প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পাঁচটি সিটি করপোরেশনের সাম্প্রতিক নির্বাচন প্রমাণ করেছে যে তার আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠিত হতে পারে।
তিনি বলেন, আমরা প্রমাণ করেছি যে আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে হয়েছে।
সোমবার প্রধানমন্ত্রী তার কার্যালয়ের শাপলা হলে গাজীপুর, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল ও সিলেট সিটি করপোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র ও কাউন্সিলরদের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, সিটি করপোরেশনের একের পর এক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে, যেখানে জনগণ তাদের পছন্দ অনুযায়ী নির্বিঘ্নে ভোট দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতার কারণে এটা ঘটেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আপনারা (নবনির্বাচিত মেয়র ও কাউন্সিলর) ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হয়ে এখানে এসেছেন। জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিয়েছে।’
আরও পড়ুন: নবনির্বাচিত পাঁচ সিটি মেয়রকে শপথ পাঠ করালেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
তিনি বলেন, ভোটারদের ওপর জবরদস্তি ও নিপীড়নের কারণে অতীতে দেশে ভোট ছিল বেদনাদায়ক।
নবনির্বাচিত মেয়রেরা হলেন- গাজীপুরের জায়েদা খাতুন, রাজশাহীর এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, খুলনার তালুকদার আব্দুল খালেক, বরিশালের আবুল খায়ের আবদুল্লাহ ও সিলেটের আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী।
প্রথমে গাজীপুর, খুলনা ও বরিশালের নতুন মেয়রদের শপথবাক্য পাঠ করান প্রধানমন্ত্রী। এরপর রাজশাহী ও সিলেটের নতুন মেয়রদের শপথ গ্রহণ করা হয়।
এছাড়া একই ভেন্যুতে পৃথক দুটি অনুষ্ঠানে শপথ নেন প্রায় ২৩০ জন নবনির্বাচিত সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এবং পাঁচটি সিটি করপোরেশনের সংরক্ষিত আসনের মহিলা কাউন্সিলররা। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম কাউন্সিলরদের শপথবাক্য পাঠ করান।
এছাড়া গাজীপুরে ৭৬ জন, খুলনায় ৪১ জন, রাজশাহীতে ৪০ জন, বরিশালে ৪০ জন এবং সিলেটে ৩৬ জন কাউন্সিলর রয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের রাজনৈতিক মত নির্বিশেষে জনগণের আস্থা ও আস্থার প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে জনগণের সেবা করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আপনারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে এখানে এসেছেন। জনগণ আপনার ওপর তাদের বিশ্বাস ও আস্থা রেখেছে। সুতরাং, আপনারা যে দলেরই হোন না কেন জনগণের সেবা করা আপনাদের কর্তব্য।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করাই আমার লক্ষ্য: টুঙ্গিপাড়ায় প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, তার সরকার শুধু শহরেই নয়, তৃণমূলেও উন্নয়ন নিশ্চিত করতে অগ্রাধিকার দিয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছে।
তার সরকারের লক্ষ্য হচ্ছে দেশে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিরাজ করবে এবং বাংলাদেশ উন্নত ও সমৃদ্ধ হবে।
প্রধানমন্ত্রী তাদের নিজ নিজ এলাকায় আন্তরিকভাবে কাজ করে বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়নে অবদান রাখতে বলেন।
তিনি বলেন, আমি চাই বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়নে আপনারা অবদান রাখুন।
তিনি তাদের নিজ নিজ এলাকায় বৃক্ষরোপণ ও খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য কাজ করতে বলেন।
তিনি সিলেটের নিরক্ষরতার হার এবং রাজশাহীতে বেকারত্বের হারের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট জনপ্রতিনিধিদের প্রতি আহ্বান জানান।
দেশের প্রতিটি কোণায় উন্নয়ন নিশ্চিত করতে জনপ্রতিনিধিদের কাজ করতে বলেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি রাজশাহী নগরীর ব্যাপক উন্নয়নে ভূমিকা রাখায় পুনঃনির্বাচিত মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের প্রশংসা করেন।
প্রধানমন্ত্রী জনপ্রতিনিধিদের স্বতঃস্ফূর্তভাবে নির্বাচিত করার কারণে জনগণের সেবা করতে এবং তাদের আকাঙ্খা পূরণের আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: আগামী জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে ভোট দিন: গোপালগঞ্জে প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘জনগণ আপনাদেরকে স্বতঃস্ফূর্ত ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে। সুতরাং, তাদের আকাঙ্খা পূরণ করুন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আপনারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে জনগণের সেবা করার সুযোগ পেয়েছেন। আমি চাই আপনারা জনসেবক হিসেবে আপনাদের নিজের এলাকায় কাজ করুন।’
শেখ হাসিনা বলেন, এখন বাংলাদেশকে কেউ অবহেলা করতে পারবে না এবং তার সরকারের ব্যাপক উন্নয়নের জন্য সারাবিশ্বে সবাই বাংলাদেশের প্রতি সম্মান দেখায়।
২০১৩-২০১৫ সালে বিএনপি-জামায়াতের অগ্নিসংযোগের দিকে ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের পাশাপাশি বাংলাদেশকে মানবসৃষ্ট দুর্যোগের মুখোমুখি হতে হবে।
তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশে আর এমন পরিস্থিতির (মানবসৃষ্ট দুর্যোগ) পুনরাবৃত্তি চাই না। আমরা চাই বাংলাদেশে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকুক এবং বাংলাদেশের মানুষ শান্তিতে বসবাস করুক। আমরা চাই সকল মানুষ উন্নত জীবন যাপন করুক।’
প্রধানমন্ত্রী তাদের নিজেদের এলাকার সার্বিক উন্নয়নের জন্য পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং উন্নয়নমূলক কাজ করে জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জনের আহ্বান জানান।