কল ড্রপ, দুর্বল নেটওয়ার্কের কারণে কল বিচ্ছিন্ন হওয়ার মতো ভোগান্তি দূর করে স্বচ্ছ ভয়েস কল, দ্রুত গতির ইন্টারনেট এবং স্থিতিশীল মোবাইল নেটওয়ার্ক নিশ্চিত করতে দেশের মোবাইল ফোন অপারেটরগুলোকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে মোবাইল নেটওয়ার্ক, মোবাইল ইন্টারনেট সংক্রান্ত সমস্যা এবং গ্রাহকদের অভিযোগের দ্রুত সমাধানে বিটিআরসির ‘অভিযোগ সেলের’ কার্যক্রম পর্যবেক্ষণে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি করে দিয়েছেন আদালত।
কমিটিতে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব, বিটিআরসির চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক ও মোবাইল অপারেটরদের সংগঠন এ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিকম অপারেটর্স অব বাংলাদেশের (এমটব) একজন প্রতিনিধিকে কমিটিতে রাখতে বলা হয়েছে। আদেশ পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে এ কমিটিকে একটি প্রতিবেদন দিতে বলেছেন আদালত।
এ সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানির পর আজ রবিবার বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলিরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।
রুলে ইলেকট্রনিক মিডিয়া, জাতীয় দৈনিক ও টিভি চ্যানেলে দেয়া বিজ্ঞাপন অনুযায়ী, মুঠোফোনে কলের ক্ষেত্রে স্বচ্ছ ও পরিষ্কার শব্দ, গতিশীল নেটওয়ার্ক ও স্থিতিশীল ইন্টারনেট সেবা নিশ্চিতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। এছাড়াও গ্রাহকের কেনা মোবাইল ইন্টারনেট ডাটার পরিপূর্ণ ব্যবহার নিশ্চিতে ডেটা প্যাকের জন্য মুঠোফোন অপারেটরদের নির্ধারিত মেয়াদ বাতিল করতে এবং কেন ডেটা শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত গ্রাহকদের তা ব্যবহারের অনুমতি দিতে নির্দেশ দেয়া হবে না, সে বিষয়েও রুলে জানতে চাওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: বিএসএমএমইউ চিকিৎসকের মানহানিকর ভিডিও সরানোর নির্দেশ হাইকোর্টের
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিটিআরসি, বিটিআরসির চেয়ারম্যান এবং গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী ইয়াসির আজমান, রবির প্রধান নির্বাহী মাহতাব উদ্দিন আহমেদ, বাংলালিংকের প্রধান নির্বাহী এরিক আস টাইগার্স ডেন ও টেলিটকের প্রধান নির্বাহী মো. শাহাব উদ্দিনসহ সাত বিবাদিকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সাইফুর রহমান রাহি ওই রিটটি করেন। আইনজীবী সাইফুর রহমান রাহি চারটি মোবাইল অপারেটরেরই গ্রাহক। কল ড্রপ, দুর্বল নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেটের মেয়াদসহ নানা ভোগান্তি নিয়ে গত ৫ জানুয়ারি বিটিআরসিতে অভিযোগ করেন। কিন্তু বিটিআরসির অভিযোগ সেল থেকে এর প্রতিকার না পেয়ে গত ১০ জানুয়ারি তিনি আইনি নোটিস দেন। কিন্তু বিবাদীদের কাছ থেকে সাড়া না পেয়ে গত সপ্তাহে রুল ও নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন। ওই রিটের প্রাথমিক শুনানির পরই রুল ও নির্দেশনা দিলেন হাইকোর্ট।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এম এ মাসুম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার। আইনজীবী এম এ মাসুম পরে সাংবাদিকদের বলেন, বিটিআরসির অভিযোগ সেল বিভিন্ন সেল বিভিন্ন সময় অভিযোগ গ্রহণ করছে। কিন্তু সেই সেলটি যথাযথভাবে কাজ করছে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ আছে। যদি কাজ করত তাহলে এসব মোবাইল গ্রাহকদের ভোগান্তিগুলো থাকত না। সে জন্যেই আমরা রিট আবেদনে বিটিআরসির অভিযোগ সেলটির কর্মকাণ্ড তদারকি করতে একটি কমিটি চেয়েছিলাম। আদালত সে কমিটি করে দিয়েছেন।