কক্সবাজারের রামু থেকে মিজানুর রহমান (১৭) নামের অপহৃত আরেক ছাত্রকে উদ্ধার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) সদস্যরা। টেকনাফের নয়াপাড়ায় শালবন সংলগ্ন পাহাড় থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়।
উদ্ধার হওয়া মিজানুর রহমান পেচারদ্বীপের মঙ্গোলপাড়া এলাকার ফরিদুল আলমের ছেলে। এ নিয়ে অপহৃত সব শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করা হল।
শনিবার দুপুরে কক্সবাজার কার্যালয়ে র্যাব-১৫ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাব-১৫ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল খায়রুল ইসলাম।
তিনি জানান, শুক্রবার সন্ধ্যায় রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির সংলগ্ন পাহাড়ি এলাকায় র্যাব ও এপিবিএন সদস্যরা পৃথক অভিযান চালিয়ে অপহৃত তিন কিশোরকে উদ্ধার করে। এরপর শনিবার ভোরে অপহৃত চতুর্থ কিশোরকে উদ্ধারে সক্ষম হয় তারা।
তাছাড়া এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে মোট নয়জন রোহিঙ্গাকে আটক করা হয়েছে। সর্বশেষ মিজানুর রহমানকে উদ্ধারের সময় জাহাঙ্গীর (২৫) ও জাবেদকে (৩০) নামের দুই রোহিঙ্গাকে আটক করা হয।
আরও পড়ুন: ল্যাপটপ কেনার টাকা যোগাড় করতেই অপহরণের পর শিশু ইয়ামিনকে হত্যা!
র্যাব জানায়, অপহরণ চক্রের সদস্য ইব্রাহিম এবং জাহাঙ্গীর বাতিঘর রিসোর্টের কর্মচারী। দুই মাস আগে থেকে তারা ভুক্তভোগীদের সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে তোলে। ইব্রাহিমের বাড়ি টেকনাফ রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ব্লক-ডি, শেড-১০১১ হওয়ায় তার প্ররোচনায় গত ৭ ডিসেম্বর সেন্টমার্টিনে ভ্রমণের উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হয় অপহৃত শিক্ষার্থীরা। এ সময় এই শিক্ষার্থীরা অভিযুক্ত ইব্রাহিমের নির্দেশনা অনুযায়ী টেকনাফ থানার কাছাকাছি একটি হোটেলে রাত্রিযাপন করে।
তিনি আরও জানান, ৮ ডিসেম্বর ইব্রাহিম তার এক আত্মীয়ের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের পরিচয় করিয়ে দেয়ার কথা বলে লেদার সংলগ্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্প-২৪ এ নিয়ে যায়। সেখানে আগে থেকে অপেক্ষারত অপহরণকারীদের কাছে শিক্ষার্থীদের তুলে দেয়।
র্যাব জানায়, অপহরণ চক্রের সদস্যরা অপহৃত শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কাছে মোটা অঙ্কের মুক্তিপণ দাবি করার জন্য শিক্ষার্থীদের ওপর শারীরিকভাবে নির্যাতন করতে থাকে। দাবিকৃত মুক্তিপণ না পেলে অপহৃত শিক্ষার্থীদের মেরে ফেলা হবে বলেও হুমকি দেয় তারা।
আরও পড়ুন: নতুন জামার টাকার জন্য শিশুকে অপহরণের পর হত্যা, ২ স্কুলছাত্র গ্রেপ্তার
খায়রুল ইসলাম জানান, অপহৃত শিক্ষার্থীদের পরিবার বাদী হয়ে টেকনাফ থানায় একটি মামলা করেন এবং র্যাব-১৫ এর অন্তর্গত সিপিসি-২ হোয়াইক্যং ক্যাম্পে এ সংক্রান্ত একটি লিখিত অভিযোগ করেন। এই অভিযোগের ভিত্তিতে র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখার সহযোগিতায় অপহৃতদের উদ্ধারে জন্য বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্প এবং ক্যাম্প সংলগ্ন গহীন জঙ্গলে সাঁড়াশি অভিযান শুরু করে।
পরে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত টেকনাফের নয়া পাড়া এলাকার গহীন জঙ্গলে অভিযান চালিয়ে তিন অপহৃত শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করেন। এরপর শনিবার ভোরে চতুর্থ অপহৃতকে উদ্ধারে সক্ষম হয়।
আটক অপহরণকারীদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইন ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম চলছে বলে জানান র্যাবের এই কর্মকর্তা।