ডল ওরফে জিসান, মোরশেদ অমর্ত্য ইসলাম, মিজানুর রহমান মিজান, শামসুল আরেফিন রাফাত ও এসএম মাহমুদ সেতুকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এদের মধ্যে জিসান, তানিম ও মুস্তবা রাফিদ পলাতক রয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর বুয়েটের আবাসিক হল থেকে ইলেকট্রিক অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরার ফাহাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। ২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পরিদর্শক ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ওয়াহিদুজ্জামান ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।
আরও পড়ুন: আবরার হত্যা মামলার রায়ে ন্যায়বিচার করা হয়েছে: আইনমন্ত্রী