ভবিষ্যৎ প্রজন্মের উন্নতির জন্য এশীয় দেশগুলোকে তাদের শক্তি একত্রিত করতে হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘এশীয় দেশগুলোর অভিন্ন উন্নয়ন চ্যালেঞ্জ রয়েছে এবং তাদের সেগুলোকে সম্মিলিতভাবে মোকাবিলা করা উচিত।’
শুক্রবার টোকিওতে এশিয়ার ভবিষ্যৎ বিষয়ক ২৭তম আন্তর্জাতিক নিক্কেই সম্মেলনের এক ভিডিও বিবৃতিতে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি শান্তিপূর্ণ, টেকসই ও সমৃদ্ধ এশিয়া নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সবসময় বন্ধু ও অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করবে।
আরও পড়ুন: ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ বাস্তবায়নে আন্তর্জাতিক সহায়তার ওপর জোর প্রধানমন্ত্রীর
পরবর্তী প্রজন্মের সুবিধার জন্য এশিয়ার দেশগুলো সর্বোত্তম সহযোগিতা করতে পারে এমন পাঁচটি প্রস্তাব করেছেন শেখ হাসিনা।
এগুলোর মধ্যে রয়েছে আইসিটির সর্বোত্তম ব্যবহার, ন্যায্যতা ও ন্যায়বিচার রক্ষা, টেকসই ও ভারসাম্যপূর্ণ উন্নয়ন এবং জয়-জয় আন্তর্জাতিক সম্পর্ক স্থাপনে সহযোগিতা।
শেখ হাসিনা রোহিঙ্গা সংকটের একটি সৌহার্দ্যপূর্ণ মীমাংসা খুঁজতে সবাইকে অবদান রাখার জন্য আবারও অনুরোধ করেছেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত ১১ লাখ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে। তাদের নিরাপত্তা ও মর্যাদার সঙ্গে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে হবে।’
বিশ্বে এশিয়ার ভূমিকার ওপর জোর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আলোচনার মাধ্যমে মতপার্থক্য নিরসনের মাধ্যমে বিরোধপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে শান্তি নিশ্চিত করা অপরিহার্য।’
জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রতিক কপ-২৬ সহ সকল আলোচনায় জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়ে সক্রিয় ও সোচ্চার হয়েছে।
আরও পড়ুন: ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় জলবায়ু সংকট থেকে মনোযোগ সরানো উচিত নয়: প্রধানমন্ত্রী
গত ১৩ বছরে বাংলাদেশের উন্নয়ন ও উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে জাতিসংঘের গ্র্যাজুয়েশন স্বীকৃতির কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার ২০২৬ সালের পর মসৃণ উত্তরণের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে।
এই প্রসঙ্গে তিনি সবাইকে, বিশেষ করে জাপান ও অন্যান্য ওইসিডি দেশগুলোকে ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়নের সর্বোচ্চ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়তা করার জন্য বাংলাদেশকে অন্তত ২০২৯ সাল পর্যন্ত অগ্রাধিকারমূলক সুবিধা প্রসারিত করার অনুরোধ জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশও চলমান কোভিড-১৯ মহামারিতে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
তিনি বলেন, ২০১৯ সালে মহামারির আগে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ।
তিনি বলেন, ‘২০২০ সালে আমরা তিন দশমিক ৫১ শতাংশের ইতিবাচক প্রবৃদ্ধির হার বজায় রাখতে পারি এবং ২০২১ সালে ছয় দশমিক ৯৪ শতাংশ হয়। আমরা চলতি অর্থবছরে সাত শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধির হার অর্জনের আশা করছি।’
জাপানের বৃহত্তম মিডিয়া গ্রুপ এবং দ্য নিক্কেই ও নিক্কেই এশিয়ার প্রকাশক নিক্কেই ইন্স. ২৬ ও ২৭ মে এসম্মেলনের আয়োজন করে।
দ্য ফিউচার অব এশিয়া হলো একটি আন্তর্জাতিক সমাবেশ যেখানে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও একাডেমিক নেতারা আঞ্চলিক সমস্যা ও বিশ্বে এশিয়ার ভূমিকা সম্পর্কে খোলাখুলি ও স্বাধীনভাবে তাদের মতামত প্রদান করেন।
আরও পড়ুন: উন্নয়ন প্রকল্পে পরিবেশের ওপর গুরুত্ব দেয়ার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর