প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আরও বেশি সংখ্যক নারী ও মেয়েদের বিজ্ঞানে উৎকর্ষতা লাভের সুযোগ দিতে সবার মানসিকতা পরিবর্তনে এবং শিক্ষার পরিবেশের প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলায় কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘এটি দুর্ভাগ্যজনক যে বিশ্বব্যাপী মাত্র ১২ শতাংশ নারী বিজ্ঞানী এবং ২০ শতাংশ নারী গবেষকদের প্রতিনিধিত্ব করেন। আমাদের অবশ্যই মানসিকতা এবং শিক্ষার পরিবেশের প্রতিবন্ধকতাগুলো মোকাবিলা করার জন্য কাজ করতে হবে, যাতে আরও বেশি নারী ও মেয়েরা বিজ্ঞানে পারদর্শী হতে পারে।’
শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত বিজ্ঞান সমাবেশে অষ্টম আন্তর্জাতিক নারী ও বালিকা দিবসে প্রদর্শিত এক ভিডিও বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আজ আমরা সেই নারী ও মেয়েদের নিয়ে গৌরব করি যারা বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল এবং গণিতের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।’
শেখ হাসিনা নারী ও মেয়েদের নিজেদের পরিবর্তনের এজেন্ট হিসেবে কাজ করার আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: এসডিজি বাস্তবায়নে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘ নারী ও মেয়েদের মনে রাখতে হবে যে তারা একা নন। তারা যে পদক্ষেপগুলো নেয়, তা তাদের সারা বিশ্বের বোনদের জন্য আরও দুয়ার (সুযোগ) উন্মুক্ত করতে সাহায্য করবে।’
তিনি বাংলাদেশের নারীদের উন্নয়নে তার সরকারের পদক্ষেপের ওপর আলোকপাত করেন।
বাংলাদেশের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রতিটি ক্ষেত্রে আমাদের নারী ও মেয়েদের নেতৃত্ব দেয়ার বিষয়টিকে আমি অগ্রাধিকার দিয়েছি। গবেষণা ও উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে আমাদের নারীরা খুব ভালো করছে।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশে কৃষি, শিল্প, স্বাস্থ্য, বিজ্ঞান, শিল্প ও তথ্যপ্রযুক্তি- সব ক্ষেত্রে গবেষণা করার জন্য মেয়েদের বৃত্তি দেয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, মেয়েদের উত্সাহিত করার জন্য সারা বাংলাদেশে ৫ হাজার ২৭৫টি ডিজিটাল সেন্টার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার ছেলে ও মেয়েদের জন্য সারা দেশে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছে। হাই-টেক পার্কগুলো একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক পরিবেশ তৈরি করেছে, যেখানে দেশের ছেলেদের পাশাপাশি আমাদের মেয়েরাও উন্নতি করতে পারে।
শেখ হাসিনা বিজ্ঞানের উদ্ভাবন ও সৃজনশীলতার সম্ভাবনাপূর্ণ নারী ও মেয়েদের দেখতে চান।
তিনি বলেন, ‘উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোতে তাদের জন্য থাকা সুযোগের অসামঞ্জস্যতাগুলো অবশ্যই আমাদের পূরণ করতে হবে। আমরা চাই আমাদের মেয়েরা স্মার্ট ও জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গঠনে অংশগ্রহণ করুক।’
প্রধানমন্ত্রী এই আন্তর্জাতিক নারী ও কন্যাশিশু দিবসে সকল নারী ও মেয়েদের অভিনন্দন জানিয়েছেন।
রয়্যাল একাডেমি অব সায়েন্স ইন্টারন্যাশনাল ট্রাস্ট (আরএএসআইটি) এবং সহ-সংগঠক সদস্য রাষ্ট্রগুলো জাতিসংঘের সদর দপ্তরে বিজ্ঞানে নারী ও মেয়েদের আন্তর্জাতিক দিবস উদযাপন করেছে।
এবারের সমাবেশের প্রতিপাদ্য হল- ‘ইনোভেট. ডিমোন্সস্ট্রেট. এলেভেট. এডভান্স. (আই.ডি.ই.এ.) টু ব্রিং কমিউনিটিস ফরওয়ার্ড ফর সাসটেইনেবল এন্ড ইকুইটেবল ডেভেলপমেন্ট।’
আরও পড়ুন: জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে বিশ্বব্যাংকের সহযোগিতা করা উচিৎ: প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশকে ঋণ দিতে আইএমএফ’র কোনো শর্ত নেই: সংসদে প্রধানমন্ত্রী