বুধবার বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেয়।
অ্যামিকাস কিউরি হওয়া ছয় আইনজীবী হলেন- সিনিয়র আইনজীবী এজে মোহাম্মদ আলী, কামাল উল আলম, আব্দুল মতিন খসরু, ফিদা এম কামাল, প্রবীর নিয়োগী ও ড. শাহদীন মালিক।
আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি বেলা ১১টায় তাদের মতামত শুনবে আদালত।
আল জাজিরার সম্প্রচার বন্ধে আদালতে করা রিট গ্রহণযোগ্য কি না, রিটকারী এভাবে রিট করতে পারেন কি না, আদালত সম্প্রচার বন্ধে কোন আদেশ দিতে পারে কি না- এসব বিষয়ে ছয় আইনজীবীকে আইনগত মতামত দিতে হবে।
আদালতে আজ রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এনামুল কবীর ইমন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী এবং বিটিআরসির পক্ষে ছিলেন খন্দকার রেজা ই রাকিব।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার এনামুল কবীর ইমন সোমবার বাদী হয়ে এ রিট করেন। আবেদনে চ্যানেলটিতে প্রচারিত ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টার্স মেন’ প্রতিবেদনটি ইউটিউব, টুইটার ও ফেসবুকসহ সব অনলাইন প্লাটফর্ম থেকে অপসারণ করার নির্দেশনা চাওয়া হয়।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে আল জাজিরার সম্প্রচার বন্ধ চেয়ে রিট
আরও পড়ুন: আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে পারি, আল জাজিরা বিষয়ে বললেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী
আরও পড়ুন: আল জাজিরার প্রতিবেদন অপপ্রচারের নোংরা বহিঃপ্রকাশ: কাদের
রিটে ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব, তথ্য ও প্রযুক্তি সচিব, বিটিআরসি চেয়ারম্যান ও পুলিশের মহাপরিদর্শকসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়েছে।
আল জাজিরায় গত ১ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ নিয়ে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন সম্প্রচারিত হয়, যা ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে। প্রতিবেদনে উচ্চপর্যায়ের ব্যক্তিদের দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়। সরকারিভাবে এ প্রতিবেদনের তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীও এ প্রতিবেদনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে। সরকারের বিভিন্ন মহল থেকে আল জাজিরা টিভি নেটওয়ার্কের ওই প্রতিবেদনটিকে অসত্য ও বানোয়াট বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) থেকে পাঠানো এক প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়, আল জাজিরায় প্রচারিত ও প্রকাশিত প্রতিবেদনটির তীব্র ভাষায় প্রতিবাদ জানাচ্ছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সদরদপ্তর।
এদিকে, আল জাজিরার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের ইঙ্গিত দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন।
সম্প্রতি তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা আইনি পদক্ষেপ নেয়ার চেষ্টা করব। আমরা এটি খতিয়ে দেখব। যেখানে ভুল তথ্য সরবরাহ করা হয়েছে সেখানে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে পারি। দেখা যাক।’
মন্ত্রী জানান, তারা শুনেছেন যে আল জাজিরা টাকা নিয়ে এই কাজটি করেছে।
আরও পড়ুন: মরিয়া হয়ে চালানো ‘নোংরা প্রাচারণা’ প্রত্যাখ্যান করল বাংলাদেশ
আরও পড়ুন: আল জাজিরার প্রামাণ্যচিত্রে অংশ নেয়া প্রবাসী বাংলাদেশি মালয়েশিয়ায় আটক
‘মিথ্যা সংবাদ প্রচারের জন্য তারা (আল জাজিরা) বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছে। এটা সত্যিই খুব দুঃখজনক,’ বলেন তিনি।
ড. মোমেন আরও বলেন, আল জাজিরার এ জাতীয় একটি প্রতিবেদন করা অনুশোচনীয় এবং এ জন্য তাদের ক্ষমা চাওয়া উচিত।
চ্যানেলটি মুসলিম দেশগুলোকে টার্গেট করে সংবাদ প্রচার করে- এমন অনেক উদাহরণ রয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘তারা বাংলাদেশের অর্জন পছন্দ করে না। এটি ঈর্ষা।’
বাংলাদেশ চ্যানেলটি বন্ধ করে দেবেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে ড. মোমেন জানান, এমন কোনো পরিকল্পনা তাদের নেই কারণ বিশ্ব উন্মুক্ত।
‘তবে আমরা আশা করি আল জাজিরা আরও দায়িত্বশীল হবে,’ বলেন তিনি।