পারিবারিক বিরোধ ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেয়ার অভিযোগে কক্সবাজারে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক কমিশনের (ইউএনএইচসিআর) সাব-অফিসের সামনে পরিবার নিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন রোহিঙ্গা যুবক আবুল ওসমান। বুধবার (১৯ অক্টোবর) রাত ৯টার দিকে শহরের হোটেল-মোটেল সড়কে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, আবুল ওসমান উখিয়ার কুতুপালং নিবন্ধিত শরণার্থী শিবিরের ই ব্লকের ৪০ নম্বর শেডের বাসিন্দা এহসানুল হকের ছেলে। এসময় তার সাথে ছিলেন তার স্ত্রী, সন্তান ও মা ফাতেমা বেগম।
ভুক্তভোগী রোহিঙ্গা আবুল ওসমানের দাবি, তার সৎ মায়ের সাথে তার দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। কিন্তু সৎ মা সাবেরা খাতুনের এনজিও সংস্থা ও সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সাথে সখ্য থাকায় তিনি নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। তার অভিযোগ, সৎ মায়ের কথা শুনে ক্যাম্প সিআইসি ও পুলিশ তার পরিবারকে নিয়মিত হয়রানি করছে।
কথিত আরসার নেতাদের হুমকি পেতে হচ্ছে জানিয়ে এ যুবক জানান, নিবন্ধিত শরণার্থী হিসেবে নিরাপত্তা দেয়ার কথা থাকলেও তারা কোনো কিছুই করছে না। বারবার অভিযোগ করার পরও তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
এমনকি, নিবন্ধিত শরণার্থী হিসেবে যে সকল সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার কথা তাকে তার কিছুই দেয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন তিনি।
পড়ুন: রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মাঝিকে কুপিয়ে হত্যা
রোহিঙ্গা যুবক জানান, তিনি বারবার সৎ মায়ের বিরুদ্ধে বিচার চেয়েছেন। কিন্তু কেউ তার কথা শোনেনি। তাই বিচার চাইতে তিনি ইউএনএইচসিআরের সাব অফিসে এসেছেন। এর বিচার না করলে আত্মহত্যা করার হুমকি দেন তিনি। পরে রাস্তায় শুয়ে আত্মহত্যার চেষ্টাও করেন।
তার মা ফাতেমা বেগম বলেন, ওসমানদের বাবা আরেকটি বিয়ে করেছেন। ওই নারী তার সন্তানদের হত্যার উদ্দেশ্যে বারবার হামলা করে লোকজন নিয়ে। এ নিয়ে বার বার অভিযোগ দেয়ার পরও কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এখন পুরো পরিবার শঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন তারা।
উল্টো অভিযুক্তরা তার ছেলেকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে হেনস্তা করছে ভলে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ইউএনএইচসিআর অফিসে কয়েক দফা বলার পরও সমাধান হচ্ছে না বা করছে না তারা।
ইউএনএইচসিআর কার্যালয়ের নিরাপত্তা রক্ষীদের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মহসিন বলেন, সিনিয়র কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে আবুল ওসমান ও তার পরিবারের সদস্যরা বের হন।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত ইউএনএইচসিআর কক্সবাজার কার্যালয়ের লিয়াজোঁ অফিসার ইখতিয়ার উদ্দিন বায়েজীদ বলেন, নিবন্ধিত রোহিঙ্গা পরিবার বিভিন্ন অভিযোগ নিয়ে এসেছিলেন। তাদের সঙ্গে কথা এক পর্যায়ে তিনি অফিসের সামনের সড়কে বেরিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। পরে তাকে বুঝিয়ে শুনিয়ে রোহিঙ্গা শিবিরে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
পড়ুন: রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষ, নিহত ২