প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার (ইসি) হিসেবে নিয়োগের ক্ষেত্রে কে বা কোন দল নিয়োগপ্রাপ্তদের কার নাম প্রস্তাব করেছে-সেই তথ্য না দেয়া সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। মঙ্গলবার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের বেঞ্চ এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে এ রুল দেন। তথ্য কমিশন ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিবকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
কে কার নাম প্রস্তাব করেছে এই তথ্য প্রদানযোগ্য নয় উল্লেখ করে গত ৭ জুন তথ্য কমিশন সিদ্ধান্ত দেয়। এই সিদ্ধান্তের বৈধতা নিয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ চার বিশিষ্ট নাগরিক রিট করেন। আজ আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী শরীফ ভূঁইয়া। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী সাইফুল আলম চৌধুরী। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস।
আইনজীবীর তথ্যমতে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে যোগ্য ব্যক্তি সুপারিশে গঠিত অনুসন্ধান কমিটির কাছে প্রস্তাবিত ব্যক্তিদের পূর্ণ তথ্যসহ কে কার নাম প্রস্তাব করেছে-সেসব তথ্য চেয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের তথ্য অধিকার অধিশাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি আবেদন করেন বদিউল আলম মজুমদার। এ বিষয়ে কোনো তথ্য সরবরাহ করার এখতিয়ার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নেই জানিয়ে গত ১ মার্চ অপারগতা প্রকাশ করেন দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।
এর বিরুদ্ধে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের আপিল কর্তৃপক্ষের কাছে আপিল করেন সুজন সম্পাদক। নির্ধারিত সময়ে এর জবাব না পেয়ে তথ্য কমিশনে অভিযোগ করেন তিনি। তবে যে তথ্য চাওয়া হয়েছে, তা প্রদানযোগ্য নয় উল্লেখ করে গত ৭ জুন অভিযোগ খারিজ করে দেয় তথ্য কমিশন। এ অবস্থায় তথ্য কমিশনের ৭ জুনের সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২৩ জুন রিট করা হয়। রিট আবেদনে কে কার নাম প্রস্তাব করেছে, সেসব তথ্য না দেয়াসংক্রান্ত তথ্য কমিশনের ৭ জুনের সিদ্ধান্ত কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, সে বিষয়ে রুল চাওয়া হয়।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে যোগ্য ব্যক্তি বাছাইয়ের জন্য গত ৫ ফেব্রুয়ারি ছয় সদস্যের অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয়। যোগ্য ব্যক্তি বাছাইয়ে রাজনৈতিক দলসহ বিভিন্নভাবে ৩২২ জনের নামের প্রস্তাব আসে অনুসন্ধান কমিটির কাছে। নামগুলো ১৪ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। তবে আগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, কারা এসব ব্যক্তির নাম প্রস্তাব করেছে, তা প্রকাশ করা হয়নি।
গত ২২ ফেব্রুয়ারি প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও চার নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশের জন্য ১০ জনের নাম চূড়ান্ত করে অনুসন্ধান কমিটি। পরে কমিটি ১০ জনের নামের তালিকা রাষ্ট্রপতির কাছে জমা দেয়। এই তালিকা থেকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও চার নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি। পাঁচ বছরের জন্য তাদের নিয়োগ দেয়া হয়।
আরও পড়ুন:ওয়াসার এমডি’র বেতন-বোনাসের হিসাব চাইলেন হাইকোর্ট